Don't Miss
Home / আজকের সংবাদ / অর্থনীতি / দেশের মোট বৈদেশিক ঋণের ২৪ শতাংশ বেসরকারি খাতে
অর্থবছর

দেশের মোট বৈদেশিক ঋণের ২৪ শতাংশ বেসরকারি খাতে

এমএনএ অর্থনীতি ডেস্ক : সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বেসরকারি খাতে বৈদেশিক ঋণ গ্রহণের প্রবণতা বাড়ছে। গত ২০২০-২১ অর্থবছর শেষে বা গত জুন শেষে দেশের বেসরকারি খাতে বৈদেশিক ঋণের পুঞ্জিভূত স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৮৬৮ কোটি ৮৪ লাখ ৩০ হাজার ডলার। এটি বাংলাদেশের মোট বৈদেশিক ঋণের ২৪ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, ২০২০-২১ অর্থবছর শেষে দেশে মোট (সরকারি ও বেসরকারি খাতে) বৈদেশিক ঋণের পুঞ্জিভূত স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৮০৪ কোটি ডলার। এর মধ্যে সরকারি খাতে ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ৫ হাজার ৯৩৫ কোটি ডলার (মোট ঋণের ৭৬.১%) এবং বেসরকারি খাতে প্রায় ১ হাজার ৮৬৯ কোটি ডলার (মোট ঋণের ২৩.৯%)।

বেসরকারি খাতে বৈদেশিক ঋণের মধ্যে স্বল্প মেয়াদী ঋণের পরিমাণ-ই অধিক। স্বল্প মেয়াদী ঋণের পরিমাণ হচ্ছে প্রায় ১ হাজার ১৮০ কোটি ডলার এবং দীর্ঘ মেয়াদী ঋণের পরিমাণ হচ্ছে প্রায় ৬৮৯ কোটি ডলার।
জানা যায়, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর অফশোর ইউনিট (ওবিইউ) বেসরকারি খাতে বৈদেশিক ঋণপ্রবাহের প্রধান মাধ্যম। দেশে ৩৬টি ব্যাংক অফশোর ব্যাংকিং কার্যক্রম রয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এর মাধ্যমেও বেসরকারি খাতে বৈদেশিক ঋণ বিতরণ হয়ে থাকে।

ব্যাংক খাত সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, বাণিজ্যিক ব্যাংকের অফশোর ব্যাংকিং ইউনিটগুলোকে (ওবিইউ) ২০১২ সালে স্বল্পমেয়াদি বিদেশি ঋণ আনার অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই বছর বেসরকারি খাতে বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ছিল মাত্র ২৩ কোটি ডলার। কিন্তু এরপর থেকেই ঋণ গ্রহণের পরিমাণ বাড়তে থাকে লাফিয়ে লাফিয়ে।
কয়েক বছর আগে ‘বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট’ (বিআইবিএম) আয়োজিত এক কর্মশালায় বলা হয়, পাঁচ বছরে (২০১২-১০১৬) বেসরকারি খাতে বৈদেশিক ঋণ ২৬ গুন বেড়েছে। ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বেসরকারি খাতে এ ধরনের বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬১৬ কোটি মার্কিন ডলার।

ব্যাংক খাত সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো মতে, করোনাকালীন সময়ে উন্নত দেশ ও বহুজাতিক সংস্থাগুলোর বিনিয়োগযোগ্য অলস তারল্য বৃদ্ধি, ঋণের সুদের হার সর্বোচ্চ ২ শতাংশ নির্ধারণ ও পূর্বের ঋণ পরিশোধের সময় বৃদ্ধি ইত্যাদি বৈদেশিক ঋণ বাড়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে।

বিআইবিএম-এর ওই কর্মশালায় বলা হয়, এ ধরনের ঋণে প্রতিকূল পরিস্থিতি তৈরির আশঙ্কা রয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রায় আনা এ ধরনের ঋণ ভবিষ্যতে বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের বৈদেশিক লেনদেনে বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। যেহেতু ডলারের বাজার স্থিতিশীল নয়, সেহেতু ঋণ পরিশোধকালে এর বিনিময় হার বৃদ্ধি পেলে ঋণগ্রহীতারা লোকসানে সম্মুখীন হবেন। অপরদিকে সরকারেরও বড় বড় প্রকল্পে বিপুল পরিমাণে বৈদেশিক ঋণ রয়েছে। এতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দুর্বল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিদেশ থেকে এ ধরনের স্বল্পমেয়াদি ঋণ নেওয়ার প্রবণতা যাতে না বাড়ে, সে জন্য স্থানীয় ব্যাংকগুলোর প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়াতে হবে। এছাড়া দেশের শিল্পোদ্যোক্তারা বৈদেশিক ঋণের হেজিং সুবিধা পান না। হেজিং মূলত ডলার মূল্যবৃদ্ধির সংকট ঝুঁকির ক্ষেত্রে রক্ষা করে।

তবে কারো কারো মতে, বাংলাদেশে ব্যাংকিং খাতের প্রয়োজনেই এ ধরনের ঋণ আনার অনুমতি দেয়া হয়েছে। তবে বিদেশের যেসব উৎস থেকে এ ধরনের ঋণ আনা হচ্ছে, সেগুলো যথেষ্ট নির্ভরযোগ্য কি না Ñসে বিষয়ে গুরুত্ব দেয়ার প্রয়োজন আছে।

এ প্রসঙ্গে কর্মশালায় বলা হয়, দেশে সুদের হার এক অঙ্কে নামিয়ে আনার ক্ষেত্রে এ ধরনের ঋণের একটা ভূমিকা ছিল। তবে এ ধরনের ঋণ নিয়ে অনেক দেশ বিপদে পড়েছে, সেটিও মাথায় রাখতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সূত্রমতে, দেশে যখন উচ্চ সুদহার ছিল তখন বেসরকারি খাতে বিদেশি ঋণ নেওয়ার অনুমোদন দেয়া হয়। ওই সময়ে স্থানীয় ব্যাংকগুলোর সুদের হার ছিল ১৭ থেকে ১৮ শতাংশ।

এখন তা ১০ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। বর্তমানে বিদেশি ঋণের সঙ্গে দেশীয় ব্যাংকগুলোর ঋণের সুদহারের তেমন কোনো পার্থক্য নেই। দেশের তুলনায় বিদেশি ঋণের সুদহার তুলনামূলক কম হলেও সীমাহীন ঋণের অনুমোদন দেয়া হবে না।

x

Check Also

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

জাতির পিতাকে হত্যার পর সমস্ত অর্জন নষ্ট করে দেয়া হয়ঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

এমএনএ জাতীয় ডেস্কঃ জাতির পিতাকে হত্যা করার পরে এদেশে সমস্ত অর্জনগুলো একে একে নষ্ট করে ...