এমএনএ খেলাধুলা ডেস্কঃ সহজ জয়কে কঠিন করে শেষ পর্যন্ত বিজয়েই বিশ্বকাপ শুরু করেছে বাংলাদেশ। ক্ষণে ক্ষণে বদলালো প্রেক্ষাপট। কখনো জয় ছিল বাংলাদেশের হাতের মুঠোয়। কখনো জয়ের পাল্লা হেলে পড়ে শ্রীলঙ্কার দিকে। তবে মোস্তাফিজুর রহমান-রিশাদ হোসনরা জয়ের যে বীজ বুনেছিলেন, সেটা মরে যেতে দেননি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। বুড়ো হাড়ের ভেলকিতে শ্বাসরুদ্ধকর জয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরু করেছে বাংলাদেশ দল।
শনিবার (৮ জুন) টেক্সাসের ডালাসে গ্র্যান্ড প্রেইরি স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কাকে ২ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। প্রথমে ব্যাটিংয়ে নামা লঙ্কানদের নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১২৪ রানে বেধে রাখেন টাইগার বোলাররা। এরপর লক্ষ্য তাড়ায় উত্তেজনা-উৎকণ্ঠার সব ছাড়িয়ে মাত্রা যায়। লড়াই কঠিন করে তুলে বাংলাদেশ জয়ের বন্দরে নোঙর করে ৬ বল হাতে রেখেই।
‘ডি’ গ্রুপের ম্যাচে রান তাড়ায় ১৮ কোটির বাংলাদেশকে দুঃস্বপ্ন উপহার দিয়েছিলেন দুই ওপেনার- সৌম্য সরকার এবং তানজিদ হাসান। প্রথম ওভারেই নেই সৌম্য! ইনিংসের তৃতীয় বলে ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার শিকার হন অভিজ্ঞ এই ওপেনার। রানের খাতাই খুলতে পারেননি তিনি। পরের ওভারে তরুণ তানজিদকে শিকার বানান নুয়ান থুসারা। তিনি সাজঘরে ফেরেন ব্যক্তিগত ৩ রানে।
মহাবিপদে পড়া বাংলাদেশের চাপ আরও বাড়ান নাজমুল হোসেন শান্ত। পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে থুসারার দ্বিতীয় শিকার হন টাইগার অধিনায়ক। ১৩ করেন মাত্র ৭ রান। তখন ৫.২ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ২৮ রান। এ যেন দুর্দান্ত বোলিংয়ের পর দুস্বপ্নের ব্যাটিং চলছিল বাংলাদেশ শিবিরে। তবে মেঘ কেটে যায় দ্রুতই। কাটান লিটন দাস এবং তাওহিদ হৃদয়।
যে উইকেটে রান পেতেই কষ্ট হচ্ছিল ক্রিকেটারদের, সেখানে হৃদয় ছিলেন অবিশ্বাস্য। লিটনের সঙ্গে মহাগুরুত্বপূর্ণ ৬৩ রানের জুটি গড়ে তুলেন তিনি। দুজনের ৩৮ বলের প্রতিরোধে হৃদয়ের অবদান ছিল ৪০ (২০ বলে)! তার হৃদয় জুড়ানো সব শটে প্রাণ ফিরে টাইগার শিবিরে। হৃদয়ের ২০০ স্ট্রাইক রেটের ইনিংসে ছিল ১ চার এবং ৪ ছক্কা।
বাংলাদেশকে জয়ের স্বপ্ন দেখানো দুই ব্যাটারকে আউট করেন লঙ্কান অধিনায়ক ভানিন্দু হাসারঙ্গা। তার স্পিনে দলীয় ৯১ রানে এলবির ফাঁদে পড়েন হৃদয়। শুরুতে হাসারঙ্গার আবেদনে সাড়া দেননি মাঠ আম্পায়ার। পরে রিভিউ নিয়ে সফল হন তিনি। ইনিংসের ১৫তম ওভারে হাসারঙ্গার দ্বিতীয় শিকার হন লিটন। এ যাত্রায় রিভিউ নিয়ে সফল হননি অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। ৩৮ বলে তার ৩৬ রানের ইনিংসে ছিল ২ চার এবং ১ ছক্কা।
তখন জয় থেকে ২৬ রান দূরে ছিল বাংলাদেশ। হাতে ছিল ৩৫ বল। দুই পাণ্ডব- সাকিব আল হাসান এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ব্যাটে দারুণভাবেই এগুচ্ছিল দল। এই জুটির পথচলা থামিয়ে দেন মাথিশা পথিরানা। তার শর্ট বলে দুর্দান্ত এক ক্যাচ নিয়ে সাকিবকে (৮) থামান মহেশ থিকসানা। পরের ওভারে রিশাদ হোসেনকে (১) বোল্ড করেন থুসারা।
সহ-অধিনায়ক তাসকিন আহমেদ উইকেটে নেমে আউট হন প্রথমে বলেই! চোখের পলকে বাংলাদেশের সংগ্রহ হয়ে যায় ৮ উইকেটে ১১৩ রান। ১৪ বলে ১২ রানের সমীকরণ নিয়ে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গী হন তানজিম হাসান সাকিব। তবে দায়িত্ব কাঁধে নেন মাহমুদউল্লাহ। ১৩ বলে ১৬ রানের অপরাজিত ইনিংসে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করেন তিনি। উইকেটের অপরপ্রান্তে তানজিম অপরাজিত ছিলেন ১ রানে।