Don't Miss
Home / জাতীয় / রাজধানী / মোহাম্মদপুরের সমস্যা যানজট, জলাবদ্ধতা ও পানি সংকট

মোহাম্মদপুরের সমস্যা যানজট, জলাবদ্ধতা ও পানি সংকট

এমএনএ বিশেষ প্রতিনিধি : রাজধানীর মোহাম্মদপুর শান্তিপ্রিয় মানুষের স্বপ্লের আবাসস্থল হিসেবে সুপরিচিত। সময়ের আবর্তে মোহাম্মদপুরের সমস্যা যানজট, জলাবদ্ধতা ও পানি সংকটে বেহাল দশায় দাঁড়িয়েছে।

মোহাম্মপুর এলাকায় একদিকে রয়েছে উচ্চবিত্ত শ্রেণির বাস। অন্যদিকে রয়েছে মধ্যবিত্ত এবং নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণির বসবাস। এই এলাকার মানুষ খাবার পানি, যানজট ও জলাবদ্ধতাসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত। একাধিক সড়কে সেবা সংশ্লিষ্ট সংস্থার খোঁড়াখুঁড়ি চলায় যানজটে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এলাকাবাসী।

রাজধানীর উন্নয়নকৃত এলাকার মধ্যে অন্যতম একটি হলো মোহাম্মদপুর। এখানে আধুনিক নগরায়নে বেড়ে উঠছে সুউচ্চ আবাসিক-অনাবাসিক ভবন। বাড়ছে জনসংখ্যা। কিন্তু সে হারে বাড়েনি নাগরিক সুবিধাদি। বরং এদিক থেকে মোহাম্মদপুর এলাকা নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়ছে।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অঞ্চল-৫ কর্তৃপক্ষ জানায়, নতুন হাউজিং হয়েছে যেসব এলাকায় সেখানে সড়কে কিছু সমস্যা আছে। তবে সড়কের মালিকানা যদি করপোরেশনকে বুঝিয়ে দেয়া হয় তাহলে সমস্যা সমাধান করা যাবে।

২০০১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী মোহাম্মদপুর থানার জনসংখ্যা ছিল ৪ লাখের ওপরে। তবে এলাকাবাসীর ধারণা, বর্তমানে সংখ্যাটি প্রায় তিনগুণ। এলাকার আয়তন ১২ দশমিক ১৩ বর্গকিলোমিটার।

মোহাম্মদপুর থানার অন্তর্ভুক্ত উল্লেখযোগ্য এলাকা হলো- তাজমহল রোড, আজিজ মহল্লা, টিক্কাপাড়া, বিজলী মহল্লা, জহুরী মহল্লা, বছিলা, ওয়াছপুর, কাটাসুর, জাফরাবাদ, বাঁশবাড়ি, মোহাম্মদী হাউজিং সোসাইটি, মোহাম্মদী হাউজিং লিঃ, চাঁদ মিয়া হাউজিং, মধুবাজার, পশ্চিম ধানমণ্ডি, বিবিবাজার, রায়েরবাজার, সুলতানগঞ্জ, রাজমুশুরী, লালমাটিয়া, আসাদগেট, ইকবাল রোড, স্যার সৈয়দ আহম্মেদ রোড, আওরঙ্গজেব রোড, কলেজগেট রোড, ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল এলাকা, জেনেভা ক্যাম্প, হুমায়ুন রোড, বাবর রোড এবং খিলজি রোড।

মোহাম্মদপুর থানার বেশ কিছু এলাকার প্রধান সমস্যা জলাবদ্ধতা। স্যুয়ারেজ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় অল্প বৃষ্টি হলেই বিভিন্ন এলাকায় পানি জমে যায়। বছিলা, ওয়াছপুর ও কাটাসুরে এই সমস্যা প্রকট। এ ব্যাপারে সিটি করপোরেশনকে লিখিতভাবে জানানো হলেও তা কোনো কাজে আসেনি এমনটাই অভিযোগ এলাকাবাসীর।

স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ মজিবর হোসেন বলেন, এই এলাকার অনেক মানুষ একটা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মধ্যে দিনযাপন করছে। রায়েরবাজার এলাকায় রয়েছে কুমারদের বসবাস। ঢাকায় মাটির তৈরি বিভিন্ন তৈজসপত্রের সবচেয়ে বড় বাজার এখানে। জলাবদ্ধতার কারণে কুমারদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

শিয়া মসজিদ মোড়, শিয়া মসজিদ টু মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড রোড, কেন্দ্রীয় কলেজ, তাজমহল রোড প্রধান সড়ক, জাপান সিটি গার্ডেনের সামনে প্রতিদিন তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। বিকালে যানজটের কারণে ৫ মিনিটের পথ কখনো ১ ঘণ্টা লেগে যায়। এসব এলাকার বিভিন্ন অলিগলি ও সড়কের যত্রতত্র প্রাইভেট কারসহ বিভিন্ন যানবাহন পার্ক করে রাখায় এ যানজটের সৃষ্টি হয় বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। আসাদ এভিনিউ থেকে টাউন হল পর্যন্ত নামিদামি ৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে ব্যবহৃত যানবাহনের কারণে ক্লাস শুরু হওয়ার আগে এবং ছুটি হবার পর মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে আসাদগেট পর্যন্ত ভয়াবহ যানজট সৃষ্টি হয়। কখনো কখনো এই যানজট বিভিন্ন অলিতে গলিতে ছড়িয়ে পড়ে। এসব এলাকার যানজটে পড়লে ১০ মিনিটের পথ যেতে কখনো সখনো দুইঘন্টাও লেগে যায়।

এ ব্যাপারে নিজের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে একটি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের গাড়ি চালক মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, এই এলাকার ভয়াবহ যানজট শুধু দিনেই লাগে না। মাঝে মধ্যে সন্ধ্যা থেকে মধ্য রাত অবধি এ রাস্তাটি যানজটে স্থবির হয়ে পড়ে। কোনকিছুই যেনো আর নড়ে না। সেসময় এখানে গাড়ি নিয়ে ঢুকলে নির্ঘাত এক-দেড় ঘন্টা অপচয় হয়ে যায়।

চার মিয়া হাউজিং-এর বাসিন্দা ব্যাংকার আতিক হায়াত বলেন, ট্রাফিক আইন মেনে চললে যানজট হয়তো কিছুটা কমে আসবে। তাছাড়া স্কুল-কলেজ শুরু হওয়ার আগে এবং ছুটি হবার সময় যদি এসব প্রতিষ্ঠানের আশপাশের রাস্তাগুলো প্রাইভেট গাড়ি পার্কিংমুক্ত এবং রিকসামুক্ত করা যায় তাহলে যানজটের ভয়াবহতা কমে যাবে। তাছাড়া অত্র এলাকার প্রায় সকল রাস্তাই সংস্কার করাটাও জরুরি। বিশেষ করে শিয়া মসজিদ টু মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড যাওয়ার সড়কটি দীর্ঘ কয়েক বছর থেকেই বেহাল দশা। চলাচল অনুপযোগী হলেও এই সড়কটি মোহাম্মদপুর এলাকার অত্যন্ত ব্যস্ততম একটি সড়কে পরিনত হয়েছে।

যানজট ছাড়াও মোহাম্মদপুরের বেশ কিছু জায়গায় চলছে খাবার পানির তীব্র সংকট। প্রায় ৮ মাস ধরে এই সমস্যা চলছে। লাইনে কিছু পানি পাওয়া গেলেও সঙ্গে আসছে বালু আর পাথর। ওয়াসা বলছে, পানির পাইপে লিকেজ থাকার পাশাপাশি পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।

মোহাম্মদপুরের বাঁশবাড়ী, কাটাশুর ও শেরেবাংলা রোডে গত দুই-তিন মাস ধরে চলছে পানির সংকট। মধ্যরাতে আধা ঘণ্টার জন্য পানি আসলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা খুবই সামান্য। খাওয়ার জন্য কেনা পানিই ভরসা এলাকাবাসীর। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও ওয়াসাকে বারবার বলা হলেও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।

x

Check Also

বারবার রূপ বদলাচ্ছে নতুন করোনা ভাইরাস

এমএনএ ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক : মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া নতুন করোনা ভাইরাস এখন পর্যন্ত ১০ বার ...