Don't Miss
Home / দিবস / আন্তর্জাতিক দিবস / আন্তর্জাতিক অলিম্পিক দিবস আজ

আন্তর্জাতিক অলিম্পিক দিবস আজ

এমএনএ ফিচার ডেস্ক : আজ ২৩ জুন আন্তর্জাতিক অলিম্পিক দিবস। ১৮৯৪ সালের ২৩ জুন প্রথমবারের মতো শুরু হয় অলিম্পিক গেমস। ফ্রান্সের প্যারিসে অনুষ্ঠিত এই ক্রীড়া উৎসব সময়ের হাত ধরে বিশ্বের সবচেয়ে সমৃদ্ধ ক্রীড়া উৎসবে পরিণত হয়েছে। বিশেষ এই স্মৃতিকে ধারণ করতে ১৯৪৮ সালে ২৩ জুনকে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক দিবস হিসেবে নির্ধারণ করা হয়।

এই বিশেষ দিনটিতে প্রতিষ্ঠিত হয় আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি (আইওসি)। প্রাচীন অলিম্পিক গেমসকে একটি রেনেসাঁ হিসেবে ধরে প্রতিযোগিতামূলক খেলাধুলাকে এগিয়ে নিতে প্রতিবছর নানা কর্মকাণ্ড এবং সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে পালিত Olympic-Dayহয় দিবসটি, যা বিশ্ব অলিম্পিক দিবস হিসেবে খ্যাত। ১৯৮৭ সাল থেকে দিবসটিকে অলিম্পিক ডে রানও বলা হয়।

বাংলাদেশেও প্রতিবছর নানা কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে এই দিবসটি পালিত হয়।

প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিকমানের আধুনিক অলিম্পিক গেমস শুরু হয় ১৮৯৬ সালে। গ্রিসের এথেন্সে অনুষ্ঠিত হওয়া সেই ক্রীড়া উৎসব বিশ্বের সামনে মিলনমেলার এক নতুন দরজা খুলে দেয়। এর ভিত্তি নির্মাণ হয় আরো দুই বছর আগে। অর্থাৎ ১৮৯৪ সালের ২৩ জুন।

ফ্রান্সের প্যারিসে সেবছর অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক অ্যাথলেটিক কংগ্রেসে প্রতিষ্ঠিত হয় একটি বিশেষ ক্রীড়া কমিটি। এই কমিটির প্রাথমিক নাম ছিল ‘আন্তর্জাতিক অলিম্পিক গেমস কমিটি’। সরবোন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হওয়া এই সন্মেলনের উদ্যোক্তা ছিলেন ব্যারন পিয়েরে ডি কুবার্তিন।

কংগ্রেসে সিদ্ধান্ত হয়, হাজারো বছরের পুরনো ঐতিহ্য অলিম্পিক গেমসকে আবার পুনরুজ্জীবীত করতে হবে। বিশ্বজনীন এক ক্রীড়া উৎসবের মাধ্যমে মানবতার জন্য বিরূপ এরকম অসংখ্য সংকটকে দূরে সরিয়ে রাখা সম্ভব হবে। এই ধারাবাহিকতায় ১৮৯৬ সালের ঠিক সেখানেই অলিম্পিক গেমস অনুষ্ঠিত হয় যেখানে হাজার বছর আগে প্রাচীন রোমানরা এই বিশেষ ক্রীড়া উৎসব সচল রেখেছিল।

১৯৪৩ সালে স্কটহোমে বসে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির (আইওসি) ৪১তম অধিবেশন। এই অধিবেশনে চেকোস্লোভাকিয়ার আইওসি সদস্য ড. গ্রাস ‘বিশ্ব অলিম্পিক দিবস’ পালনের বিষয়ে একটি প্রস্তাব তোলেন। যার প্রাথমিক উদ্দেশ্য হবে অলিম্পিকের Olympic-Day-2ধারণাকে প্রচার করা। পরের বছর আইওসির ৪২তম অধিবেশনে এই প্রস্তাবটি গৃহীত হয়। পাশাপাশি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় প্রতিটি দেশের জাতীয় অলিম্পিক কমিটি (এনওসি) প্রতিবছর ১৭-২৪ জুনের মধ্যে এই দিবসটি পালন করবে।

১৯৪৮ সালের ২৩ জুন সুইজারল্যান্ডের সেন্ট মরিটসে অনুষ্ঠিত হয় ৪২তম অলিম্পিক সেশন। এদিন আইওসির তৎকালীন সভাপতি সিগফ্রিড এডস্ট্রোম বিশ্বের তরুণদের জন্য একটি বার্তা দেন। সেখানে একটি বিশেষ প্রস্তাব রাখা হয় যা একবাক্যে সবাই লুফে নেন। যদিও প্রস্তাবটি অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে বহু আগে থেকেই চর্চিত কিন্তু বিষয়টির আনুষ্ঠানিকতা তখন পর্যন্ত যাপন করা হয়ে ওঠেনি নানা কারণে। সেবছর আইওসি অর্থাৎ ইন্টারন্যাশনাল অলিম্পিক কমিটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিস্ময়কর শোনালেও, প্রতিষ্ঠার ৫৪ বছর পর আনুষ্ঠানিকভাবে এটি যাপন শুরু করা সম্ভব হয়। সেবার অস্ট্রিয়া, উরুগুয়ে, কানাডা, গ্রেট বিট্রেন, গ্রিস, পর্তুগাল, বেলজিয়াম, ভেনিজুয়েলা ও সুইজারল্যান্ডে-এর জাতীয় অলিম্পিক কমিটি সেদিনই প্রথমবারের মতো এই বিশেষ দিবস আনুষ্ঠানিকভাবে পালনের পর্ব শুরু করে।

অলিম্পিক চার্টারের ১৯৭৮ সংস্করণে আইওসি সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্বব্যাপী জাতীয় অলিম্পিক কমিটি (এনওসি) কর্তৃক অলিম্পিক ডে পালনের। সেখানে বলা হয়, ‘এই মর্মে সুপারিশ করা যাচ্ছে যে প্রতিটি এনওসি অলিম্পিক আন্দোলনকে প্রচার করতে একটি অলিম্পিক দিবস পালন করবে (সম্ভব হলে প্রতিবছর)।

Olympic-Day-3২০ বছর ধরে বিশ্বব্যাপী অলিম্পিক ডে রান পালিত হচ্ছে। যার শুরুটা হয়েছে ১৯৮৭ সালে। এটা মূলত চালু করা হয়েছিল বিশ্বের সমস্ত জাতীয় অলিম্পিক কমিটিকে অলিম্পিক দিবস পালনে উৎসাহিত করতে। ১৯৮৭ সালে ৪৫টি এনওসি অলিম্পিক ডে রান পালন করেছিল। এর পর থেকে ক্রমেই বেড়েছে এই সংখ্যাটা। সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০১৪ সালে ১৮১টি দেশে অলিম্পিক ডে রান পালিত হয়েছে।

১৯৭৮ থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত আইওসি আন্তর্জাতিক অলিম্পিক দিবস পালনের ব্যাপারে নানা রকম বিষয় অন্তর্ভূক্ত করে। এর ভেতরে সবচেয়ে বেশি চর্চিত ইভেন্টটির নাম ‘অলিম্পিক ডে রান’। বিশেষ এই শোভাযাত্রা এখন সারাবিশ্বে পালন করা হয়। এবছর বাংলাদেশে দুদিনব্যাপী আন্তর্জাতিক অলিম্পিক দিবস পালন করা হচ্ছে। ২২ জুন দেশের গুরুত্বপূর্ণ জেলাগুলিতে জাকজমকপূর্ণভাবে অলিম্পিক ডে রান অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এখন অলিম্পিক ডে রান কেবল একটি দৌড় কিংবা ক্রীড়া ইভেন্ট নয়, তার চেয়েও বেশি কিছু। ‘মুভ, লার্ন অ্যান্ড ডিসকভার’ এই তিনটি স্তম্ভের ওপর ভিত্তি করে জাতীয় অলিম্পিক কমিটি ক্রীড়া, সংস্কৃতি ও শিক্ষা কার্যক্রমকে প্রসারিত করার চেষ্টা করছে। যেখানে বয়স, লিঙ্গ, সামাজিক পটভূমি অথবা ক্রীড়া সামর্থ্যসহ সব ধরনের ভেদাভেদ ভুলে যাওয়া হয়। কিছু কিছু দেশ এটিকে তাদের শিক্ষা কার্যক্রমের আওতাভুক্ত করেছে। কিছু কিছু এনওসি এই দিবসে কনসার্ট ও নানা প্রদর্শনীর আয়োজন করে। সম্প্রতি এনওসিগুলো দেশের শীর্ষস্থানীয় অ্যাথলেটদের সঙ্গে শিশু ও তরুণদের সভার আয়োজন করে। যার মধ্য দিয়ে সকলে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক ডের অংশ হতে পারে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি ও জাতীয় অলিম্পিক কমিটি তাদের কাজের ক্ষেত্রে গতিশীলতা পেয়েছে। বেড়েছে তাদের প্রচার ও প্রসার।

x

Check Also

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

জামায়াত-শিবিরের জঙ্গিরা থাবা বসিয়েছে : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

এমএনএ রাজনীতি ডেস্কঃ কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সাম্প্রতিক তাণ্ডবকে জঙ্গিবাদী কাজ উল্লেখ করে আওয়ামী ...