মুম্বাইয়ে এমআরআই মেশিনের গ্রাসে যুবকের মৃত্যু
Posted by: News Desk
January 28, 2018
এমএনএ ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক : ভারতের মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে এমআরআই মেশিনের বলি হলেন এক যুবক। রাজেশ মারু নামের ৩২ বছর বয়সী এই যুবক অক্সিজেন সিলিন্ডার-হাতে একটি হাসপাতালের এমআরআই রুমে প্রবেশ করামাত্র মেশিনটি বিপুল শক্তিতে তাকে নিজের গ্রাসে টেনে নেয়। এর পরপরই প্রাণ হারান তিনি।
দুর্ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় মুম্বাইয়ের বিআইএল নায়ার চ্যারিটেবল হাসপাতালে। রাজেশ তার এক অসুস্থ আত্মীয়ের স্ক্যান করাবার জন্য সিলিন্ডারসহ এমআরআই কক্ষের ভেতর ঢোকেন। ঢোকামাত্র মেশিনটির বিপুল শক্তিধর চৌম্বকক্ষেত্র সক্রিয় হয়ে ওঠে আর নিমেষে তাকে ভেতরে টেনে নেয়।
নিহত রাজুর স্বজনদের অভিযোগ, হাসপাতালের একজন ওয়ার্ড বয়ই রাজুকে তার আত্মীয় রোগীকে নিয়ে সিলিন্ডারসহ এমআরআই কক্ষে ঢুকতে বলেছিল। সরল বিশ্বাসে রাজু সেটাই করেন।
অভিযুক্ত ওয়ার্ডবয়কে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আজ রবিবার সাময়িক বরখাস্ত করেছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের থেকে পাওয়া তথ্য ও সিসিটিভি ফুটেজের ভিত্তিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, চিকিৎসক সিদ্ধান্ত শাহ এবং ওয়ার্ড বয় ভিত্তাল চ্যবনের বিরুদ্ধে পুলিশ একটি মামলা দায়ের করেছে। এ ব্যাপারে পুলিশি তদন্ত শুরু হয়েছে।
বিজেপি সাংসদ লোধা রাজেশ মারুর মৃত্যুর জন্য দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানায়, পেশায় পোশাকের দোকানের বিক্রয়কর্মী রাজু এমআরআই কক্ষে অক্সিজেন সিলিন্ডারসহ প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে ধাতব সিলিন্ডারটির কারণে বিপুল শক্তিধর এমআরআই মেশিনের ম্যাগনেটিক ফিল্ড সচল হয়ে ওঠে। মেশিনটি রাজ ও তার হাতেধরা সিলিন্ডার মেশিনকে নিজের ভেতরে টেনে নিতে থাকে। এসময় মেশিনের ভেতর রাজুর হাত আটকে যায়। আত্মীয়স্বজন ও ওয়ার্ড বয় মিলে মেশিনের ভেতর থেকে তাকে অনেক কষ্টে টেনে বের করতে সক্ষম হন। কিন্তু ততক্ষণে তার পুরো শরীর ফুলে ঢোল। রাজুর শরীর থেকে অবিরাম রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। জরুরি ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়ার মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে তার মৃত্যু হয়।
নিউজ এজেন্সি এএনআইকে এই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা জানান রাজুর শ্যালক হরিষ সোলাঙ্কি।
সোলাঙ্কির ভাষ্য, হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে ভর্তি তার মায়ের পাশে সর্বক্ষণ ছিলেন রাজেশ। তারা এমআরআই রুমের বাইরে ডাক্তারের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। তখন আইসিইউতে কর্মরত একজন ওয়ার্ড বয় তাকে অক্সিজেন সিলিন্ডারটি ভেতরে নিয়ে যেতে বলে।
‘‘ যখন আমরা তাকে বললাম এমআরআই রুমের ভেতর কোনো ধাতব বস্ত নিয়ে যাওয়া নিষেধ, তখন সে আমাদের বলে, ‘সব চলতা হ্যায়। হামারা রোজ কা কাম হ্যায়!’’–বলছিলেন সোলাঙ্কি
মেশিনটি বন্ধ করা আছে বলেও ওয়ার্ড বয় তাদের জানিয়েছিল। তিনি সংশ্লিষ্ট ডাক্তার ও ওয়ার্ড বয়ের গাফিলতি ও অন্যায়ের বিচার ও রাজেশের মৃত্যুর উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন।
মৃত্যু যুবকের মুম্বাইয়ে এমআরআই মেশিনের গ্রাসে 2018-01-28