Don't Miss
Home / জাতীয় / সরকার / চিকিৎসকরা ঢাকায় থাকতে চাইলে চাকরি ছাড়ুন : প্রধানমন্ত্রী

চিকিৎসকরা ঢাকায় থাকতে চাইলে চাকরি ছাড়ুন : প্রধানমন্ত্রী

এমএনএ রিপোর্ট : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জেলা বা উপজেলা পর্যায়ে নিয়োগপ্রাপ্ত চিকিৎসকরা ঢাকায় থাকতে চাইলে তাঁদের সরকারি চাকরি করার প্রয়োজন নেই। তাঁদের চাকরি ছেড়ে দিয়ে বাড়িতে চলে যাওয়াই ভালো।
আমরা যখন জেলা বা উপজেলা পর্যায়ে চিকিৎসকদের নিয়োগ দিই, তখন অনেকেই আছেন যাঁরা কর্মক্ষেত্রে থাকতে চান না। বরং তাঁরা যেকোনো উপায়েই ঢাকায় থাকেন। তাদের আর সুযোগ দেওয়া হবে না। প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি চিকিৎসকদের সতর্ক করে বলেন, যারা মফস্বল ছেড়ে শহরে চলে আসে তাদের চাকরি করার দরকার নেই। দয়া করে তারা বিদায় নিয়ে বাড়ি চলে যাক। আমরা নতুন নিয়োগ দেবো।
আজ বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের রাজস্ব বাজেটের অর্থ দ্বারা সংগৃহীত সরকারি অ্যাম্বুলেন্স বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চামেলী হলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। জাপান থেকে আনা সর্বাধুনিক অ্যাম্বুলেন্স দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন হাসপাতাল ও কমিউনিটি ক্লিনিককে। প্রথম ধাপে সাতটি দেওয়া হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল ও কমিউনিটি ক্লিনিকে ৫শ অ্যাম্বুলেন্স দেওয়া হবে।
একই অনুষ্ঠানে সরাকরি অ্যাম্বুলেন্স নষ্ট হয়ে গেলে বরাদ্দের জন্য অপেক্ষা না করে তাৎক্ষণিকভাবে মেরামতের জন্য একটি তহবিল করার নির্দেশও দেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যে ডাক্তারকে আমরা নিয়োগ দিচ্ছি, যেই আমরা পাঠাচ্ছি উপজেলায়, সেখানে না থেকেই চলে আসে। সরকারি চাকরি হলেই এই সমস্যাটা হয়। যেই আমরা নিয়োগ দিচ্ছি, যেকোনোভাবে কায়দা করে ঢাকায় এসে বসে থাকে। সরকারি চাকরি যদি কারও ভালো না লাগে, তাহলে তা ছেড়ে রাজধানীতে বসে প্রাইভেট রোগী দেখে তাঁরা অনেক টাকা উপার্জন করতে পারেন। এখনতো অনেক প্রাইভেট ক্লিনিক আছে, তাতে কোথাও যদি তারা চাকরি পেয়ে যায়, তাহলে খুব ভালো কথা। ট্রেইনিং দিয়ে আমরা নতুন নিয়োগ দেব। কারণ প্রতিনিয়ত ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া শিখে চাকরি খুঁজে বেড়াচ্ছে। তাদেরকে আমার ওখানে দেবো, কিছু ট্রেইনিং করবে, কিছু সার্ভিস দেবে, আরেক জায়গায় যাবে, এটা কোনো বিষয়ই না, এটা নিয়ে মনে হয় এতটা মাথা ঘামানোর প্রয়োজনও নাই।’
এই প্রশিক্ষণের জন্য একটি তহবিল করার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তহবিল না করলে অন্য কেউ সরকারে আসলে এই উদ্যোগ বন্ধ করে দেবে। এ ক্ষেত্রে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় এসে এর আগে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে চালু হওয়া কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দিয়েছিল। এখানে চিকিৎসা পেলে সবাই নৌকায় ভোট দেবে, আমাদেরকে কেউ ভোট দেবে না- এই কথাটা বলে (কমিউনিটি ক্লিনিক) বন্ধ করে দিয়েছিল। এ রকম আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিতে পারে কেউ, এটা চিন্তাও করা যায় না।
উপজেলা ও মফস্বল পর্যায়ে ডাক্তারদের আবাসন সমস্যার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটি সমস্যা আমি খুঁজে বের করেছি, তাদের আবাসিক সমস্যাটা। উপজেলায় গেলে সেখানে তাদের থাকার খুব একটা জায়গা নেই।
এসময় উপজেলা পর্যায়ে চিকিৎসকসহ সরকারি কর্মকর্তাদের আবাসন সমস্যা সমাধানে বহুতল ভবন নির্মাণ করতে ইতোমধ্যে গণপূর্তকে নির্দেশ দেওয়ার কথা জানান তিনি।
স্বাস্থ্যসেবায় আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, স্বাস্থ্যসেবা আমরা দেশের মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছি। জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য বিভাগের সচিব মো. সিরাজুল হক খান এবং সমাপনী বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী ও প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।
শেখ হাসিনা মানসম্পন্ন চিকিৎসক তৈরিতে মেডিকেল কলেজগুলোর শিক্ষার মান উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেন। বলেন, এসব মেডিকেল কলেজে কী ধরনের চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হচ্ছে, তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তদারকি করতে হবে। মেডিকেল কলেজগুলোতে ‘রোগী হত্যাকারী ডাক্তার’ নাকি ‘রোগী রক্ষাকারী ডাক্তার’ তৈরি হচ্ছে, তা তাদের দেখতে হবে।
সরকার দেশে অনেকগুলো মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যেই পাঁচটি সেনানিবাসে মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার অনুমোদন দিয়েছি এবং পর্যায়ক্রমে অন্যান্য সেনানিবাসেও এ ধরনের কলেজ প্রতিষ্ঠা করব।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে মেডিকেল শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছে এবং চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে আরও দুটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে।
x

Check Also

ব্যাংকের লাভ-ক্ষতির হিসাব তৈরির সুুযোগ জুন পর্যন্ত বাড়লো

এমএনএ অর্থনীতি রিপোর্ট : করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সাধারণ ছুটি ঘোষণার কারণে বার্ষিক আর্থিক লাভ-ক্ষতির ...