এমএনএ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : ফাঁস হয়ে গেছে গেইম-স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম টুইচের বিপুল পরিমাণ ডেটা। ফাঁস হওয়া ডেটার মধ্যে প্রতিষ্ঠানের গোপনীয় তথ্য এবং স্ট্রিমারদের আয়ের হিসাব আছে বলে নিশ্চিত করেছে টুইচ কর্তৃপক্ষ।টুইচের একশ’ গিগাবাইট ডেটা অনলাইনে ফাঁস হয়েছে বুধবার। ফাঁস হওয়া নথি অনুযায়ী, দুই বছরে অ্যামাজনের মালিকানাধীন প্ল্যাটফর্মটি থেকে কয়েক মিলিয়ন ডলার কামিয়েছেন স্ট্রিমাররা।ডেটা ফাঁস হওয়ার খবর নিশ্চিত করে টুইচ জানিয়েছে, “কোন কোন তথ্য ফাঁস হয়েছে সেটি নির্ণয় করতে” জরুরী ভিত্তিতে কাজ করছে তারা।
প্রতিষ্ঠানটি টুইটের মাধ্যমে জানিয়েছে, নতুন তথ্য হাতে আসার সঙ্গে সঙ্গে এই বিষয়ে তারা জানাবে টুইচ ব্যবহারকারীদের।এই প্রসঙ্গে ফোর্টনাইট স্ট্রিমার বিবিজি ক্যলক বিবিসিকে বলেন, “আয়ের হিসাবে আমার তথ্য ১০০ ভাগ সঠিক”। ফাঁস হওয়া ডেটার মধ্যে স্ট্রিমারদের আয়ের সঠিক হিসাব আছে বলে বিবিসিকে জানিয়েছেন প্ল্যাটফর্মটির আরও দুই স্ট্রিমার।ডেটা ফাঁস করার পেছনে মূল হোতারা ভিডিও প্ল্যাটফর্মটির সোর্স কোড পাওয়ার দাবি করছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।এরই মধ্যে বিভিন্ন অনলাইন ফোরামে ছড়িয়েছে টুইচের অভ্যন্তরীণ নথিপত্র। বিবিসি বলছে, অগাস্ট ২০১৯ থেকে অক্টোবর ২০২১ পর্যন্ত স্ট্রিমারদের আয়ের হিসাব আছে এতে।
অনলাইনে ফোরামে পোস্ট করা কয়েকটি সংস্করণ অনুযায়ী, আয়ের হিসাবে টুইচ প্ল্যাটফর্মের শীর্ষ স্ট্রিমারদের মধ্যে আছে ডানজন অ্যান্ড ড্রাগনস চ্যানেল ক্রিটিকাল রোল, কানাডিয়ার এক্সকিউসি এবং আমেরিকান সামিট১জি।নিজেদের অভ্যন্তরীণ তথ্য ও কার্যপ্রণালীর বিস্তারিত গোপন রাখার জন্য টুইচ সুপরিচিত। নিজস্ব প্ল্যাটফর্মে স্ট্রিমারদের আয়ের হিসাবও গোপন রাখে প্রতিষ্ঠানটি। এসব বিবেচনায় ডেটা ফাঁস হওয়ার ঘটনা প্রতিষ্ঠানটির জন্য ”লজ্জাজনক” বলে মন্তব্য করেছে বিবিসি।
বলা হচ্ছে, স্ট্রিমারদের আয়ের হিসাব ছাড়াও প্ল্যাটফর্মটির সোর্স কোড এবং মুক্তির অপেক্ষায় থাকা নতুন পণ্যের কারিগরি তথ্য রয়েছে ফাঁস হওয়া ডেটার মধ্যে।ফোরামে পোস্ট হওয়া ফাইলগুলোর মধ্যে অভ্যন্তরীণ সার্ভারের বিস্তারিত তথ্য রয়েছে বলে বিবিসিকে জানিয়েছেন সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা। ওই ডেটায় কেবল টুইচের নিজস্ব কর্মীদের প্রবেশাধিকার থাকার কথা ছিল।সোর্স কোড এবং অভ্যন্তরীণ সার্ভারের ডেটা সঠিক হলে– সেটি সবচেয়ে বড় ডেটা লিকগুলোর একটি হবে বলে মন্তব্য করেছে বিবিসি। একটি প্রতিষ্ঠানের সবচেয়ে মূল্যবান ডেটাই বেহাত হয়ে গেছে একবারে।
ফোরামে যে ফাইলগুলো পোস্ট করা হচ্ছে তার মধ্যে টুইচ প্ল্যাটফর্মটির কর্মকাণ্ডের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সফটওয়্যারের নামে ফাইল রয়েছে। “কোর কনফিগারেশন প্যাকেজেস (core config packages)”, “ডেভটুলস (devtools)”, এবং “ইনফোসেক (infosec)” ফাইলগুলোর কথা বলেছে বিবিসি।
সম্প্রতি বিভিন্ন কারণে সংবাদের শিরোনাম হয়েছে টুইচ। বিদ্বেষপূর্ণ আচরণ ও সংগঠিত হয়রানির শিকার হয়েছেন সংখ্যালঘু স্ট্রিমাররা। এমন পরিস্থিতি মোকাবেলায় টুইচ কর্তৃপক্ষের কার্যকর পদক্ষেপের অভাব নিয়ে প্রতিবাদ জানাতে সেপ্টেম্বর মাসে একদিনের জন্য প্ল্যাটফর্মটি বয়কট করেছিলেন কন্টেন্ট নির্মাতারা।তবে, ডেটা ফাঁস হওয়া বিষয়ে টুইচ বা অ্যামাজন আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও কিছু বলেনি বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের ইনফর্মেশন কমিশনার্স অফিস।