Don't Miss
Home / জাতীয় / আইন-শৃংখলা / গুলশান হামলার ‘গ্রেনেড সরবরাহকারী’ মাহফুজ গ্রেপ্তার

গুলশান হামলার ‘গ্রেনেড সরবরাহকারী’ মাহফুজ গ্রেপ্তার

এমএনএ রিপোর্ট : চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে ধরা পড়েছেন নব্য জেএমবির অন্যতম শীর্ষনেতা সোহেল মাহফুজ, তিনি গুলশান হলি আর্টিজান হামলার গ্রেনেড সরবরাহ করেছিলেন বলে পুলিশের ভাষ্য।

গতকাল শুক্রবার দিবাগত গভীর রাতে তিন সহযোগীসহ সোহেল মাহফুজকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃত অন্য তিনজন হলেন- জেএমবির আইসিটি এক্সপার্ট হাফিজ, সামরিক শাখার সদস্য জামাল এবং জেএমবি সদস্য জুয়েল।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পুলিশ জানিয়েছে, জঙ্গিরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করছিল। তাদেরকে গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়।

ঢাকা থেকে আসা কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সদস্যদের সঙ্গে জেলা পুলিশ এই অভিযানে অংশ নেয় বলে জানান পুলিশ সুপার মোজাহিদ।

তিনি জানান, রাত পৌনে ৩টার দিকে পুষ্কনী গ্রামের একটি আমবাগানে ‘বৈঠকের সময়’ ওই চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর সোহেলকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

সোহেল (২৫) কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার সাদিপুর কাবলিপাড়ার রেজাউল করিমের ছেলে। তিনি শাহাদাত, নসরুল্লাহ, রিমন নানা নামে পরিচিত বলে পুলিশ জানায়। এক হাত না থাকায় তিনি ‘হাতকাটা সোহেল’ নামেও পরিচিত।

পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী গ্রেপ্তার অন্য তিনজন হলেন- চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার চরমোহনপুর গ্রামের ইয়াসিনের ছেলে নব্য জেএমবির অন্যতম প্রধান সমন্বয়ক জামাল ওরফে মোস্তফা (৩৪), শিবগঞ্জ উপজেলার পর্বতীপুর গ্রামের আফজাল হোসেনর ছেলে নব্য জেএমবির আইটি বিশেষজ্ঞ হাফিজুর রহমান ওরফে হাসান (২৮) এবং একই উপজেলার বিশ্বনাথপুর কাটিয়াপাড়া গ্রামের এসলামের ছেলে নব্য জেএমবির সামরিক শাখার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সদস্য জুয়েল ওরফে ইসমাইল (২৬)।

সোহেল মাহফুজ ও জুয়েল শিবগঞ্জের শিবনগর গ্রামে গত ২৬ এপ্রিল জঙ্গি আস্তানায় ‘অপারেশন ঈগল হান্ট’র ঘটনায় শিবগঞ্জ থানায় এবং এবছর ২৪ মে নাচোল থানার আরেকটি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।

এক বছর আগে ২০১৬ সালের ১ জুলাই হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গিরা হামলা চালিয়ে ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনকে হত্যা করেছিল। হামলা ঠেকাতে গিয়ে জঙ্গিদের ছোড়া গ্রেনেডে প্রাণ হারিয়েছিলেন দুই পুলিশ কর্মকর্তা।

নব্য জেএমবির শীর্ষনেতা তামিম চৌধুরী ওই হামলার অস্ত্র এবং সোহেল গ্রেনেড সরবরাহ করেছিলেন বলে পুলিশ পরে জানায়।

তামিম মাসখানেক পর নারায়ণগঞ্জে অভিযানে নিহত হলেও সোহেলকে এতদিন ধরে খুঁজছিল পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

উল্লেখ্য, গুলশানের হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলায় ব্যবহৃত গ্রেনেড নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জেএমবি’র তৈরি। ইমপ্রোভাইসড হ্যান্ড গ্রেনেড তৈরির মূল কারিগর সোহেল মাহফুজ। নব্য জেএমবি’র নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন এই সোহেল মাহফুজ।

এর আগে ২০১৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে ময়মনসিংহ আদালতে নেওয়ার পথে হামলা চালিয়ে জঙ্গিরা সালাউদ্দিন সালেহীনসহ তিন জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেয়। অপর দুই জঙ্গি হলো বোমা মিজান ও হাফেজ মাহমুদ। জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার মূল পরিকল্পনাকারী ছিল সোহেল মাহফুজ।

পরবর্তীতে এ ঘটনায় কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের হাতে নব্য জেএমবি’র বেশ কয়েকজন সদস্য গ্রেপ্তার হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা জানায়, জেএমবি’র প্রতিষ্ঠাকালীন শূরা সদস্য সোহেল মাহফুজ। বোমা তৈরিতে বিশেষ পারদর্শী এই দুর্ধর্ষ জঙ্গি ময়মনসিংহের ত্রিশালে জঙ্গি ছিনতাইয়ের সঙ্গেও জড়িত। দীর্ঘদিন ধরে আত্মগোপনে থেকে সে পুরনো ধারার জেএমবিকে সংগঠিত করার চেষ্টা করছিল। নারায়ণগঞ্জে নিহত নব্য জেএমবির সমন্বয়ক তামিম আহমেদ চৌধুরীর সঙ্গে দু’বছর আগে যোগাযোগ হওয়ার পর সে নতুন ধারায় যুক্ত হয়। সোহেল মাহফুজ নব্য জেএমবির অস্ত্র ক্রয়, গ্রেনেড তৈরি এবং সরবরাহসহ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছিল।

গুলশান হামলার তদন্তকারী কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেছিলেন, গুলশান হামলার আরও আগে থেকেই জঙ্গি হিসেবে চিহ্নিত ছিলেন সোহেল মাহফুজ। তিনি জেএমবির প্রতিষ্ঠাকালীন শূরা সদস্য।

হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলাকারী পাঁচ জঙ্গি নিবরাজ ইসলাম, মীর সামেহ মোবাশ্বের, রোহান ইবনে ইমতিয়াজ, খায়রুল ইসলাম পায়েল ও শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল তখনই কমান্ডো অভিযানে নিহত হন।

এরপর বিভিন্ন অভিযানে নিহত তামিম চৌধুরী, জাহিদুল ইসলাম, তানভীর কাদেরী, নুরুল ইসলাম মারজান, আবু রায়হান তারেক, সারোয়ার জাহান, আব্দুল্লাহ মোতালেব ও ফরিদুল ইসলাম আকাশ ওই হামলায় কোনো না কোনোভাবে সম্পৃক্ত ছিল বলে জানান মনিরুল।

এছাড়া গ্রেপ্তার মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, জাহাঙ্গীর আলম ওরফে ‘রাজীব গান্ধী’ ও রাকিবুল হাসান রিগান আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

x

Check Also

পাড়া-মহল্লায় দোকান খোলার সময় বাড়লো

এমএনএ রিপোর্ট : ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন পাড়া ও মহল্লায় নিত্যপণ্যের দোকানগুলো খোলা রাখার সময় বাড়ানো ...