হুমায়ূন আহমেদের ৭০তম জন্মদিন আজ
Posted by: News Desk
November 13, 2018
এমএনএ রিপোর্ট : আজ দেশের নন্দিত কথাসাহিত্যিক ও নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের ৭০তম জন্মদিন। ১২ নভেম্বর দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটেই বাসায় কেক কেটে জন্মদিন উৎযাপন করেন তার পরিবারের সদস্যরা। জন্মদিনে নূহাশ পল্লীতেও থাকছে বিশেষ আয়োজন। আর প্রয়াত এই কিংবদন্তির জন্মদিন উপলক্ষে চ্যানেল আই টিভি চ্যানেল সপ্তমবারের মতো হুমায়ূন মেলার আয়োজন করেছে। রাজধানীর তেজগাঁওয়ে চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে দিনব্যাপী এই মেলা চলবে। শুধু হুমায়ূন মেলাই নয়, তার স্মরণে বর্ণাঢ্য নানা অনুষ্ঠানও প্রচার করছে চ্যানেল আই। এছাড়া দেশের অন্যান্য টিভি চ্যানেলেও প্রচারিত হবে হুমায়ূন আহমেদকে উৎসর্গ করে নানা অনুষ্ঠান।
হুমায়ূন আহমেদের অমর সৃষ্টি হিমুর মতো হলুদ পাঞ্জাবি পরে চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে হিমুপ্রেমীরা হলুদ বেলুন উড়িয়ে হুমায়ূন মেলার উদ্বোধন করেন সকাল ১১টা ৫ মিনিটে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন হুমায়ূন আহমেদের পরিবারের সদস্যরাসহ বিভিন্ন অঙ্গনের হুমায়ূন ভক্ত ও বিশিষ্টজনরা। মেলায় হুমায়ূন আহমেদের লেখা বই, তার নির্মিত চলচ্চিত্র ও নাটকের ভিডিও সিডিসহ বিভিন্ন ধরণের পণ্য ও সেবার পসরা দিয়ে সাজানো হয় স্টলগুলো।
জন্মদিন উপলক্ষে চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে স্থাপন করা হয়েছে বিশেষ উন্মুক্ত মঞ্চ। সেখানে হুমায়ূন আহমেদের লেখা গান পরিবেশন করছেন শিল্পীরা। তার স্মরণে স্মৃতিকথা শোনাচ্ছেন বিশিষ্টজনরা। নৃত্য পরিবেশন করবছেন চ্যানেল আই সেরা নাচিয়ের শিল্পীসহ অন্য শিল্পীরা। হুমায়ূন আহমেদের লেখা থেকে আবৃত্তি পরিবেশনাও থাকছে। হুমায়ূন আহমেদ স্মরণে চিত্রাংকন করছে বিভিন্ন বয়সের শিশুরা।
হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিনে ছোটপর্দার নানা আয়োজনের মধ্যে চ্যানেল আইয়ে থাকছে ‘গানে গানে সকাল শুরু’ অনুষ্ঠানের বিশেষ পর্ব। বিকেল ৩টা ০৫ মিনিটে প্রচারিত হবে হুমায়ূন আহমেদ পরিচালিত তার জীবনের শেষ চলচ্চিত্র ঘেটুপুত্র কমলা।
বিশেষ দিনটি উপলক্ষে দেশের অন্যান্য টিভি চ্যানেলেও রয়েছে দিনব্যাপী নানা আয়োজন। বাংলাভিশন টিভি চ্যানেলে থাকছে উল্লেখ করার মতো কিছু অনুষ্ঠান।
মাছরাঙা টিভিতে সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে প্রচারিত হবে শ্যামল মাওলা ও অর্ষা অভিনীত নাটক হুমায়ূন সমীপে। এটি রচনা ও পরিচালনা করেছেন সৌর্যদীপ্ত সূর্য।
হুমায়ূন আহমেদ (১৩ নভেম্বর ১৯৪৮ – ১৯ জুলাই, ২০১২) ছিলেন একাধারে ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, নাট্যকার, গীতিকার, চিত্রনাট্যকার ও চলচিত্র নির্মাতা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী সেরা লেখকদের মধ্যে অন্যতম হিসেবে বিবেচিত তিনি। নাটক ও চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবেও সফল তিনি। তার প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা তিন শতাধিক।
হুমায়ূন আহমেদ তাঁর দীর্ঘ চার দশকের সাহিত্যজীবনে উল্লেখযোগ্য প্রায় সব পুরস্কারেই ভূষিত হয়েছেন। বাংলা উপন্যাসে অসামান্য অবদানের জন্য তিনি ১৯৮১ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার অর্জন করেন। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অনন্য অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ১৯৯৪ সালে দেশের দ্বিতীয় বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত করে। বাংলাদেশ শিশু একাডেমি পুরস্কার, মাইকেল মধুসুদন পদক, জয়নুল আবেদীন স্বর্ণপদকসহ আরও অনেক সম্মাননা ও পুরস্কার রয়েছে তার ঝুলিতে। দেশের বাইরেও সম্মানিত হয়েছেন হুমায়ূন আহমেদ। জাপানের এনএইচকে টেলিভিশন তাঁকে নিয়ে ‘হু ইজ হু ইন এশিয়া’ শিরোনামে ১৫ মিনিটের একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ ও প্রচার করে।
১৯৯২ সালে শঙ্খনীল কারাগার চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ কাহিনীকার বিভাগে প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন হুমায়ূন আহমেদ। তার পরিচালিত মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক শ্যামল ছায়া ছবিটি অস্কারে গিয়েছিল। তার পরিচালিত প্রতিটি ছবিই দর্শকনন্দিত হয়েছে। এইসব দিনরাত্রি, কোথাও কেউ নেই, অয়োময়, নিমফুল, তারা তিনজনসহ বহু জনপ্রিয় নাটকেরও কারিগর তিনি।
আজ জন্মদিন ৭০তম হুমায়ূন আহমেদের 2018-11-13