Don't Miss
Home / খেলাধূলা / ক্রিকেট / বৃষ্টিতেও শেষ রক্ষা হলো না বাংলাদেশের

বৃষ্টিতেও শেষ রক্ষা হলো না বাংলাদেশের

এমএনএ স্পোর্টস ডেস্ক : চট্টগ্রাম টেস্টে বৃষ্টিতেও শেষ রক্ষা হলো না বাংলাদেশের। শেষ উইকেটে দরকার ছিল ৩.৩ ওভার টিকে থাকা। উইকেটে ছিলেন সৌম্য সরকার ও নাঈম হাসান। কিন্তু রশিদ খানের ঘূর্ণিতে ঠিকই কাবু হলেন সৌম্য। দিনের দুই তৃতীয়াংশ খেলা বৃষ্টির কারণে বন্ধ থাকলেও আফগানিস্তানের বিপক্ষে লজ্জাজনক হার থেকে বাঁচতে পারলনা বাংলাদেশ। চট্টগ্রামে এক মাত্র টেস্টে ২২৪ রানের ঐতিহাসিক জয় তুলে নিয়েছে আফগানরা।

আজ সোমবার (০৯ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে শেষদিনে দ্বিতীয় ইনিংসে ৬১.৪ ওভারে ১৭৩ রানেই গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশ। আগেরদিন ৬ উইকেটে ১৩৬ রান করেছিল স্বাগতিকরা। আফগানদের দেওয়া ৩৯৮ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং বিপর্যয়ের পড়া বাংলাদেশ হারের মুখে পড়ে চতুর্থদিনেই। তবে শেষ মুহুর্তে বৃষ্টি রক্ষা করে টাইগারদের।

সফরকারীদের বিপক্ষে হারের লজ্জা এড়াতে চতুর্থ দিনের অপরাজিত দুই ব্যাটসম্যান সাকিব আল হাসান ও সৌম্য পঞ্চম দিন শুরু করেছিলেন। কিন্তু ১৩ বলের পর পুনরায় বৃষ্টি নেমে আসে চট্টগ্রামে। যার কারণে দীর্ঘক্ষণ বন্ধ ছিল ম্যাচটি। বৃষ্টি থামলে ফের মাঠে নামে দু’দল। ৪ উইকেট হাতে থাকা বাংলাদেশের ড্রয়ের জন্য দরকার ছিল ১৮.৩ ওভার টিকে থাকা। কিন্তু তাও পারল না টাইগাররা।

চতুর্থ দিন শেষেই বাংলাদেশের ভাগ্যে পরাজয় লেখা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সেই চিত্রনাট্য বদলে দেয় বৃষ্টি। পঞ্চম দিন মধ্যাহ্ন বিরতির পরে ২.১ ওভার খেলা হতেই আবার বৃষ্টি এসে যায়। ঝুম ওই বৃষ্টিতেই নাটকের শেষ হবে বলে মনে হচ্ছিল। কিন্তু বদলে গেল সেই দৃশ্যপটও। শেষ বিকেলে সূর্য উঁকি দেয়। আড়মোড় ভেঙে আবার মাঠে নামেন খেলোয়াড়-আম্পায়াররা। মান বাঁচাতে অন্তত ১৯ ওভার খেলার লক্ষ্য দেওয়া হয় বাংলাদেশকে। কিন্তু সাকিব-সৌম্যরা সেটাও পারলেন না। বাংলাদেশের বিপক্ষে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ২২৪ রানের ঐতিহাসিক জয় তুলে নিল আফগানিস্তান। এটি নিজেদের তৃতীয় টেস্টে দ্বিতীয় জয় আফগানদের।

বৃষ্টির পর চার উইকেট হাতে নিয়ে শুরু করে বাংলাদেশ। সাকিব-সৌম্য উইকেটে থাকায় বাকি সময়টা বাংলাদেশ কাটিয়ে দিতে পারবে বলেই মনে হয়েছিল। ৪৪ রানে অপরাজিত থেকে খেলা শুরু করেছিলেন সাকিব আল হাসান। কিন্তু বিরতির পর প্রথম বলেই এমন একটি শট খেললেন, যেটির ব্যাখ্যা কোনোভাবেই পাওয়া কঠিন। চায়নাম্যান বোলার জহির খানের করা স্টাম্পের বাইরের যে বল ছাড়া যায় অনায়াসে, সাকিব চাইলেন শট খেলতে। কাট করতে গিয়ে কটবিহাইন্ড!

বাংলাদেশের সম্ভাবনায় বড় চোট লাগল তখনই। আফগানরা হয়ে উঠল আরও উজ্জীবিত। একবার জীবন পেয়েও মেহেদী হাসান মিরাজ পারলেন না টিকতে। রশিদ খানের বলে বিদায় নেওয়ার পাশাপাশি শেষ করে এলেন বাংলাদেশের শেষ রিভিউ।

সেটি আক্ষেপে পোড়াল একটু পরই। ব্যাটে লাগার পরও তাইজুল ইসলামকে এলবিডব্লিউ দিয়েছিলেন অভিষিক্ত আম্পায়ার পল উইলসন। হতাশ তাইজুলকে মাঠ ছাড়তে হয় রিভিউ না থাকায়।

ভরসা হয়ে টিকে তখন কেবল সৌম্য সরকার। তবে আস্থার প্রতিদান তিনি পারেননি দিতে। ছিলেন নড়বড়ে। শেষ ব্যাটসম্যান নাঈম হাসানকে স্ট্রাইক দেওয়া, না দেওয়া নিয়ে দ্বিধা ফুটে উঠছিল বারবার। পরিষ্কার ছিলেন না ভাবনায়। তাকে ফিরিয়েই বাংলাদেশকে শেষ করে দিলেন রশিদ।

আম্পায়ারের আঙুল যখন জানিয়ে দিল শেষ ব্যাটসম্যানের বিদায়ের ঘোষণা, রশিদ খানকে তখন পায় কে! বাঁধনহারা উচ্ছ্বাসে ছুটছেন তখন আফগান অধিনায়ক। ছুটছে আফগান ক্রিকেটও!

এর আগে চতুর্থ দিনও তিনবার চট্টগ্রামে বৃষ্টি বাগড়া দেয়। পুরো দিন খেলানও সম্ভব হয়নি। শেষ বিকেলে বৃষ্টির কারণে নির্ধারিত সময়ের আগে দিনের খেলা শেষ করে দেওয়া হয়। তবে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে শেষ দিন সকাল নয়টা ৩০ মিনিটে খেলা শুরুর সময় দেওয়া হয়। কিন্তু চট্টগ্রামে রাতেই অনেক বৃষ্টি হয়। সকালেও বৃষ্টি হলে বেলা ১টায় ম্যাচ মাঠে গড়ায়। কিন্তু খেলা শুরু হওয়ার স্বস্তি স্থায়ী হয়নি আফগানদের। যদিও শেষ হাসি তারাই হেসেছে।

সিরিজের একমাত্র টেস্টে টস জিতে ব্যাটিং নেয় আফগানিস্তান। তারা প্রথম ইনিংসে করে ৩৪২ রান। প্রথম আফগান হিসেবে টেস্টে সেঞ্চুরি করেন রহমত শাহ। এছাড়া আসগর আফগান করেন ৯২ রান। বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে ২০৫ রানে অলআউট হয়। আফগানিস্তান প্রথম ইনিংসে ১৩৭ রানের লিড পায়। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে ২৬২ রানে থামে আফগানরা। লিড ধরা ছোঁয়ার বাইরে নিয়ে যায়। বাংলাদেশকে লক্ষ্য দেয় ৩৯৮ রানের। বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে করতে পারে ১৭৩ রান। আফগান অধিনায়ক রশিদ খান প্রথম ইনিংসে ফিফটি পান। দুই ইনিংসেই পাঁচ উইকেটসহ ১১ উইকেট নেন তিনি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর :

আফগানিস্তান ১ম ইনিংস : ৩৪২

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস : ২০৫

আফগানিস্তান ২য় ইনিংস : ২৬০

বাংলাদেশ ২য় ইনিংস : (লক্ষ্য ৩৯৮, আগের দিন ১৩৬/৬) ৬১.৪ ওভারে ১৭৩ (সাকিব ৪৪,সৌম্য ২, মিরাজ ১৫, তাইজুল ০, নাঈম ১*; ইয়ামিন ৪-১-১৪-০, নবি ২০-৫-৩৯-১, রশিদ ২১.৪-৬-৪৯-৬, জহির ১৫-০-৫৯-৩, কাইস ১-০-৬-০)।

ফল : আফগানিস্তান ২২৪ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ : রশিদ খান

x

Check Also

শের-ই-বাংলা

বাংলার অবিসংবাদিত নেতা শের-ই-বাংলা এ কে ফজলুল হকের ৬২তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

এমএনএ ফিচার ডেস্কঃ বাংলার অবিসংবাদিত নেতা শের-ই-বাংলা এ কে ফজলুল হকের ৬২তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। শেরে ...