আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে ইজতেমার প্রথম পর্ব শেষ
Posted by: News Desk
January 14, 2018
এমএনএ রিপোর্ট : দুনিয়া ও আখেরাতে শান্তি কামনার পাশাপাশি মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও কল্যাণ কামনা করে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে তাবলীগ জামাতের তিন দিনব্যাপী বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শেষ হয়েছে।
আজ রবিবার সকাল পৌনে ১০টা ৪০ মিনিটে মোনাজাত শুরু হয়ে শেষ হয় সকাল সোয়া ১১টার দিকে। ৩৫ মিনিটের এ মোনাজাতের ১৪ মিনিট আরবিতে ২১ মিনিট বাংলায় পরিচালিত হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন কাকরাইল মসজিদের ইমাম মাওলানা হাফেজ মোহাম্মদ জুবায়ের। এবারই প্রথম বাংলায় মোনাজাত হয়েছে।
এবারই প্রথম প্রথা ভেঙে ইজতেমার আখেরি মোনাজাত করা হয় বাংলায়। আখেরি মোনাজাত শুরুর আগে রবিবার ফজরের পর থেকে বাংলায় হেদায়তি বয়ান করেন বাংলাদেশের মাওলানা আবদুল মতিন।
আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে সকাল থেকেই দলে দলে মানুষ টঙ্গীর তুরাগতীরে সমবেত হয়। আখেরি মোনাজাতকে কেন্দ্র করে ইজতেমা ময়দানসহ আশপাশের এলাকা পরিণত হয় জনসমুদ্রে।
৫৩তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের এই আখেরি মোনাজাতে দেশের ১৬ জেলার মুসল্লি ছাড়াও দেশ-বিদেশের অন্তত ৩০-৩৫ লাখ মানুষ অংশ নেয় বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
দ্বিতীয় দফায় তিন দিনব্যাপী বিশ্ব ইজতেমা শুরু হবে আগামী ১৯ জানুয়ারি শুক্রবার। আখেরি মোনাজাত হবে ২১ জানুয়ারি রবিবার।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বঙ্গভবনে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে, সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ ইজতেমা প্রাঙ্গণে সশরীরে এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তার গুলশানের বাসভবন থেকে আখেরি মোনাজাতে শরিক হন।
এদিকে আখেরি মোনাজাতকে কেন্দ্র করে আজ রবিবার ভোর থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চান্দনা চৌরাস্তা থেকে টঙ্গী ব্রিজ পর্যন্ত সড়কে যান চলাচল ব্যাহত হয়। তবে এরপরও ভোরের কুয়াশা ও তীব্র শীত উপেক্ষা করে মোনাজাতে শরিক হতে দলে দলে হাজারো মানুষ পায়ে হেঁটে ইজতেমা ময়দানে পৌঁছান।
ঢাকা ও আশপাশের এলাকা থেকে বহু নারীও এসেছেন মোনাজাতে অংশ নিতে। তবে ময়দানে ঢোকার অনুমতি না থাকায় তারা আশপাশের বিভিন্ন কারখানা ও আবাসিক ভবনের ছাদে অবস্থান নিয়ে এতে শরিক হন।
এদিকে ইজতেমার মাঠে পৌঁছাতে না পেরে হাজার হাজার মানুষকে কামারপাড়া সড়ক ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নিতে দেখা যায়। অনেকে বিমানবন্দর গোল চত্বর ও উত্তরা থেকেও আখেরি মোনাজাতে অংশ নিয়েছেন।
আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে টঙ্গী, গাজীপুর, উত্তরাসহ আশপাশের এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কারখানা, বিপণি বিতান ও অফিস ছিল বন্ধ। মোনাজাত শেষে ইজতেমাস্থল থেকে বাড়ি ফেরার সুবিধবার জন্য বিশেষ পরিবহনের ব্যবস্থা থাকলেও সবার একসঙ্গে বাড়ি ফেরার তাড়াহুড়ায় টঙ্গীর কামারপাড়া সড়ক, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক, টঙ্গী- কালীগঞ্জ সড়কের আহসান উল্লাহ মাস্টার উড়াল সেতু ও আশপাশের সড়ক-মহাসড়ক এবং সংযোগ সড়কগুলোতে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়।
এর আগে সকাল সোয়া ৮টা থেকে বাংলা ভাষায় হেদায়েতি বয়ান শুরু হয়। এবার কাকারাইলের মুরুব্বি মাওলানা আবদুল মতিন বাংলায় এ হেদায়েতি বয়ান করেন।
উল্লেখ্য, এর আগে তাবলিগ জামাতের গুরুত্বপূর্ণ এই কাজ ‘হেদায়েতি বয়ান ও আখেরি মোনাজাত’ বাংলাদেশের আলেমরা দুটি একত্রে কখনো করেননি বলে জানা যায়।
সাধারণত শেষ দিনের হেদায়েতি বয়ান ও আখেরি মোনাজাত উভয়টি দিল্লি মারকাজ থেকে আসা মুরুব্বিরা করে থাকতেন এবং তা উর্দু ভাষায় হয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে।
কিন্তু এবার ইজতেমায় ভারতের দিল্লিরি নিজামুদ্দিন মারকাজের মুরুব্বি মাওলানা সাদ কান্ধলভী ইজতেমায় অংশগ্রহণ করতে না পারায় এই প্রথম বাংলাদেশি আলেমদের মাধ্যমে শেষ দিনের গুরুত্বপূর্ণ কাজ দুটি আঞ্জাম দেয়া হচ্ছে।
শেষ দিয়ে মধ্য আখেরি ইজতেমার মোনাজাতের প্রথম পর্ব 2018-01-14