Don't Miss
Home / হোম স্লাইডার / রেমালের তাণ্ডবের বিরুদ্ধে সাহসী লড়াই করলো সুন্দরবন
সুন্দরবন

রেমালের তাণ্ডবের বিরুদ্ধে সাহসী লড়াই করলো সুন্দরবন

এমএনএ ফিচার ডেস্কঃ বরাবরই সুন্দরবন মাতৃসুলভ আচরণ করে আসছে। এবারও ঘূর্ণিঝড় রেমাল বাংলাদেশের লোকালয়ে আঘাত হানার আগেই তার প্রবল শক্তি হ্রাস করে ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা কমিয়ে দিয়েছে সুন্দরবন। সুন্দরবন কতবার যে ঘূর্ণিঝড়, ঝড়, প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করেছে, তার কোনো পরিসংখ্যান নেই। অত্যন্ত শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ থেকে রক্ষায় এবারও বুক পেতে দিল সুন্দরবন। দেশের উপকূলকে কালাপাহাড়ের মতো আগলে রেখেছে সব সময়। সুন্দরী-গেওয়াসহ নানা বৃক্ষের মজবুত বেষ্টনী আর অসংখ্য নদীনালা বছরের পর বছর ধরে প্রাণী ও সম্পদ রক্ষা করে আসছে। নিজে ক্ষত-বিক্ষত হলেও উপকূলের তেমন ক্ষতি হতে দেয়নি।

রোববার (২৬ মে) রাতে সাতক্ষীরা উপকূলের বুড়িগোয়ালীনি এলাকায় অবস্থান করা সাংবাদিক আসাদুজ্জামান আসাদ জানান, ঘূর্ণিঝড় রিমাল জেলাজুড়ে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে। অনেক গাছপালা উপড়ে গেছে। জোয়ারে মাছের ঘের ভেসে গেছে। তবে সুন্দরবন এবারও রক্ষা করেছে। বাতাসের গতিবেগ অনেক কমিয়ে দিয়েছে।

আশাশুনির প্রতাপনগর এলাকার সাইদুল ইসলাম জানান, বর্তমানে প্রতাপনগর অঞ্চলে ঝোড়ো হাওয়ার গতিবেগ কমেছে। ঘূর্ণিঝড় রিমাল দুর্বল হয়েছে কিছুটা।

সাতক্ষীরার স্থানীয় দৈনিক কালের চিত্রের সাংবাদিক গাজী হাবিব বলেন, রিমালের কবল থেকে সাতক্ষীরার উপকূল এখন প্রায় বিপদমুক্ত বলা যায়। শুধু বেড়িবাঁধের দিকে খেয়াল রাখতে হবে যেন নদীর পানি ভেতরে প্রবেশ করতে না পারে।

তিনি আরও জানান, সাতক্ষীরা শহর এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় ঝোড়ো বাতাসের গতিবেগ মাঝে মাঝে এতো বেশি যে, অফিস থেকে বাইক চালিয়ে বাসা পর্যন্ত আসা খুবই কষ্টকর ছিল। মাঝে মাঝে মনে হয়েছে, এই বুঝি বাইকসহ উল্টে গেলাম। যদিও বাইক ১০ কিলোমিটারের নিচে ছিল। বাসায় আসার পথে দেখলাম, অধিকাংশ দোকানের সাইনবোর্ড ছিঁড়ে পড়ে গেছে। কোনোটা ঝুলে আছে।

শ্যামনগরের সুলতান শাহজাহান বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমাল সাতক্ষীরা উপকূলে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে। অনেক গাছগাছালি উপড়ে চলাচলের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। এখনো গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির পাশাপাশি ঝোড়ো হাওয়া বয়ে চলছে। নদ-নদীগুলো এখনও উত্তাল। জোয়ারের পানি এখনও কমেনি।

তিনি আরও বলেন, বৃষ্টিতে বাঁধের মাটি নরম হয়ে গেছে। ভাটিতে পানি কমার কথা থাকলেও পানি কমছে না। এতে অনেক এলাকায় বাঁধে ফাটল দেখা দিতে পারে। ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সেটা সকাল ছাড়া জানা যাবে না।

২০০৯ সালে ১২০ কিলোমিটার গতির ঘূর্ণিঝড় আইলা ও ২০০৭ সালে ২৬০ কিলোমিটার গতির ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় সিডরের তাণ্ডবে বুক পেতে দিয়েছিল এই সুন্দরবন।

সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী জানান, ঘূর্ণিঝড়টি ইতোমধ্যে জেলা অতিক্রম করেছে। ঘূর্ণিঝড়টি যখন মাঝ রাতে আঘাত হানে তখন বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ৭২ কিলোমিটার। জেলায় এখন পর্যন্ত ৬৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

সোমবার সকাল সাড়ে ৭টায় ঘূর্ণিঝড় রেমাল সংক্রান্ত আবহাওয়ার ১৮ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, তীব্র ঘূর্ণিঝড় রেমাল উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে উপকূল অতিক্রম করে বর্তমানে খুলনার কয়রার কাছে অবস্থান করছে। এটি আরও উত্তর দিকে এগিয়ে বৃষ্টিপাতের মাধ্যমে ২-৩ ঘণ্টার মধ্যে দুর্বল হয়ে পড়বে।

x

Check Also

ইজতেমার

আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে ইজতেমার প্রথম পর্বের প্রথম ধাপের সমাপ্তি

এমএনএ জাতীয় ডেস্কঃ গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগতীরে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে বিশ্ব ইজতেমার ‘প্রথম পর্বের প্রথম ...