এমএনএ ক্যাম্পাস রিপোর্ট : ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি, মারামারিসহ পৃথক পাঁচটি অভিযোগে ছাত্রলীগের ১১ নেতাসহ ১২ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
আজ বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু বকর সিদ্দিক এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এসব ঘটনায় প্রশাসনিক আদেশ জারি হয়েছে আজ। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় ওই শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গত ১০ জানুয়ারি সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চ, কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ ও বটতলায় মাওলানা ভাসানী হল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের মারামারির ঘটনায় ১০ ছাত্রলীগ কর্মীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
তাঁরা হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের জাহিদ হাসান শিহাব (দর্শন, ৪২ ব্যাচ), সাইদুল (অর্থনীতি, ৪০ ব্যাচ), মো. মিজানুর রহমান (প্রত্নতত্ত্ব, ৪১ ব্যাচ), ইসতিয়াক আহমেদ চৌধুরী (প্রাণিবিদ্যা, ৪২ ব্যাচ), দিবেন্দু বিশ্বাস দ্বীপ (গণিত, ৪২), মো. নাজমুল হুদা (গণিত, ৪২ ব্যাচ)। মাওলানা ভাসানী হলের জহুরুল হক (অর্থনীতি, ৪৫ ব্যাচ), এস এম ইনামুজ্জামান শুভ (অর্থনীতি, ৪৫ ব্যাচ) ও আশিকুর রহমান (অর্থনীতি, ৪৫ ব্যাচ)। আ ফ ম কামালউদ্দিন হলের মো. ইয়াছিন (ভূগোল ও পরিবেশ, ৪২ ব্যাচ)। এর মধ্যে ইয়াছিন কামালউদ্দীন হলের শিক্ষার্থী হলেও তিনি বঙ্গবন্ধু হলে অবস্থান করতেন।
এ ঘটনা অধিকতর তদন্তের জন্য বেগম সুফিয়া কামাল হলের প্রাধ্যক্ষ এস এম বদিয়ার রহমানকে সভাপতি করে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন পেশ করতে বলা হয়েছে।
এ ছাড়া গত ১৮ ডিসেম্বর সাংবাদিকতা ও মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগে ভর্তি জালিয়াতির চেষ্টার অভিযোগে আ ফ ম কামালউদ্দিন হল শাখা ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক এস এম শরীফ আহমেদ (আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, ৪২ ব্যাচ) ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ছাত্রলীগ কর্মী মো. নাজমুল হুদাকে (গণিত, ৪২ ব্যাচ) সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। সাময়িক বহিষ্কার থাকাকালে ওই দুজন হলে অবস্থান এবং ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন না।
মারামারি ও ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি উভয় ঘটনায় মো. নাজমুল হুদার (গণিত, ৪২ ব্যাচ) নাম রয়েছে।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক আবুল হোসেনকে সভাপতি করে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে পরীক্ষায় অসুদপায় অবলম্বনের দায়ে নৃবিজ্ঞান বিভাগের ৪০ ব্যাচের মো. জাহিদুল ইসলাম নামের এক শিক্ষার্থীকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। তার ছাত্রত্বও বাতিল করা হয়েছে।
এ ছাড়া বিভাগীয় পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে আরও তিনজনকে জরিমানা করা হয়েছে। তাঁরা হলেন ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান বিভাগের ৪১ ব্যাচের ছাত্র মো. সোয়েব আকতার, ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের ৪৪ ব্যাচের লামমীম আহমেদ এবং ফার্মেসি বিভাগের ৪৪ ব্যাচের নাজমুস সাকিব। প্রত্যেককেই ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।