এমএনএ ম্পোর্টস ডেস্ক : মিরপুর টেেস্টর দ্বিতীয় দিনে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার অষ্টম উইকেটের পতন ঘটেছে, চালকের আসনে রয়েছে বাংলাদেশ।
অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যানদের নিয়ে রীতিমতো ছেলেখেলা করছেন বাংলাদেশের বোলাররা। বিশেষ করে সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজ। এই দুজনের স্পিন ঘূর্ণিতে ব্যাকফুটে চলে গেছে অজিরা। অন্যদিকে মিরপুর টেস্টে লিড নেয়ার অপেক্ষায় রয়েছে বাংলাদেশ। মধ্যাহ্নবিরতির পর দ্রুত দুই উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশকে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ এনে দেন মিরাজ ও সাকিব।
দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ২৬০ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ৮ উইকেটে ১৪৪ রান। অ্যাস্টন অ্যাগার ২ ও প্যাট কামিন্স ০ রান নিয়ে ব্যাট করছেন।
বাংলাদেশের বোলারদের বিপক্ষে যা একটু লড়েছেন ম্যাট রেনশ ও পিটার হ্যান্ডসকম্ব। রেনশ ৪৫ এবং হ্যান্ডসকম্ব করেন ৩৩ রান। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল আউট হন ২৩ রান করে। ডেভিড ওয়ার্নার (৮) এবং উসমান খাজার (১) পর ব্যাট হাতে ব্যর্থ হয়েছেন অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথও (৮)। ওয়েড ফিরেছেন ৫ রান করে।
বাংলাদেশের হয়ে মেহেদী হাসান মিরাজ তিনটি এবং সাকিব নেন দুটি উইকেট। তাইজুল ইসলাম নেন একটি উইকেট।
টেস্টের প্রথম দিনটি যেখানে শেষ করেছিলেন, সোমবার দ্বিতীয় দিনটি যেন সেখান থেকেই শুরু করেন টাইগাররা। অফস্পিনার মিরাজের হাত ধরে দ্বিতীয় দিনের শুরুতেই সাফল্য পায় বাংলাদেশ। তার করা দিনের তৃতীয় ওভারেই স্মিথ সরাসরি বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরে যান। আগের দিন ৩ রানে অপরাজিত থাকা স্মিথ আউট হন ব্যক্তিগত ৮ রানে। অস্ট্রেলিয়ার দলীয় সংগ্রহ তখন ৪ উইকেটে ৩৩ রান।
স্মিথের বিদায়ের পর ব্যাট করতে নামা পিটার হ্যান্ডকম্বকে সঙ্গে নিয়ে বিপর্যয় সামাল দেন আগের দিনের অপরাজিত ব্যাটসম্যান ম্যাট রেনশ। পঞ্চম উইকেটে ৬৯ রান যোগ করে এ জুটি। ইনিংসের ৩৩তম ওভারে বোলিংয়ে এসে জুটি ভাঙেন তাইজুল। তার ঘূর্ণিতে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে সাজঘরে ফেরার আগে ৩৩ রানের ইনিংস খেলেন হ্যান্ডসকম্ব। অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ দাঁড়ায় ৫ উইকেটে ১০২ রান।
এরপর ব্যাট করতে নামেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। তাকে নিয়ে বিপর্যয় সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন দারুণ খেলতে থাকা রেনশ। তবে তা আর হয়ে ওঠেনি। হতে দেননি সাকিব। স্লিপে সৌম্য সরকারের ক্যাচ বানিয়ে রেনশকে সাজঘরে ফেরত পাঠান তিনি। অজি এই ওপেনার আউট হন ৪৫ রান করে। রেনশর বিদায়ে দলীয় ১১৭ রানে অস্ট্রেলিয়ার ষষ্ঠ উইকেটের পতন হয়।
লাঞ্চের বিরতির পর ব্যাটিংয়ে নেমেই ফের ধাক্কা খায় অস্ট্রেলিয়া। বিরতির পর প্রথম ওভারের শেষ বলে ওয়েডকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন মিরাজ। আর তাতে করে অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটিং লাইনের লেজ বেরিয়ে পড়ে।
অ্যাগারকে নিয়ে আক্রমণাত্মক খেলার কৌশল বেছে নেন ম্যাক্সওয়েল। তবে এর মূল্যও দিতে হয় তাকে। দলীয় ১৪৪ রানের মাথায় সাকিবের বলে ক্রিজ ছেড়ে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়েন ম্যাক্সওয়েল। ফলে বাংলাদেশের লিড নেয়ার স্বপ্ন আরো উজ্জ্বল হয়।
এর আগে বাংলাদেশের ২৬০ রানের মাঝারি মানের সংগ্রহের কৃতিত্ব সাকিব ও তামিম ইকবালের। ১০ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর চতুর্থ উইকেটে এই দুজন ১৫৫ রানের দুর্দান্ত জুটি গড়েন। আর তাতে করে লড়াই করার পুঁজি পায় টাইগাররা।
বাংলাদেশের হয়ে ৫০তম টেস্ট খেলতে নামা সাকিব ৮৪ রানের দায়িত্বশীল ইনিংস উপহার দেন। সমান ৫০তম টেস্ট খেলতে নামা তামিম করেন ৭১ রান। নাসির ২৩ এবং মুশফিক ও মিরাজ সমান ১৮ রানের ইনিংস খেলেন।
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে তিনটি করে উইকেট নেন প্যাট কামিন্স ও নাথান লায়ন। এছাড়া অ্যাস্টন অ্যাগার দুটি ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল নেন একটি উইকেট।