এমএনএ রিপোর্ট : আওয়ামী লীগে ফার্মের মুরগি ঢুকে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
আজ সোমবার দুপুরে মেহেরপুরে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগে ফার্মের মুরগি ঢুকেছে। ফার্মের মুরগির কারণে দেশী মুরগি কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। দেশি মুরগি দরকার, ফার্মের মুরগি নয়। ফার্মের মুরগি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। ফার্মের মুরগি বিদায় করে দেশী মুরগি ঢোকাতে হবে।’
তিনি বলেন, চারদিকে আতি নেতা, পাতি নেতায় ভরে গেছে। আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে অপকর্ম করা চলবে না। তাহলে কাউকে ক্ষমা করা হবে না। বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে, আওয়ামী লীগকে বাঁচাতে হবে। মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাকে বাঁচাতে হলে আওয়ামী লীগকে বাঁচাতে হবে। গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে হলে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে।
এসময় সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে না বলে ১৭ এপ্রিল পালন করে না। অবশ্য তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে কি না, সে সন্দেহ পোষণ করেন তিনি।
বিএনপিকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘বিএনপি এখন নালিশ পার্টিতে পরিণত হয়েছে। যাকে পায় তার কাছে সরকারের বিরুদ্ধে নালিশ করতে থাকে। তারা চোরাবালিতে আটকে গেছে।
বিএনপির মধ্যে ‘ভারত জুজু’ কাজ করছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সর্বোচ্চ সম্মান জানিয়েছেন, এতেই তাদের গাত্রদাহ শুরু হয়েছে। বিএনপির মরা গাঙে আর পানি আসবে না। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে তিস্তা চুক্তির বিষয়ে তাদের মাথাব্যথা নেই। মাথাব্যথা হচ্ছে শেখ হাসিনার প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতা নিয়ে। বিএনপি একটা ইস্যু মেকিং কারখানাতে পরিণত হয়েছে। একেক সময় একেকটি ইস্যু তৈরি করে। এখনও ভারত জুজুর ভয় দেখায়। এদেশের মানুষ বিএনপির কথা বিশ্বাস করে না। বিএনপির নেতাকর্মীরাও এসব কথা বিশ্বাস করে না বলে ঘরে বসে টিভি সিরিয়াল দেখে।’
প্রধানমন্ত্রীকে সম্বোধনের বিষয়ে খালেদা জিয়ার সমালোচনা করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘আমরা খালেদা জিয়াকে সম্মানের সঙ্গে সম্মোধন করি। কিন্তু খালেদা জিয়া ১৬ কোটি মানুষের নেত্রী শেখ হাসিনাকে ‘হাসিনা’ সম্বোধন করেন।’
সভাপতির বক্তব্যে মুজিবনগর দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, সংবিধানের আলোকেই ২০১৯ সালের সংসদ নির্বাচন শেখ হাসিনার অধীনেই অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের আশ্রয় দিয়ে এবং নিজামী-মুজাহিদদের রাজনৈতিক পুনবার্সন করে খুনি জিয়া প্রমাণ করেছেন তিনি পাকিস্তানের চর ছিলেন।
তিনি বলেন, মুজিবনগরে ‘মুজিবনগর কমপ্লেক্সের’ কাজের মান আন্তর্জাতিক পর্যায়ের হয়নি। এজন্য প্রধানমন্ত্রী ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন যা দিয়ে নতুন করে মুজিবনগর কমপ্লেক্সের কাজ আন্তর্জাতিক মানের করে করা হবে।
এসময় আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, পাকিস্তানি সেনা অফিসার আসলাম বেগের চিঠিতে প্রমাণ মেলে জিয়াউর রহমান পাকিস্তানের এজেন্ট ছিলেন। তিনি পাকিস্তানের চর হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ওবায়দুল কাদের, মোহাম্মদ নাসিমসহ আওয়ামী লীগের নেতারা মুজিবনগর স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর আম্রকাননে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। সেখানে গার্ড অব অনার গ্রহণ করেন তাঁরা। অভিবাদন শেষে আনসার-ভিডিপির একটি দল ‘হে তারুণ্য রুখে দাঁড়াও’ শিরোনামে গীতিমাল্য উপস্থাপন করে। বেলা পৌনে ১১টার দিকে শেখ হাসিনা মঞ্চে শুরু হয় আলোচনা সভা।
আলোচনায় সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মামুন স্বপন, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন, হাবিবুর রহমান সিরাজ প্রমুখ।