এখনো পোড়ানো হচ্ছে রোহিঙ্গাদের ঘরবাড়ি
Posted by: News Desk
October 7, 2017
এমএনএ রিপোর্ট : মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ২৫ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া রোহিঙ্গা নিধন এখনো অব্যাহত রয়েছে। সেই উদ্দেশ্যে এখনো পোড়ানো হচ্ছে রোহিঙ্গাদের ঘরবাড়ি। মংডোতে গত ৩৬ ঘণ্টায় রোহিঙ্গা মুসলমানদের ২৩ টি বাড়িতে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। সরকার কারফিউ জারি করে রাখার মধ্যেই এসব বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটল।
গতকাল ০৬ অক্টোবর শুক্রবার দুপুরে রোহিঙ্গাদের আটটি কুঁড়েঘরে অগ্নিসংযোগ করা হয়। আগের দিন বৃহস্পতিবার রাতেও আরও ১৫টি বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়ে ছিল বলে জানান মংডুতে কর্মরত বিবিসির বার্মা প্রতিনিধি।
মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ বলছে, গত বৃহস্পতিবার এবং গতকাল শুক্রবার অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটলেও তাতে কেউই হতাহত হয়নি। কারণ ওই ঘরবাড়িতে সে সময় কেউ ছিল না।
সরকারে জারি করা কারফিউর মধ্যেই এসব বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটল।
নির্যাতনের কারণে দেশটিতে বহু রোহিঙ্গা ঘরবাড়ি ছাড়া হয়েছে। অনেকের বাড়িঘর আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। গত কয়েক সপ্তাহে বাংলাদেশেই পালিয়ে এসেছে ৫ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা।
বাংলাদেশের কর্মকর্তারা বলছেন, মাঝখানে রোহিঙ্গাদের আসা কিছুটা কমে গেলেও সম্প্রতি তাদের আসা আবার বেড়ে গেছে। কক্সবাজারে দায়িত্বে থাকা এক কর্মকর্তারা জানান, বর্তমানে প্রতিদিন ২ থেকে ৩ হাজারের মতো রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আসছে।
গতকাল শুক্রবার দুপুরে মংডুর নর্থ মিওমা ওয়ার্ড এলাকার আটটি বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। বলা হচ্ছে, এই এলাকায় রোহিঙ্গা মুসলমান এবং বৌদ্ধরা একসঙ্গে বসবাস করেন।
মংডুর ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা বলছে, কারা আগুন লাগিয়েছে সে বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কিছু জানা যায় নি। তবে এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ও মংডুর তিন নম্বর ওয়ার্ডে রোহিঙ্গাদের ১৫টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এসব বাড়িঘরেও কেউ ছিল না এবং এই এলাকায় শুধু রোহিঙ্গা মুসলমানদেরই বসতি বলে জানান সে দেশে নিযুক্ত বিবিসির সংবাদদাতা।
২৫ আগস্ট সেনাবাহিনী ও পুলিশের বেশ কিছু তল্লাশি চৌকিতে হামলার অযুহাতে রোহিঙ্গা নিধন শুরু করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। জীবন বাঁচাতে গত এক মাসেই পাঁচ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসে শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে।
মাঝখানে কয়েক দিন রোহিঙ্গাদের ঢল কিছুটা কমলেও আবার শরণার্থী শিবিরের দিকে তাদের আসার সংখ্যা বাড়ছে। ধারণা করা হচ্ছে অগ্নিসংযোগের কারণে সেখানে থাকা অল্প কিছু রোহিঙ্গারাও আতঙ্কে পালিয়ে আসতে পারে।
যেসব এলাকায় নতুনভাবে অগ্নিসংযোগ করা হচ্ছে, সেই এলাকার কোনো কোনো স্থানে রোহিঙ্গা মুসলমান এবং বৌদ্ধদের একত্রে বসবাস। আবার কিছু গ্রামে কেবল রোহিঙ্গা মুসলমানরাই বসবাস করতো।
ফায়ার সার্ভিস বলছে, আগুন কারা লাগিয়েছে সে ব্যাপারে তারা এখনও কিছু জানতে পারেনি। তবে কীভাবে এই আগুন লেগেছে তারা তার কারণ খুঁজে দেখার চেষ্টা করছেন। আগুন লাগার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তিন ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিভিয়ে ফেলেন। তবে গত বৃহস্পতিবার রাতের ভারী বর্ষণে আগুন এমনিতেই নিভে গেছে বলে জানিয়েছেন বিবিসির সাংবাদিক।
মিয়ানমারে সেভেন ডে নিউজ নামের একটি সংবাদ সংস্থার ফেসবুকে গত বৃহস্পতিবারের অগ্নিকাণ্ডের কিছু ছবি প্রকাশ করা হয়েছে যাতে দেখা যাচ্ছে, সেখানে বাঁশ ও বেড়া দিয়ে তৈরি বেশ কয়েকটি বাড়িঘর আগুনে পুড়ে শেষ হয়ে গেছে।
হচ্ছে রোহিঙ্গাদের পোড়ানো ঘরবাড়ি এখনো 2017-10-07