Don't Miss
Home / জাতীয় / সারাদেশ / পাহাড়ধসের ঘটনায় ফের উদ্ধার অভিযান শুরু

পাহাড়ধসের ঘটনায় ফের উদ্ধার অভিযান শুরু

এমএনএ রিপোর্ট : চট্টগ্রাম, বান্দরবান ও রাঙামাটিতে পাহাড়ধসের ঘটনায় ১৩৫টি মৃতদেহ উদ্ধারের পর আজ বুধবার আবারো উদ্ধার অভিযান শুরু হয়েছে। আজ এ পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় আরও ৩টি লাশ উদ্ধার করা হঢেছে।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া ও দুর্গম যোগাযোগব্যবস্থার এবং অন্ধকারে উদ্ধার তৎপরতা চালানোর মতো প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম না থাকার কারণে রাত আটটার সময় উদ্ধার কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। আজ সকাল সাড়ে আটটা থেকে শুরু হওয়া উদ্ধার অভিযানে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন স্থানীয় লোকজনও।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, রাঙামাটিতে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও স্থানীয়রা সকাল ৮টা থেকে উদ্ধার কাজ শুরু করেছে। রাঙামাটি শহর ও এর আশপাশের এলাকায় এখনো বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। শহরের বিভিন্ন স্থানে রাস্তায় বিদ্যুতের খুঁটি ও গাছপালা পড়ে আছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে দ্রুত সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ করা সম্ভব হবে বলে উদ্ধার কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এখনো বিভিন্ন এলাকায় ১০-১৫ জন নিখোঁজ রয়েছে। তাদের সন্ধানে উদ্ধার অভিযান চালানো হচ্ছে। রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মানজুরুল মান্নান গতকাল মঙ্গলবার জানিয়েছিলেন, আজ বুধবার উদ্ধার অভিযান বেগবান করতে চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা থেকে ৮০ জনের বিশেষ একটি উদ্ধার দলের আসার কথা রয়েছে।

জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) সাঈদ তরিকুল হাসান মানিকছড়ির ঘটনাস্থলে থাকা উদ্ধারকর্মীদের বরাত দিয়ে জানান, প্রবল বর্ষণে পাহাড়ধসে চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়ক বন্ধ হয়ে যায়। গতকাল সকালে সেই মাটি সরাতে কাজ করছিলেন সেনা সদস্যরা। তখন ওপর থেকে পাহাড়ধসে সেনা সদস্যদের ওপর পড়ে। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটে।

এদিকে, বান্দরবানে আজ বুধবার সকাল ৮টা থেকে ফের অভিযান শুরু হয়েছে। এ জেলায় মা-মেয়েসহ বেশ কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার থেকে সেখানে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় আবহাওয়া কিছুটা ভালো। তাই দ্রুত উদ্ধার কাজ শেষ করা যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।

প্রশাসন, পুলিশ, স্থানীয় লোকজনসহ বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী আজ বুধবার দুপুরে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পাহাড় ধসের ঘটনায় ১৩৮ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় বিপর্যয় ঘটেছে রাঙামাটিতে। সেখানে পাহাড়ধসে মারা গেছেন ১০১ জন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন সেনাবাহিনীর দুই কর্মকর্তাসহ ছয় সেনা সদস্যও রয়েছেন। পাহাড়ধসে বন্ধ হয়ে যাওয়া রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়ক চালু করতে গিয়ে প্রাণ হারান তাঁরা। এছাড়া চট্টগ্রামে রাঙ্গুনিয়ায় ২১ জন ও চন্দনাইশে ৭ জন ও বান্দরবানে ৬ জন, কক্সবাজারের টেকনাফে ২ জন এবং খাগড়াছড়িতে একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

এ ছাড়া পাহাড়ধসে ঘটনায় বিভিন্ন এলাকায় ১০ সেনা সদস্যসহ আহত হয়েছে শতাধিক। আরেক সেনা সদস্যসহ বেশ কয়েকজনের নিখোঁজ থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।

রাঙামাটি শহরের বিভিন্ন এলাকায় পাহাড়ধস শুরু হয় গতকাল মঙ্গলবার ভোর ৫টা থেকে। এরপর বেলা ১১টা পর্যন্ত ছয় ঘণ্টায় শহরের ভেদভেদি, রাঙ্গাপানি, যুব উন্নয়ন, টিভি স্টেশন, রেডিও স্টেশন, রিজার্ভ বাজার, মোনঘর, শিমুলতলি ও তবলছড়ি এলাকায় পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটে।

গত সোমবার মধ্যরাত ও গতকাল মঙ্গলবার ভোরে পাহাড়ধসে তাঁরা মারা যান। পরে বৃষ্টির মধ্যেই সেনাবাহিনী, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় লোকজন উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে। তবে বৃষ্টির কারণে দুর্গম এলাকায় তাত্ক্ষণিকভাবে উদ্ধারকাজ শুরু করা যায়নি। ফলে হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত চিত্র পাওয়া যায়নি। মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। স্থানীয়রা জানিয়েছে, অনেক জায়গায় ধসের মাটি সরানো যায়নি।

বৃষ্টি, ঢল ও পাহাড়ধসের কারণে পার্বত্যাঞ্চলে যোগাযোগব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। পরিস্থিতি নাজুক হয়ে পড়ায় চট্টগ্রামের সঙ্গে রাঙামাটি, বান্দরবান ও কক্সবাজারের সড়ক যোগাযোগ গত সোমবার রাতেই বন্ধ হয়ে যায়। অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

ফায়ার সার্ভিসের বান্দরবান স্টেশনের কর্মকর্তা তারিকুল ইসলাম আজ গণমাধ্যমকর্মীদেরকে জানান, সকাল ছয়টা থেকে লেমুঝিরি আগাপাড়ায় উদ্ধার অভিযান শুরু করা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের ৭০ থেকে ৮০ জন কর্মী মাটি কাটার কাজ করছেন।

ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সঙ্গে স্থানীয় লোকজনকেও মাটি কাটতে দেখা গেছে। যে যেভাবে পারছেন, সহায়তার হাত বাড়াচ্ছেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কাজল কান্তি দাশ মাটি কাটার জন্য শ্রমিক দিয়েছেন।

x

Check Also

নবীনগর উপজেলার

নবীনগরে একাধিক পুজামন্ডপ পরিদর্শন করলেন এলজিইডি-র তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বিপুল বণিক

এমএনএ জাতীয় ডেস্কঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার একাধিক পুজামণ্ডপ পরিদর্শন করলেন এলজিইডি-র তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বিপুল ...