Don't Miss
Home / আজকের সংবাদ / অর্থনীতি / টাকা পাচার রোধে কঠোর আইনের প্রস্তাব
ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) পক্ষ থ

টাকা পাচার রোধে কঠোর আইনের প্রস্তাব

এমএনএ অর্থনীতি ডেস্ক : দেশ থেকে টাকা পাচার রোধে কঠোর আইন প্রণয়নের প্রস্তাব করা হয়েছে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) পক্ষ থেকে। ইআরএফের পক্ষ থেকে বলা হয়, প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ টাকা পাচার হচ্ছে, এই পাচার রোধে ২০১৩ সালে ট্রান্সফার প্রাইসিং নামে একটি আইন করা হয়েছিল। বাস্তবে এর অগ্রগতি কতটুকু সেটা জানা যায় না। মুদ্রা পাচার রোধে ভারত অথবা দক্ষিণ কোরিয়ার মতো কঠোর আইন করা যায় কি না সেটা ভেবে দেখা যেতে পারে। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত প্রাকবাজেট আলোচনায় সংগঠনটির নেতারা এ প্রস্তাব করেন।

করের আওতা বৃদ্ধি করতে দেশে করযোগ্য প্রকৃত নাগরিকের সংখ্যা নিরূপণে ব্যাপকভিত্তিক জরিপ ও গবেষণায় জোর দেওয়ার আহ্বান জানান ইআরএফ নেতারা। ইআরএফ সভাপতি শারমীন রিনভী ও সাধারণ সম্পাদক এসএম রাশিদুল ইসলাম এসব প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন। অনুষ্ঠানটিতে সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।

ইআরএফ সভাপতি শারমীন রিনভী বলেন, দেশের অর্থনীতির পরিধি বৃদ্ধি পাওয়ায় গত দশ বছরে বিপুল সংখ্যক মানুষ কর প্রদানে সামর্থ্যবান হয়েছেন বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। বিভিন্ন গবেষণায় বলা হচ্ছে, এ মুহূর্তে দেশে করযোগ্য মানুষ অন্তত ২ কোটি। আবার কেউ বলছেন এই সংখ্যা ২ কোটিরও বেশি। করযোগ্য নাগরিকদের সংখ্যা নিয়ে এই বিভ্রান্তি দূর করাতে কিংবা দেশে করযোগ্য প্রকৃত নাগরিকের সংখ্যা নিরূপণে এনবিআরের একটি ব্যাপকভিত্তিক জরিপ ও গবেষণা জরুরি।

তিনি বলেন, এনবিআরের তথ্যানুযায়ী দেশে ই-টিআইএনধারীর সংখ্যা ৭০ লাখের মতো। এর মধ্যে আয়কর রিটার্ন দাখিল করেন মাত্র ২৪ থেকে ২৫ লাখ। অথচ কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া প্রায় সব টিআইএনধারীর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক। রিটার্ন দাখিল না করা এ বিপুল পরিমাণ টিআইএনধারীকে কর নেটের আওতায় আনতে আইনের বাধ্যবাধতা সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা দরকার।

বিদেশি নাগরিকদের করের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে রিনভী বলেন, বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য তথ্যানুযায়ী বাংলাদেশে ৮৫ হাজার ৪৮৬ জন বিদেশি নাগরিক কাজ করেন। কিন্তু এনবিআরে আয়কর জমা দেন মাত্র ১৪ থেকে ১৫ হাজার বিদেশি নাগরিক। দেশে কর্মরত বিদেশিরা বছরে ২৬ হাজার কোটি টাকা নিয়ে যায় বলে এক গবেষণায় জানিয়েছে টিআইবি। বিদেশি নাগরিকদের করের আওতায় আনতে এনবিআরের উদ্যোগ আরও জোরালো করার প্রয়োজন।

ইআরএফের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ বলেন, অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল পদ্ধতিকে আরও জনপ্রিয় করতে ব্যাপকভিত্তিক প্রচারণা চালানো দরকার। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ওয়েবসাইটটি আপগ্রেড করার প্রস্তাব করছি। এতে অনেক হালনাগাদ তথ্য ও পরিসংখ্যান পাওয়া যায় না। একই সঙ্গে রাজস্ব বোর্ডের গবেষণা সেলটি আরও কার্যকর ও যুগোপযোগী করার প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি। আমাদের প্রস্তাব হলো, একজন সদস্যের নেতৃত্বে গবেষণা ও পরিসংখ্যান বিভাগকে শক্তিশালী করা যেতে পারে।

ওয়্যারহাউস অটোমেশন প্রকল্পের কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করার দাবি জানিয়ে ইআরএফের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বন্ডেড ওয়্যারহাউস ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা আনতে এনবিআর আইনি কাঠামোয় পরিবর্তনসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে এ খাতে অনিয়ম রোধ এবং আরও রফতানিবান্ধব বন্ড ব্যবস্থাপনা তৈরির জন্য এনবিআরের নেওয়া বন্ডেড ওয়্যারহাউস অটোমেশন প্রকল্পের কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করে পুরো প্রক্রিয়াকে অটোমেশনের আওতায় আনা দরকার।

আয়কর ও ভ্যাট আইনসহ এনবিআরের যেকোনো আইন বাস্তবায়নের আগে সম্ভাব্য প্রভাব যাচাই করার আহ্বান জানিয়ে সাংবাদিক দৌলত আকতার মালা বলেন, যেকোনো আইন বাস্তবায়ন করার আগে যদি সম্ভাব্য প্রভাব যাচাই-বাছাই করা হয়, তাহলে আইন বাস্তবায়ন করার পরের জটিলতা তৈরি হয় না। যেমন- আয়কর আইনের খসড়া করার আগেই এ বিষয় যাচাই করা উচিত বলে মনে করি।

ইআরএফের অন্যান্য প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে-কোনো ব্যবসায়ী যেন কর ফাঁকি দিতে না পারে, সেজন্য এনবিআরের অটোমেশন ও কঠোর মনিটরিংয়ের সুপারিশ। বিনিয়োগকারীদের জন্য দীর্ঘমেয়াদি কর কাঠামো প্রণয়ন করা। এ ছাড়া আয়কর, ভ্যাট ও শুল্ক বিষয়ক অনেক সিদ্ধান্ত ব্যবসায়ী, ভোক্তা, করদাতা কিংবা রাজস্বের ওপর কী প্রভাব ফেলছে তা বিশ্লেষণ করে পরবর্তী সময়ে সংশোধনমূলক সিদ্ধান্ত নেওয়া।

ইআরএফের পক্ষ থেকে সুপারিশ করা হয়, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ-পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় রফতানি প্রতিযোগিতা সক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে অনেক দেশের সঙ্গেই এফটিএ বা পিটিএর মতো সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রয়োজন হবে। এ কারণে সরকারের রাজস্ব আহরণে নেতিবাচক প্রভাব আসতে পারে। এক্ষেত্রে হঠাৎ করে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের শুল্ক আদায় তথা রাজস্ব আয় কমে যাওয়ার ধাক্কা মোকাবিলায় এখন থেকেই প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম শুরু করার দরকার।

ইআরএফ জানায়, এনবিআরের তথ্যানুযায়ী, দেশে ই-টিআইএনধারীর সংখ্যা ৭০ লাখের মতো। এর মধ্যে আয়রক রিটার্ন দাখিল করেন মাত্র ২৪ থেকে ২৫ লাখ। অথচ কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া প্রায় সব টিআইএনধারীর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক। রিটার্ন দাখিল না করা এ বিপুল পরিমাণ টিআইএনধারীকে কর নেটের আওতায় আনতে আইনের বাধ্যবাধতা সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা দরকার বলে আমরা মনে করি।

সিটি করপোরেশন এলাকার নাগরিকদের সর্বনিম্ন কর ৫ হাজার টাকা। করের এ পরিমাণটি কমিয়ে সব টিআইএনধারীকে কর প্রদানে উৎসাহী করা যায় কি না আমরা তা ভেবে দেখার প্রস্তাব রাখছি।

ইআরএফের প্রস্তাবে বলা হয়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সংসদে জানিয়েছেন, বাংলাদেশে ৮৫ হাজার ৪৮৬ জন বিদেশি নাগরিক কাজ করেন। কিন্তু এনবিআরে আয়কর জমা দেন মাত্র ১৪ থেকে ১৫ হাজার বিদেশি নাগরিক। দেশে কর্মরত বিদেশিরা বছরে ২৬ হাজার কোটি টাকা নিয়ে যায় বলে এক গবেষণায় জানিয়েছে টিআইবি। বিদেশি নাগরিকদের করের আওতায় আনতে এনবিআরের উদ্যোগ আরও জোরালো করার প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি।

x

Check Also

সালমান খান

সালমানের বাড়ির সামনে গুলির দায় স্বীকার করল বিষ্ণোই গ্যাং

এমএনএ বিনোদন ডেস্কঃ বলিউড অভিনেতা সালমান খানের বাড়ির বাইরে রবিবার ভোর ৫টা নাগাদ চার রাউন্ড ...