Don't Miss
Home / সম্পাদকীয় / আহলান সাহলান মাহে রমজান

আহলান সাহলান মাহে রমজান

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সর্বশেষ খবর অনুযায়ী গতকাল সারাদেশে কোথাও পবিত্র মাহে রমজানের চাঁদ দেখা যায়নি। তাই আগামীকাল রবিবার হতে বাংলাদেশে শুরু হচ্ছে মাহে রমজানের সিয়াম বা রোজা। আজ রাতে তারাবিহ নামাজ আদায় ও সাহরি গ্রহণের মাধ্যমে এই দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মাহে রমজান উদযাপন শুরু করবেন। গতকাল হতে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের মুসলমানগণ রোজা রাখতে শুরু করেছেন। সাধারণত সৌদির একদিন পর আমাদের দেশে আগমন ঘটে রমজানের। অন্যান্য মুসলিম উৎসবের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য একই কথা। আমরা পুণ্যময় রমজানের এই আগমনকে আহলান সাহলান বা স্বাগত জানাই।

রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের সওগাত নিয়ে আসে মাহে রমজান। আরবি ‘রামাদান’ শব্দটি ‘রামদ’ শব্দমূল হইতে উদ্ভূত। এর আভিধানিক অর্থ দহন, প্রজ্বলন, জ্বালানো তথা পুড়িয়ে ভষ্ম করে ফেলে। রমজানের রোজা মানুষের কুপ্রবৃত্তি ও নফসের দাসত্ব জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ছারখার করে দেয় বলে এ মাসের নাম হয়েছে রমজান। রমজান মাসে সিয়াম সাধনা তথা রোজা রাখার মাধ্যমে রোজাদারগণ আত্মসংযম ও কৃচ্ছ্রতার নীতি অবলম্বন করে থাকেন। দৈহিক ও আত্মিক উভয় দিক দিয়েই তিনি পরিশুদ্ধ হন। এভাবে তিনি আল্লাহর একনিষ্ঠ ও অনুগত বান্দায় পরিণত হন। সূরা বাক্বারার ১৮৩ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তোমাদের জন্য রমজানের রোজা ফরজ করা হয়েছে। যেভাবে ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর। যাতে তোমরা তাকওয়া বা খোদাভীতি অর্জন করতে পার।’ এই তাকওয়া অর্জনের মাধ্যমে রোজাদারদের বাকি এগার মাসের জীবন-যাপন নিয়মানুবর্তিতার ধারায় সুশৃঙ্খল হয়ে ওঠে। এজন্য রমজানকে মুমিনের সাং-বাৎসরিক প্রশিক্ষণের মাস হিসাবে বিবেচনা করা হয়।

মুসলমানদের জীবনে রমজান মাস আল্লাহ তায়ালার দয়া, ক্ষমা ও পাপমুক্তির এক সুবর্ণ সুযোগ সৃষ্টি করে। এজন্য রমজান নিয়ে মুমিনের এত আয়োজন ও উন্মাদনা। এই পবিত্র মাসের শবে ক্বদরে নাজিল হয়েছে মহাগ্রন্থ আল-কুরআন। তাই এই মাসের মর্যাদা ও তাত্পর্য অপরিসীম। রমজান মাসে বেহেশতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়, দোযখের দরজাসমূহ বন্ধ করা হয় এবং শয়তানকে বন্দি করা হয় জিঞ্জিরে (তিরমিযি, নাসাঈ ও ইবনে মাজা)। এই মাসের নেক আমল অন্য মাসের তুলনায় বহুগুণ বৃদ্ধি করা হয়। হাদীসে সাওম বা রোজাকে ‘জুন্নাতুন’ বা ঢাল স্বরূপ বলা হয়েছে। কেননা রোজা পরনিন্দা, ঝগড়া-বিবাদ, দুর্নীতি-অনিয়ম, অশ্লীলতা, ব্যভিচার, বেহায়াপনা, অন্যায়-অত্যাচার, ওজনে কম দেওয়া, খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল দেওয়া, চল্লিশ দিনের বেশি ব্যবসায়িক মাল মজুদদারি করা ইত্যাদি যাবতীয় পাপকাজ হতে বিরত রাখে। যে ব্যক্তি রোজা রেখেও এসব পাপাচার করবে, রাসূলুল্লাহ (স) আল্লাহর নিকট তার রোজার কোনো দরকার নেই বলে উল্লেখ করেছেন। এতে তার উপবাসই করা হবে মাত্র। রোজার মৌলিক লক্ষ্য অর্জিত হবে না।

রোজা শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য রাখা হয়। এতে লোক দেখানোর কোনো অবকাশ নেই। তাই এর প্রতিদান আল্লাহ স্বয়ং দিবেন এবং মাফ করে দিবেন রোজাদারের অতীতের সকল গুনাহ-খাতা। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সঠিকভাবে রমজানের রোজা পালন করবার তওফিক দিন। আমীন।

-সম্পাদক

x

Check Also

আগস্ট

শোকাবহ আগস্ট মাস ফিরে এলো আবারও

এমএনএ সম্পাদকীয়ঃ জাতির ইতিহাসের কলঙ্কিত এক অধ্যায়ের সূচনা হয়েছিল এ মাসে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ...