এমএনএ আঞ্চলিক ডেস্কঃ কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে বন্যায় ১১১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বানভাসীদের আশ্রয় দিতে এর ৬৯টিতে খোলা হয়েছে অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র। প্লাবিত এলাকার অনেকেই গরু-ছাগলসহ সেখানে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের তথ্যানুযায়ী ইতোমধ্যে বামনডাঙ্গা, বেরুবাড়ী, রায়গঞ্জ, কালীগঞ্জ, কচাকাটা, কেদার, বল্লভেরখাস, নুনখাওয়া, নারায়ণপুর ইউনিয়ন প্রায় সম্পূর্ণ ও পৌরসভার বেশ কয়েকটি ওয়ার্ড প্লাবিত। পানি ঢুকে পড়েছে এসব এলাকার অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন ২৫ হাজার পরিবারের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ।
প্লাবিত এলাকায় বাড়ি ছেড়েছেন অনেকেই। পরিবার নিয়ে তারা আশ্রয় নিয়েছেন অপেক্ষাকৃত উচু জায়গা, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসায় সরকারি ভাবে চালু করা আশ্রয় কেন্দ্রে। সেখানে মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন তারা। ক্রমেই ফুরিয়ে আসছে তাদের শুকনো খাবারের মজুদ। বন্যা যত দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে কষ্টের ব্যাপ্তিও তাদের বাড়ছে।
তৃণভোজী গৃহপালিত প্রাণী নিয়েও সমস্যায় পড়েছেন তারা। শুকনো খর ভিজে নষ্ট হওয়ায় পশু খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। সোমবার বৃষ্টি না হলেও বন্যা পরিস্থিতির কোন উন্নতি হয়নি।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোফাখখারুল ইসলাম জানান, বন্যার্তদের আশ্রয় দিতে বন্যা আক্রান্ত এলাকায় ইতোমধ্যে বিভিন্ন প্রাথমিক, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসায় সরকারি ভাবে ৬৯টি অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এছাড়াও আমরা সার্বক্ষণিক খবর নিচ্ছি। বানভাসীদের সহায়তায় গত দুই দিন রায়গঞ্জ ও বেরুবাড়ীতে ৯ মে. টন জিআর চাল বিতরণ করা হয়েছে। আরও ৪৫ মে. টন জিআর চাল ও দেড় লক্ষ টাকা জিআর বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এর থেকে সোমবার পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা ও কালীগঞ্জে সাড়ে পাঁচশ জন বানভাসীকে জনপ্রতি ১০ কেজি করে চাল, এক লিটার তেল, এক কেজি লবণ দিয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা জামান ও নির্বাহী কর্মকর্তা নুর আহমেদ মাছুম।
উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা জামান জানান, বানভাসীদের কষ্ট চরমে। তাদের জন্য পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা প্রয়োজন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে পড়ায় বন্যা কবলিত নয় ইউনিয়ন ও পৌরসভার বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে ৮৩টি প্রাথমিক, ২০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, চারটি কলেজ ও চারটি মাদ্রাসায় পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এর ৬৯টি এখন অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম ও ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোবাশ্বের আলম জানান, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত বন্যা কবলিত এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় পাঠদান বন্ধ থাকবে।