এমএনএ ফিচার ডেস্ক : প্রতিটি বাবা-মা ই চান, তাদের সন্তান সবসময় সত্য কথা বলবে। সেভাবেই শিক্ষা দেওয়া হয় তাদের ছোটবেলা থেকে। কিন্তু কীভাবে বুঝবেন শিশু মিথ্যা বলছে? সন্তান সদাসত্য কথা বলুক আমাদের এই চেষ্টা বেশির ভাগ সময়েই সফল হয় না। মিষ্টি মিষ্টি কথা বলা শিশুটা কখন যেন অবলীলায় মিথ্যে বলা শুরু করে। এমনকি কোন কারণ ছাড়াই। এই সমস্যায় পড়েন নি এমন অভিভাবক নেই। অনেক সময় শিশুর নিষ্পাপ মুখ দেখে সে যে মিথ্যা বলছে এটা বিশ্বাস করতে চায় না মন। অথবা বুঝতেই পারি না, ধরে নিই, সত্যিই বলছে।
শিশুদের এই অনাকাঙ্খিত অভ্যেস সম্পর্কে এ বিশেষ প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন- মোসাম্মৎ সেলিনা হোসেন।
শিশুকে সত্য মিথ্যার পার্থক্য বোঝানো খুব দরকার। এই ছোট বয়স থেকেই তো গড়ে উঠবে তার ন্যায়বোধ। কিন্তু সে জন্য আগে জানতে হবে শিশুরা মিথ্যে কেন বলে-
কেন শিশুরা মিথ্যে বলে?
মানুষ সারাক্ষণ মিথ্যা বলে। জ্বী, সেলিব্রেটি থেকে শুরু করে রাজনীতিবিদ, অভিভাবক, শিক্ষকেরা সবাই আমরা মিথ্যে বলা থেকে কেউ কোন অংশে পিছিয়ে নেই। শিশুরা তো দেখে দেখে শেখে। তারা খুবই খেয়াল করে আমাদের। তাই, তারাও মিথ্যে বলতে শুরু করে। শিশুরা খুব একটা ভাল মিথ্যা বলতে পারে না, তাদের মুখে মিথ্যাও মজার শোনায়, সহজেই বোঝা যায়। কিন্তু আপনি নিশ্চয়ই চাইবেন তার এই মিথ্যা বলা বন্ধ করতে। কারণ এটা যদি অভ্যাসে পরিণোত হয় তখন তা ভাঙা হবে খুবই কষ্টের।
মিথ্যা বলে থেকে শিশুকে বিরত করা একটা চ্যালেঞ্জের বিষয়। শিশুকে যেহেতু বোঝানো যায় না। বড়দের মত যুক্তি, ন্যায়নীতি সে বোঝে না। মিথ্যা কেন বলছে আর কেন বলবে না এটাও তার কাছে খুব জটিল একটা প্রশ্ন। কিন্তু বিষয়টি সহজ হবে আপনি যদি বুঝতে পারেন তার এই মিথ্যার উৎস কোথায়!
প্রধান যে ৩টি কারণ থাকে বাচ্চাদের মিথ্যা বলার পেছনে-
১। শাস্তি থেকে বাঁচার জন্য বা এমন কোন পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পেতে
২। আপনাকে হতাশ না করার জন্য
৩। একটা অদ্ভুত মজার গল্প বলে আপনার কাছ থেকে প্রতিক্রিয়া পাওয়ার জন্য।
কিভাবে বুঝবেন সে মিথ্যা বলছে-
১। সরাসরি চোখের দিকে তাকিয়ে না বলা
২। আপনি বিশ্বাস করছেন না মনে করে বার বার বলা
৩। রেগে যাওয়া বা কেঁদে ফেলা
৪। কথা বলার সময় মুখে হাত দেওয়া বা মাথায় হাত দেওয়া
৫। বলতে বলতে অসংলগ্ন হয়ে যাওয়া
৬। অস্বাভাবিকভাবে দাঁড়ানো বা বসা
৭। নিজেকে রক্ষা করার নানান রকম চেষ্টা করতে থাকা।
৮। দ্রুত কথা বলা বা গলার স্বর বদলে যাওয়া।
কিভাবে তাদের সত্য বলতে আগ্রহী করবেন?
১। শিশুকে কখনোই মারধর করবেন না। তার সাথে উচ্চস্বরে কথা বলবেন না।
২। শিশুর সামনে মিথ্যা বলে, ঝগড়া করা থেকে বিরত থাকুন।
৩। শিশুকে প্রতিযোগিতায় ফেলবেন না। সে যেমনই করুক না কেন আপনি তাতেই খুশী- এটা তাকে বুঝিয়ে বলুন।
৪। শিশুর সামনে অন্য শিশুরা খারাপ এ জাতীয় কথা বলবেন না।
৫। শিশুকে কাজের বুয়া বা নিম্নশ্রেণীর কারও সাথে রেখে যাবেন না।
৬। শিশুর সামনে অন্যের দূর্নাম করা, গালাগাল করা, নিন্দা করা থেকে বিরত থাকুন।
৭। তাকে বুঝতে দিন যা সত্য নয় তা শুনলে আপনি কষ্ট পান।
দুশ্চিন্তা করবেন না। আপনার হাতেই সবকিছু। আপনার শিশু আপনার কথাই শুনবে। শুধু তাকে তার মত করে ভালবাসুন। জোর করবেন না। স্বাধীনভাবে বেড়ে উঠতে দিন।
মোহাম্মদী নিউজ এজেন্সী নিউজ – ফিচার – ফটো নেটওয়ার্ক

