Don't Miss
Home / হোম স্লাইডার / এখনো বিজ্ঞাপন দেখাচ্ছে ‘জি বাংলা’
জি বাংলা

এখনো বিজ্ঞাপন দেখাচ্ছে ‘জি বাংলা’

এমএনএ বিনোদন ডেস্ক : বাংলাদেশের দর্শকদের জন্য বিদেশি কোনো চ্যানেলের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রচার করা যাবে না। ২০০৬ সালের কেবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক পরিচালনা আইনের ১৯ (১৩) ধারায় এমনটাই বলা হয়েছে। কিন্তু দেশে তা মানা হচ্ছিল না। এ ব্যাপারে সরকার হার্ডলাইনে গেলে গত ১ অক্টোবর বাংলাদেশে জি বাংলা, স্টার জলসাসহ প্রায় ৬০টি বিদেশি চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ হয়ে যায়।

১৪ দিন বন্ধ থাকার পর শুক্রবার (১৫ অক্টোবর) থেকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় দেখা যাচ্ছে ‘জি বাংলা’। কেবল অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (কোয়াব) সভাপতি এস এম আনোয়ার পারভেজ দাবি করেন, ‘জি বাংলা’ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে ‘ক্লিন ফিড’ পেয়ে পরিবেশকরা পরীক্ষামূলকভাবে সম্প্রচার শুরু করেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শনিবার (১৬ অক্টোবর) ধানমণ্ডি, রামপুরা, বনশ্রী, মিরপুর, উত্তরাসহ বিভিন্ন এলাকায় বিজ্ঞাপন ছাড়া (ক্লিন ফিড) ‘জি বাংলা’ দেখা যাচ্ছে। বিজ্ঞাপন বিরতিতে ‘জি বাংলা’র পর্দায় একটি ঘোষণা দেখা গেছে। তাতে লেখা, ‘সম্মানিত গ্রাহক, বিজ্ঞাপন বিধিনিষেধের জন্য চ্যানেলটি সাময়িক বন্ধ রয়েছে। বিজ্ঞাপন বিরতি শেষে অতি শিগগিরই আমরা মূল অনুষ্ঠানে ফিরে আসছি। আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।’

অন্যদিকে ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জায়গায় ‘জি বাংলা’ চ্যানেলে বিজ্ঞাপন দেখা যাচ্ছে বলেও জানিয়েছেন অনেকে। মানিকগঞ্জ, ময়মনসিংহ, রংপুরে বিজ্ঞাপন দেখা যাচ্ছে। এছাড়া কিশোরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জের কয়েক জায়গায় বিজ্ঞাপন বিরতিতে অন্য অনুষ্ঠানের প্রোমো প্রচার করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। আর লক্ষ্মীপুরে ‘জি বাংলা’ দেখা যাচ্ছে বিকেল ৫টা থেকে রাত পর্যন্ত। বিজ্ঞাপন প্রচারের ছবি, ভিডিও সময় নিউজের কাছে সংরক্ষণ করা আছে।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে কোয়াব সভাপতি সময় নিউজকে বলেন, ‘এটা এখনো পরীক্ষামূলক চলছে। দুই একটা মিসটেক থাকবে। সারা দেশে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কেবল অপারেটর আছে। অনেকে অনেক কিছু জানে না। বিষয়টি জানতে দুই-চার-পাঁচদিন সময় লাগবে। যারা জানে না তারা টিউনিং করতে পারছে না। তাই আগের ফিডটাই প্রচার হচ্ছে।’

কোয়াব সভাপতি এস এম আনোয়ার পারভেজ মনে করেন, এটা টিউনিংয়ে সমস্যা। দুই একদিন গেলে এটা ঠিক হয়ে যাবে। যোগ করে তিনি আরও বলেন, ‘ফরেন ব্রডকাস্টার যা দিবে আমরা তাই দেখাব। আমাদের আর কী করার আছে। আমি শুরু থেকেই বলে আসছি। আমরা স্যাটেলাইট থেকে সরাসরি সিগন্যাল রিসিভ করি। সেটা ডাউনলিংক করে সরাসরি কাস্টমারের কাছে চলে যাচ্ছে। ব্রডকাস্টার এখানে কী দেখাবে সেটা তার ব্যাপার।’

দেশে ‘জি বাংলা’র পরিবেশক মিডিয়া কেয়ার লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা প্রমীত রেজা। শনিবার (১৫ অক্টোবর) সময় নিউজকে তিনি বলেন, ‘ব্রডকাস্টার এখনো ক্লিন ফিড করেনি, সে জন্য এখনো সম্পূর্ণভাবে ক্লিন ফিড হয়নি। ব্রডকাস্টাররা সরকারের নিয়ম অনুযায়ী সে লক্ষ্যে কাজ করছে।’
সারা দেশে ক্লিন ফিড হতে কতদিন সময় লাগবে? উত্তরে প্রমীত রেজা বলেন, ‘আমরা এখনো কাজ করছি ব্রডকাস্টারের সঙ্গে। এটা আমাদের ওপর নির্ভর করে না, ব্রডকাস্টারের ওপর নির্ভর করে। তারা যত দ্রুত করতে পারবে আমরা তত দ্রুত দিতে পারব।’

‘ক্লিন ফিড’ বিষয়ে কথা বলতে যোগাযোগ করা হয় জি বাংলার জনসংযোগ কর্মকর্তা শ্রাবন্তী রায়ের সঙ্গে। তিনি জানান, আন্তর্জাতিক ব্রডকাস্ট নিয়ন্ত্রণ করা হয় মুম্বাই থেকে। এ ব্যাপারে তার কাছে কোনো তথ্য নেই।

এদিকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (টিভি-২) রুজিনা সুলতানা সময় নিউজকে বলেন, ‘বিজ্ঞাপনসহ যারা দেখাচ্ছে তাদের যদি আমরা চিহ্নিত করতে পারি তাহলে আইনের আওতায় আনা হবে। বিজ্ঞাপনসহ দেখানোর কোনো সুযোগ নাই। সরকার আগেই সিদ্ধান্ত দিয়েছে ক্লিন ফিড দেখাতে হবে। জেলা প্রসাশকদের (ডিসি) নির্দেশনা দেওয়া আছে। যেসব এলাকায় দেখা যাচ্ছে সেখানের ডিসিদের ওয়াকিবহাল করলে তারা ব্যবস্থা নিবেন।’

কোথাও বিজ্ঞাপনসহ, কোথাও বিজ্ঞাপন ছাড়া ‘জি বাংলা’ দেখা যাচ্ছে। এখানে সর্ষের মধ্যের ভূত আছে কী? জানতে চাইলে প্রযুক্তিবিদ সালাহউদ্দিন সেলিম বলেন, ‘জি বাংলার দুটি ভার্সন আছে। এইচডি (হাই ডেফিনেশন) আর এসডি (স্ট্যাটার্ন্ড ডেফিনেশন)। এসডি হলো পুরনো ফরমেট, এটাতে বিজ্ঞাপনসহ দেখা যাচ্ছে। আর এইচডিতে বিজ্ঞাপন ছাড়া দেখা যাচ্ছে। এটা নিয়ন্ত্রণ করে পরিবেশক। ব্রডকাস্টার দুটি ভার্সনই দিচ্ছে। যারা ডাউনলোড করছে তাদের পরিবেশকদের কাছ থেকে চাপ দেওয়া উচিত। যাতে সবাই এইচডি ভার্সন ডাউনলোড দেয়। এইচডির জন্য আলাদা চার্জ দিতে হয়, তাই হয়ত কেউ কেউ এইচডি ফরমেট নেয়নি।’

প্রশ্ন রেখে এ প্রযুক্তিবিদ আরও বলেন, ‘সারাবিশ্বে বিদেশি চ্যানেলগুলো এভাবেই চালায়। তাহলে বাংলাদেশে ক্লিন ফিড দিতে তাদের কেন অনীহা থাকবে? মুম্বাইয়ে কলকাতার বাংলা চ্যানেলগুলো হিন্দিতে ডাবিং করে চালাতে হয়। নিজের দেশে যদি নিয়ম মানে তাহলে বাংলাদেশে কেন মানবে না? এছাড়া সিএনএন, বিবিসি ক্লিন ফিড দিচ্ছে। তাহলে ভারত থেকে আমরা কেন পাব না? প্রতিবেশি বন্ধু দেশ হিসেবে আমরা ক্লিন ফিড আশা করতেই পারি।’

এদিকে সামগ্রিক বিষয়টি ইতিবাচকভাবেই দেখছেন দেশের প্রযুক্তিবিদরা। তারা মনে করছেন, দেশি চ্যানেলকে টিকিয়ে রাখা এবং আর্ন্তজাতিক ফরমেট মেনে চলতে হলে অবশ্যই ক্লিন ফিড বাস্তবায়ন করতে হবে। সেটা যত দ্রুত সম্ভব তত তাড়াতাড়ি সুফল পাওয়া যাবে।

x

Check Also

গ্রেটা থুনবার্গ

আমাদের বিশ্ব ব্যবস্থা ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করছে: গ্রেটা থুনবার্গ

এমএনএ আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ সুইডিশ জলবায়ু আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ বলেছেন, আমাদের বিশ্ব ব্যবস্থা ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা ...