ব্রেক্সিট নিয়ে ইইউ’র সঙ্গে আপোস নয় : মে
Posted by: News Desk
September 2, 2018
এমএনএ ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক : ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে জানিয়েছেন, নিজের ব্রেক্সিট পরিকল্পনা নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে কোনো আপোস করবেন না।
নিজ দলে মে’র বিরোধীরা ইইউ থেকে পরিষ্কারভাবে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়ার (ব্রেক্সিট) আহ্বান জানিয়ে একটি নিজস্ব প্রস্তাব দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে গণমাধ্যমে একটি প্রতিবেদন প্রকাশের পর প্রধানমন্ত্রী এ অবস্থান জানালেন।
দ্য ‘সানডে টেলিগ্রাফ’ পত্রিকায় মে বলেন, ইইউ’র সঙ্গে আলোচনায় তার ব্রেক্সিট পরিকল্পনায় দেশের স্বার্থ সুরক্ষা হয় না এমন কোনো বিষয়ে তাকে চাপ দিয়েও আপোস করানো যাবে না। তাছাড়া, ব্রেক্সিট নিয়ে দ্বিতীয় কোনো গণভোটও করবেন না বলে জানান তিনি।
যুক্তরাজ্য ও ইইউ’র ৪০ বছরের সম্পর্কের অবসানে একটি চুক্তিতে উপনীত হওয়ার যে সময় আগে থেকে নির্ধারণ করা হয়েছে তা শেষ হতে আর মাত্র দুইমাস বাকি।
অথচ শেষ মুহূর্তেও মে তার বাণিজ্য-বান্ধব ব্রেক্সিট পরিকল্পনায় এমনকি নিজ দলেরও পূর্ণ সমর্থন আদায় করতে পারেননি। পুরো দেশও মে’র ব্রেক্সিট পরিকল্পনা ‘চেকারস প্ল্যান’ নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত।
তবে ইইউ মে’র ব্রেক্সিট পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়েছে, যেখানে উভয়পক্ষের বাণিজ্য স্বার্থ সংরক্ষণের কথা বলা হয়েছে। যদিও উভয়পক্ষের বাণিজ্য স্বার্থ সংরক্ষণ করে আলোচনা চালিয়ে যাওয়া বেশ কঠিন হবে।
‘দ্য সানডে টেলিগ্রাফ’ পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মে বলেন, “চেকারস প্রস্তাবে আমাদের দেশের স্বার্থ সুরক্ষা হবে না এমন বিষয়ে আমি আপোস করব না। আমাদের দেশের ভবিষ্যত সুরক্ষায় আগামী কয়েক মাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং নিজের লক্ষ্য সম্পর্কে আমার পরিষ্কার ধারণা আছে।”
মে’র ব্রেক্সিট পরিকল্পনার বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া অনেকে আবার একটি চূড়ান্ত ব্রেক্সিট চুক্তির জন্য গণভোট আয়োজনের কথা বললেও তিনি তা নাকচ করে বলেছেন, “একই প্রশ্ন আবার সবাইকে জিজ্ঞাসা করা বৃহৎ অর্থে আমাদের গণতন্ত্রের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করা হবে।”
মের ব্রেক্সিট পরিকল্পনায় বিচ্ছেদের পরও যুক্তরাজ্য পণ্য উৎপাদন এবং কৃষিজাত পণ্যের ক্ষেত্রে ইইউ’র মুক্ত-বাণিজ্য অঞ্চলে থাকবে।
ব্রেক্সিট সমর্থকদের যুক্তি, এটা হলে বিচ্ছেদের পরও যুক্তরাজ্যের অর্থনৈতিক নানা বিষয়ে ব্রাসেলসের আধিপত্য থাকবে।
গত জুলাইয়ে মে তার ব্রেক্সিট পরিকল্পনা প্রকাশের পর এর প্রতিবাদে এ বিষয়ে মন্ত্রিসভার দুই গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী বরিস জনসন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ থেকে এবং ডেভিড ডেভিস ব্রেক্সিটমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান।
তারা বলেন, এ পরিকল্পনা নিয়ে মে বেশি দূর এগুতে পারবেন না। এটি ২০১৬ সালে ব্রেক্সিটের পক্ষে ভোট দেওয়া হাজার হাজার ভোটারের মত অগ্রাহ্য করা।
সম্প্রতি ‘সানডে টাইমস’ এর প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, মে’র দলের ব্রেক্সিটপন্থি এমপি’রা দলের আসন্ন বার্ষিক সম্মেলনে নিজেদের ব্রেক্সিট পরিকল্পনা প্রকাশ করতে যাচ্ছেন। সেপ্টেম্বরের শেষে মে’র দল কনজারভেটিভ পার্টির বার্ষিক সম্মেলন শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
দলের বার্ষিক সম্মেলনে নিজেদের পরিকল্পনা প্রকাশের মাধ্যমে তারা মে’র উপর চাপ বাড়াতে চাইছে।
আগামী বছর ২৯ মার্চের মধ্যে যুক্তরাজ্যকে ইইউ ত্যাগের চুক্তি সম্পন্ন করতে হবে। তার আগে মে’কে তার পরিকল্পনা পার্লামেন্টে পাশ করাতে হবে।
ওদিকে মে বারবারই সতর্ক করে বলছেন, যদি তার ব্রেক্সিট পরিকল্পনায় দল একমত হতে না পারে তবে কোনো চুক্তি ছাড়াই যুক্তরাজ্য ইইউ থেকে বেরিয়ে আসবে।
ব্রেক্সিট মে ইইউ'র আপোস 2018-09-02