Don't Miss
Home / জাতীয় / রাজধানী / জলজট-যানজটে নাকাল রাজধানীবাসী

জলজট-যানজটে নাকাল রাজধানীবাসী

এমএনএ রিপোর্ট : সকাল থেকে মুষলধারে অবিরাম বৃষ্টিতে সৃষ্ট জলজট-যানজটে নাকাল রাজধানীবাসী। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী, অফিসগামী মানুষকে গন্তব্যে যেতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

সকাল সাড়ে ছয়টা থেকেই আকাশ কালো করে মেঘ জমে। এরপর শুরু হয় মুষলধারে বৃষ্টি। প্রায় টানা বর্ষণের রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে সৃষ্টি হয় যানজট।

আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে আজ সকাল সোয়া ৯টায় জানানো হয়, রাজধানী ঢাকায় আজ সকাল ৬টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টায় ৬৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

রাজধানীর কোনো কোনো সড়কে হাঁটু পানি জমে গেছে। রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি ২৭, সোবহানবাগ, বসুন্ধরা সিটির পেছনে গার্ডেন রোড, পান্থপথ মোড় পার হয়ে গ্রিনরোডের কিছু জায়গা, পশ্চিম তেজতুরী পাড়া, ফকিরাপুর, খিলগাঁও, মতিঝিল, পল্টনসহ বেশির ভাগ এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।

রাজধানীর গার্ডেন রোডে থাকেন হাসনা জামান। তিনি জানান, সকাল ৭টায় মেয়েকে স্কুলে দিয়ে অফিসে যান তিনি। হঠাৎ বৃষ্টিতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন। মেয়ে ও তিনি দুজনের ভিজে যান। বৃষ্টিতে কোনো যানবাহন পাননি। তিনি বলেন, ‘হাঁটু পানি ডিঙিয়ে বাচ্চাকে স্কুলে দিয়েছি।’

তেজতুরী বাজার এলাকার বাসিন্দা সাইফুল জামান। তিনি বলেন, বৃষ্টির জন্য দ্বিগুণ তিনগুণ ভাড়া বেশি চেয়েছে সব রিকশাওয়ালা। ২০ টাকার ভাড়া ৮০ টাকা দিয়ে কারওয়ান বাজারে তাঁর অফিসে পৌঁছান তিনি।

তবে এই বৃষ্টিতে যাদের নিজস্ব পরিবহন আছে যানবাহন খোঁজার ঝক্কি পেরোতে হয়নি তাদের। মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা অনিরুদ্ধ জানান, নিজের মোটরসাইকেল ছিল। তবে সংসদ ভবনের সামনে অর্ধেক রাস্তা জুড়ে পানি ছিল। মোটরসাইকেলের ইঞ্জিনের কাছ পর্যন্ত পানি উঠে গিয়েছিল।

বৃষ্টি আর জলাবদ্ধতার কারণে যানজটের ভোগান্তিতে পড়তে হয় নগরবাসীকে। আরমান হোসেন বলেন, তিনি মোহাম্মদপুর থেকে কারওয়ান বাজারে অফিসে পৌঁছান প্রায় দেড় ঘণ্টায়। সকাল সাড়ে সাতটায় বাসে উঠে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে পৌঁছাতে প্রায় এক ঘণ্টা সময় লেগে যায় তাঁর।

বৃষ্টিতে কারওয়ান বাজারের কাঁচাবাজার এলাকায় খেটে খাওয়া মানুষের চরম ভোগান্তি দেখা যায়। মাত্র আধঘণ্টা রাস্তায় প্রায় হাঁটু পানি উঠে যায়। সবজিসহ কাঁচা পণ্য নিয়ে বিপাকে পড়ে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। অনেক জায়গায় পানিতে ভাসতে দেখা যায় সবজি।

একটু বৃষ্টি হলেই রাজধানীর মতিঝিল, মগবাজার, রামপুরা, মোহাম্মদপুর, নবাবপুর, আজিমপুর, ধানমন্ডি, কারওয়ান বাজার, সোবহানবাগ, বসুন্ধরা সিটির পেছনে গার্ডেন রোড, পান্থপথ মোড় পার হয়ে গ্রিনরোডের কিছু জায়গা, পশ্চিম তেজতুরী পাড়া, ফকিরাপুর, পল্টন, খিলগাঁও, উত্তরা, মহাখালী, বনানী, ও গুলশানসহ নগরীর অধিকাংশ এলাকার বিভিন্ন সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। কেন হয় কেউই জানেন না। অথচ এসব এলাকার ড্রেনেজলাইনের উন্নয়নে গত দুই বছরে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ কুদরত উল্লাহ গণমাধ্যমকে বলেন, নতুনবাজার থেকে জোয়ার সাহারা সড়কসহ নগরীর বিভিন্ন এলাকায় উন্নয়নকাজের জন্যই সড়ক খোঁড়াখুঁড়ি করা হচ্ছে। এটি দ্রুততম সময়ের মধ্যে শেষ করতে আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি। এ অবস্থার মধ্যে নগরবাসী ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন এটি সত্য, কিন্তু এক্ষেত্রে আমাদের বাড়তি তেমন কিছু করার নেই।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আসাদুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, ঢাকা দক্ষিণের কিছু এলাকায় উন্নয়নকাজ চলছে। এ কারণে জলজট ও জলাবদ্ধতায় নগরবাসীর কিছুটা ভোগান্তি হচ্ছে সত্য। তবে আমরা ভোগান্তির মাত্রা কমিয়ে আনার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।

তিনি আরও বলেন, জলজট ও জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।

আবহাওয়া দপ্তর বলছে, মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। শুধু রাজধানীতে নয়, সারা দেশেই মৌসুমি বায়ু সক্রিয় রয়েছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে রংপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেটেও ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কার কথা বলা হয়েছে।

x

Check Also

এবার ঢাকা ছাড়লেন ১০৯ জন জাপানি নাগরিক

এমএনএ রিপোর্ট : করোনা ভাইরাসের কারণে বাংলাদেশ ও জাপানে আটকে পড়াদের জন্য বিশেষ দুটি ফ্লাইট ...