Don't Miss
Home / রূপচর্চা / শীতে ত্বকের যত্ন

শীতে ত্বকের যত্ন

শীতে ত্বকের যত্ন

।।  ফারহানা রুমকি  ।।

এখন শীতকাল। এ ঋতু আমাদের অনেকেরই প্রিয়। কিন্তু এই প্রিয় ঋতুতে আমরা অনেকেই ভুগি ত্বকের সমস্যায়। শীতের হিমহিম ছোঁয়া শরীরের জন্য আরামদায়ক হলেও ত্বকের জন্য নয়। আবহাওয়ার কারণে এ সময় ত্বকে কিছু সমস্যা তৈরি হয়। শীত যত বাড়তে থাকে, ত্বকের সমস্যা ততই বেশি হতে শুরু করে। ত্বকে সমস্যা তৈরি হওয়ার পর আর কিছু করার থাকে না। শীতের শুরু থেকে নিয়মিত ত্বকের পরিচর্যা করলে আপনি থাকবেন সতেজ, তরতাজা।
ত্বক তিন ধরনের হয়—তৈলাক্ত, শুষ্ক ও মিশ্র। তৈলাক্ত ত্বকের অধিকারীরা শীত ঋতুতে অতিরিক্ত তেল থেকে হাঁপ ছেড়ে বাঁচলেও মুখ ধোয়ার পরপরই ত্বকে দেখা যায় শুষ্ক টান টান ভাব। আর যাঁদের ত্বক এমনিতেই একটু শুষ্ক, তাঁদের কাছে শীত যেন এক দুঃস্বপ্ন।
শীতে আবহাওয়ার কারণেই ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে যায়। আবার কিছু রোগের কারণেও এমন হতে পারে। নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার লাগানোর পরও অতিরিক্ত ত্বক ফাটলে এবং শুষ্ক হয়ে গেলে বুঝতে হবে, কোনো সমস্যায় এমন হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
শুষ্ক ত্বকের উপসর্গ
• ত্বকে রুক্ষ ও শুষ্ক ভাব দেখা যাবে।
• ত্বক শুকনো ও মলিন লাগবে।
• গোসলের পর বা মুখ ধোয়ার পর ত্বক টান টান লাগবে।
• চুলকানি ভাব থাকতে পারে।
• ত্বকের রেখাগুলো আরও স্পষ্ট হয়ে উঠবে এবং বলিরেখাও পড়ে যেতে পারে।
• লালচে ভাব থাকতে পারে।
• চামড়া সাদাটে হয়ে উঠে যেতে পারে। অর্থাৎ মৃত কোষ বেড়ে যায়।
• নিয়মিত যত্নের মাধ্যমেই করে তুলতে পারেন শুষ্ক ত্বককে মসৃণ ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল।
সকালে ঘুম থেকে উঠে নিজের ত্বকের ধরন বুঝে ফেসওয়াশ বা কোমল ময়েশ্চারযুক্ত সাবান দিয়ে মুখ ধুয়ে ফলতে হবে। এ ছাড়া এক দিন অন্তর স্ক্রাব করতে পারেন। ত্বক পরিষ্কার করতে ও মৃত কোষ সরিয়ে ত্বক উজ্জ্বল করে তুলতে এর বিকল্পও নেই। মাঝেমধ্যে গাজরের রস মুখে মেখে কিছুক্ষণ পর ধুয়ে ফেলবেন। এভাবে ত্বক ঠিকমতো ধোয়াও হবে, কালো ছোপও কমবে।

শীতে শরীরে তেল ব্যবহার করা যেতে পারে
শীতকালে গোসলে সাবান কম ব্যবহার করুন। সাবান ব্যবহার করলেও আর্দ্রতাযুক্ত সাবান ব্যবহার করুন। এতে ত্বকে খসখসে ভাব কমে আসবে। শীতে শরীরে তেল ব্যবহার করা যেতে পারে। আমাদের দেশে শর্ষের তেল শরীরে মাখার ঐতিহ্য বেশ প্রাচীন। এ ছাড়া অলিভ অয়েল, নারকেল তেল বা অন্য অনেক তেলও শরীরে ব্যবহার করা যায়। তবে তেল ব্যবহারের আগে দেখে নিতে হবে সেটি আপনার ত্বকের জন্য উপযুক্ত কি না। উপযুক্ত হলে তেল হালকা গরম করে পুরো শরীরে ম্যাসাজ করতে পারেন। গোসলের পর এটি করলে বেশি উপকার পাওয়া যাবে।
শীতে গরম পানি দিয়ে গোসল করার প্রবণতা আছে আমাদের বেশির ভাগ মানুষের। গোসল করলেও গরম পানি দিয়ে মাথা ও মুখ ধোয়া যাবে না। বিশেষজ্ঞরা বলেন, অতিরিক্ত গরম পানি ত্বকের কোষকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এর ফলে ত্বকের আর্দ্রতা নষ্ট হয়। গোসলের সময় পানিতে কয়েক ফোঁটা জোজোবা বা বাদাম তেল দিয়ে নিলে তা ত্বককে আর্দ্র ও মসৃণ করতে সহায়তা করে।
গোসলের পর এবং প্রতিবার মুখ ধোয়ার পর ভেজা অবস্থায় ময়েশ্চারাইজার বা লোশন ব্যবহার করুন। এতে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকবে।

বাইরে যাওয়ার আগে ও পরে
শীতের রোদ গায়ে লাগে বেশ চিনচিন করেই। হিমহিম আবহাওয়ায় রোদ আরাম দিলেও সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে ভুলবেন না। বাইরে বের হওয়ার ৩০ মিনিট আগে এসপিএফ ১৫-৩০-সম্পন্ন সানস্ক্রিন লোশন ব্যবহার করুন। বেশি ময়েশ্চারাইজারযুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন, প্রয়োজনে পানি মিশিয়ে ব্যবহার করুন।
রাতে ঘুমানোর আগে নিয়মিত পরিমাণের চেয়ে একটু বেশি ময়েশ্চারাইজিং লোশন ব্যবহার করলে ত্বকের খসখসে ভাব দূর হবে। ত্বকের আর্দ্রতা ও ঔজ্জ্বল্য ধরে রাখতে রাতে ঘুমানোর আগে অলিভ অয়েল অথবা তরল প্যারাফিন মাখতে পারেন। এ ছাড়া রাতে ঘুমানোর আগে যাঁদের বয়স কম, তাঁরা পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করতে পারেন। বয়স ত্রিশের কোঠা ছাড়ালে নাইট ক্রিম ব্যবহার করা ভালো।