এমএনএ রিপোর্ট : বিশ্ব ব্যাঙ সংরক্ষণ দিবস উদযাপন উপলক্ষে সম্প্রতি ঢাবিতে আলোচনা সভা ও চিত্রপ্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।
ব্যাঙ উভচর প্রাণী। জলায় এবং ডাঙায় উভয়ক্ষেত্রেই অবাধ বিচরণ ।প্রজননের পুরো চক্রটা সম্পন্ন করতে এদের পানিতে থাকতে হয় আর পূর্ণাঙ্গ অবস্থায় এরা ডাঙ্গায় চলে আসে।
প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় এরা নির্দেশক হিসেবে কাজ করে। কিন্তু নানা কারণে পৃথিবীর প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ব্যাঙ আজ সংকটে। আর আমাদের দেশে এই অবস্থা খুবই নাজুক। সম্প্রতি আই ইউসিএন এর তথ্য মতে আমাদের দেশে ৪৯ প্রজাতির ব্যাঙ এর মধ্যে ১৫ প্রজাতির ব্যাঙ সংকটাপন্ন রয়েছে। ব্যাপকহারে আবাসস্থান ধ্বংস, পরিবেশ দূষণ ও কৃষিতে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার, এবং খাওয়ার জন্য অতিরিক্ত হারে প্রকৃতি থেকে ব্যাঙ সংগ্রহ এবং মেরে ফেলা প্রভৃতিকে ব্যাঙ বিলুপ্ত হওয়ার কারণ বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
তাই জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং গবেষণায় তরুণ শিক্ষার্থীদের আগ্রহী করতে গত ২৯ এপ্রিল (শনিবার) দ্বিতীয়বারের মত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ন্যাচার ক্লাবের আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) প্রাণিবিদ্যা বিভাগে ব্যাঙ সংরক্ষণ দিবস ২০১৭ উপলক্ষে আলোচনা সভা ও চিত্রপ্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানের বিভাগীয় চেয়ারম্যান ড. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্যপ্রাণী শাখা দেশে প্রথম বন্যপ্রাণী নিয়ে গবেষণা এবং সংরক্ষণ নিয়ে কাজ শুরু করে। সুতরাং বন্যপ্রাণী তথা ব্যাঙ সংরক্ষণে আমাদেরকেই মুখ্য ভূমিকা নিতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ব্যাপকহারে ব্যাঙের আবাসস্থল ধ্বংস করছি এবং জনমনে প্রকৃতিতে ব্যাঙ গুরুত্ব সম্পর্কে ধারণা নেই বললেই চলে। এধরণের জনসচেতনতামূলক অনুষ্ঠান ব্যাঙ সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী এবং তরুণ বন্যপ্রাণী (সাপ ও ব্যাঙ) গবেষক আব্দুর রাজ্জাক বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রজাতির ব্যাঙ এবং এদের বিস্তৃতি নিয়ে কথা বলেন। এছাড়াও তিনি ব্যাঙের শ্রেণিবিন্যাস বিদ্যার অসঙ্গতির নানা দিক তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে ব্যাঙ সংরক্ষণে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা হলো দেশব্যাপী ব্যাঙের বিস্তৃতি সম্পর্কে তথ্য অপ্রতুতলা এবং সঠিকভাবে ব্যাঙ সনাক্তকরণ। আমরা যদি না জানি আমাদের দেশে প্রকৃতপক্ষে কত প্রজাতি ব্যাঙ পাওয়া যায় এবং দেশে এদের বিস্তৃতি কোথায় তাহলে ব্যাঙ সংরক্ষণে উপযোগী পদক্ষেপ নেয়া সম্ভব নয়।’