এমএনএ রিপোর্ট : সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশন-ইসির সংলাপে সব দলকে সঙ্গে নিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন, ‘না’ ভোট রাখা এবং মাঠ পর্যায়ে সেনাবাহিনী মোতায়েনের ব্যবস্থা রাখাসহ প্রার্থীদের নির্বাচনী ব্যয়ের উৎস খতিয়ে দেখার প্রস্তাব করা হয়েছে।
আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে নির্বাচনের রোডম্যাপ, আইন সংস্কার, সীমানা নির্ধারণসহ অন্যান্য বিষয়ে মতামত নিতে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপে অংশ নেয় ইসি। এসময় সুশীল সমাজের সদস্যরা এসব প্রস্তাবনা দেন। সংলাপের একপর্যায়ে সুশীল সমাজের প্রতিনিধি দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য ও আসিফ নজরুল সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা জানান।
বৈঠকে ধর্ম ব্যবহার করে যাতে নির্বাচনী প্রচারণা চালানো না হয় সেই বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ারও দাবি জানান সুশীল সমাজের সদস্যরা। পাশাপাশি তফসিল ঘোষণার আগেই সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিতে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড গঠনে ইসির কার্যকরী ভূমিকা রাখা উচিৎ বলে মত দিয়েছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।
এদিকে বিকাল ৪টায় ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে বৈঠকের বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানিয়েছে ইসি সূত্র।
তবে এ সংলাপে আমন্ত্রিত প্রতিনিধিদের মধ্যে প্রায় অর্ধেকই অনুপস্থিত ছিলেন। ২৫ জনের পরিচিতি পর্ব দিয়ে এ সভার শুরু হয়। পরে আরও অন্তত পাঁচজন সভায় যোগ দেন।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, নির্বাচনী দায়িত্বপালনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সেনাবাহিনীকে অন্তুর্ভুক্ত করা, নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো, নির্বাচন কমিশনের প্রতি মানুষের আস্থা পুনরুদ্ধার করা এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এসব বিষয়ে বেশির ভাগ প্রতিনিধি ঐকমত্যে পৌঁছেছেন। তিনি আরও বলেন, ইসিকে জনমানুষের আস্থা অর্জন করতে হবে। ইসি দৃঢ় এবং স্বাধীন ভূমিকায় আছে এটা দৃশ্যমান হতে হবে। এটি সবচেয়ে বড় কাজ।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, কিছু বিষয়ে আইনের দুর্বলতা আছে। সেগুলো সংস্কার করে ঘাটতিগুলো পূরণ করতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, সেনাবাহিনীকে যদি ফিলিং স্টেশন, রাস্তা নির্মাণের কাজে ব্যবহার করা যায় তাহলে কেন নির্বাচনে দায়িত্বপালনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না। এমন পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে যাতে সবাই নির্বাচনে আসতে পারে। প্রার্থী, পোলিং এজেন্টদের ভয় দূর করতে হবে।
‘না’ ভোট প্রসঙ্গে আসিফ নজরুল বলেন, না ভোট যেন রাখা হয়। পৃথিবীর অনেক দেশে না ভোট আছে। তিনি আরও বলেন, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচনের কোনো সুযোগ যেন না থাকে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তাসনীম আরিফা সিদ্দিকী বলেন, নির্বাচন কমিশনের কাজই জনগণের মতকে তুলে ধরা। সেটা করতে গিয়ে বাধা আসবেই। ইসি যদি জনগণের অধিকার রক্ষায় কাজ করে তাহলে জনগণ তাঁদের পছন্দ করবে। নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করার কথা বলেন তিনি।
ইসির সূত্র বলেছে, ৫৯ জনকে সংলাপে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ইউএনবির খবরে জানা যায়, সংলাপে ৩০ জন প্রতিনিধি অংশ নিয়েছেন।
সুশীল সমাজের প্রতিনিধি হিসেবে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব, আইনজীবীসহ বিভিন্ন মহলে যাদের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে তাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়।
এদিকে অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের ছবি তোলার অনুমতি দেয়া হলেও মত বিনিময় সভায় কাউকে থাকতে দেয়া হয়নি। যদিও বিগত দুই কমিশনের আমলে এ ধরনের সংলাপে সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।