Don't Miss
Home / সম্পাদকীয় / দেশজুড়ে জঙ্গি হামলা, কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি

দেশজুড়ে জঙ্গি হামলা, কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি

দেশজুড়ে জঙ্গি হামলার বিস্তার জনমনে আতঙ্কের কারণ হয়ে উঠেছে। আগের দুই দিনে চট্টগ্রামে পুলিশ সুপারের স্ত্রী এবং নাটোরে খ্রিস্টান মুদি দোকানিকে খুনের পর গতকাল মঙ্গলবার ঝিনাইদহে এক হিন্দু পুরোহিতকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। খুনের ধরন দেখে তিনটি হত্যাকাণ্ডকেই জঙ্গিদের কাজ বলে মনে করা হচ্ছে। গত কয়েক মাসে শিক্ষক, সাংস্কৃতিককর্মী, লেখক, প্রকাশক, ভিন্ন ধর্ম বা মতাবলম্বী অনেককেই একই কায়দায় হত্যা করা হয়েছে। এসব ঘটনায় প্রকৃত দোষীদের ধরা কিংবা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর দুর্বলতা বড় হয়ে দেখা দিচ্ছে।

সরকারের মন্ত্রী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাম্প্রতিক বক্তব্য থেকে জানা যায়, যারা আন্দোলনের নামে নাশকতা করেছে, বাসে আগুন দিয়ে মানুষ মেরেছে, রেললাইন উপড়ে ফেলেছে, রাস্তায় গাছ কেটেছে, বিভিন্ন স্থাপনা কিংবা পুলিশের ওপর হামলা করেছে তারাই এখন টার্গেট কিলিংয়ের মাধ্যমে দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টা করে যাচ্ছে। এসব কাজের জন্য সুনির্দিষ্টভাবে জামায়াত-শিবিরের নামও উল্লেখ করা হয়েছে। আমাদের প্রশ্ন হলো, সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর দায়িত্ব কী? যারা জননিরাপত্তায় হুমকির সৃষ্টি করছে, ব্যক্তিবিশেষকে হত্যা করছে, তাদের ধরা হচ্ছে না কেন? সুনির্দিষ্ট Jongiতথ্যপ্রমাণসহ বিচারের মুখোমুখি করা হচ্ছে না কেন? এ দায়িত্ব কি সরকার বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর নয়? তারা সে দায়িত্ব পালন করতে পারছে না কেন? তা না করে কেবল অন্যের কাঁধে দোষ চাপিয়ে নিজের দায়িত্ব এড়াতে চাইলে মানুষ কখনো তা ভালো চোখে দেখবে না।

প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, জঙ্গি হামলা বিস্তারের পরিপ্রেক্ষিতে সারা দেশে বিশেষ অভিযান পরিচালনার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সব ইউনিটকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমরাও চাই সর্ব শক্তি দিয়ে জঙ্গি ও সমাজবিরোধীদের মোকাবিলা করা হোক। কিন্তু অতীতে এ ধরনের বিশেষ অভিযানের যে চরিত্র আমরা দেখেছি, তা আমাদের মনে নতুন আশঙ্কারই জন্ম দেয়। বিশেষ অভিযানের নামে সারা দেশে নির্বিচারে গ্রেপ্তার-বাণিজ্য শুরু হয়ে যায়, যাতে নিরপরাধ সাধারণ মানুষেরই ভোগান্তি বাড়ে। অবশ্য গত সোমবার বাহিনীগুলোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বৈঠক থেকে এ ব্যাপারে হুঁশিয়ার করে বলা হয়েছে, নিরপরাধ কাউকে হয়রানি করা হলে কিংবা গ্রেপ্তার-বাণিজ্যের চেষ্টা করা হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা মনে করি, শুধু হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করলেই হবে না, মাঠপর্যায়ে কঠোর নজরদারিও রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে, এ ধরনের অভিযানের সাফল্য অনেকাংশেই নির্ভর করে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন ও সহযোগিতার ওপর। অভিযানে হয়রানি হলে সেই সমর্থন পাওয়া যাবে না। পাশাপাশি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারেও কঠোর অবস্থান নিতে হবে।

আমরা চাই, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো জনগণের সহযোগিতা নিয়ে দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করুক এবং দলনিরপেক্ষভাবে কাজ করে প্রকৃত দোষীদের শাস্তির আওতায় নিয়ে আসুক।

-সম্পাদক

x

Check Also

আগস্ট

শোকাবহ আগস্ট মাস ফিরে এলো আবারও

এমএনএ সম্পাদকীয়ঃ জাতির ইতিহাসের কলঙ্কিত এক অধ্যায়ের সূচনা হয়েছিল এ মাসে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ...