Don't Miss
Home / হোম স্লাইডার / সুপারহিরো চরিত্রের ১০ হলিউড সিনেমা

সুপারহিরো চরিত্রের ১০ হলিউড সিনেমা

এমএনএ বিনোদন ডেস্ক : কমিকস বইয়ের পাতা থেকে একসময় শিশুদের কল্পনার জগতে বাস করত অতিমানবীয় শক্তির অধিকারী সুপারহিরোরা। সেখান থেকে একদল নির্মাতা তাদের তুলে ধরেছেন সেলুলয়েডের ফিতায়। সুপারহিরোদের কাজ নানান অভিযানে শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াই করা। বর্তমান সময়ের দর্শকদের কাছে সুপারহিরো সিনেমা একটি বিশেষ আকর্ষণ।  মোহাম্মদী নিউজ এজেন্সী (এমএনএ)-এর পাঠক-পাঠিকাদের জন্য সুপারহিরো চরিত্রের ১০ হলিউড সিনেমা নিয়ে এ প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন- মোসাম্মৎ সেলিনা হোসেন

কমিক বুকের সুপারহিরো সিনেমার মূল বৈশিষ্ট্য সাধারণত পৃথিবী অথবা সমাজের প্রতি হুমকি সৃষ্টিকারী নেতিবাচক চরিত্রকে প্রতিরোধ করার মাধ্যমে সেই অতিমানব নায়ক পুরো মানবজাতিকেই রক্ষা করে। এখানে মূল চরিত্র বা নায়ক বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন হয় এবং তার প্রধান কাজ হচ্ছে অধিক ক্ষমতাসম্পন্ন ভিলেনের বিরুদ্ধে লড়াই করা। ৪০ দশকে টিভির জন্য প্রথম সুপারহিরো সিনেমা নির্মিত হয়। ১৯৭৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত রিচার্ড ডোনার পরিচালিত ‘সুপারম্যান’ প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য সুপারহিরো সিনেমা।

কমিক বই থেকে নির্মিত এমন ১০ সুপারহিরো চরিত্র নিয়ে নির্মিত সিনেমা নিয়ে আমাদের আজকের ফিচার প্রতিবেদন।

১. আয়রন ম্যান
সুপারহিরো চরিত্রগুলোর মধ্যে আরও একটি অন্যতম চরিত্র আয়রন ম্যান। এটিও মারভেল কমিকসের একটি চরিত্র। ২০০৮ সালে মুক্তি পেল ‘আয়রন ম্যান’। প্রথম পর্বের সাফল্যের পরে দ্বিতীয় পর্বটিও যথেষ্ট সাড়া পেয়েছে। এটি মারভেল সিনেমাটিক ইউনিভারস ফ্রাঞ্চাইজির প্রথম চলচ্চিত্র। পরবর্তীতে ২০১০ এবং ২০১৩ সালে এই সিরিজের পরবর্তী দুই চলচ্চিত্র আয়রন ম্যান টু এবং আয়রন ম্যান থ্রি মুক্তি পায়। এই সুপারহিরো সিনেমার পরিচালক জন ফ্যাভ্রু। আয়রন ম্যান নামের মার্ভেল কমিকসের চরিত্রকে সিনেমায় রূপ দিয়েছেন এই পরিচালক। আয়রন ম্যান একজন সাধারণ মানুষ মাত্র, কিন্তু নিজের উদ্ভাবনী শক্তি এবং প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে তিনি নিজেকে আয়রন ম্যানে রূপান্তর করেন। আয়রন ম্যান সিনেমায় স্টার্কের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন রবার্ট ডাউনি জুনিয়র, জেফ ব্রিজেস এবং গিনেথ প্যালট্রো।

২. টিনেজ মিউমান্ট নিনজা টারটেল
অ্যাকশনধর্মী এ সুপারহিরো সিনেমাটি মুক্তি পেয়েছিল ১৯৯০ সালে। এটি টিনেজ মিউমান্ট নিনজা টারটেল বা টি এম অ্যান টি ফ্রাঞ্চাইজিসের প্রথম চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেন স্টিভ ব্যারন। এর পরে এই সিরিজের আরও চলচ্চিত্র যেমন- ১৯৯১ সালে মুক্তি পায় টিনেজ মিউমান্ট নিনজা টারটেল : দ্য সিক্রেট অফ দ্য অজ, ১৯৯৩ সালে টিনেজ মিউমান্ট নিনজা টারটেল থ্রি এবং সর্বশেষ ২০০৭ সালে মুক্তি পায় টি এম অ্যান টি চলচ্চিত্রটি। ২০১৪ সালের আগস্টে মুক্তি পায় টিনেজ মিউমান্ট নিনজা টারটেল এর আরেক পর্ব।

৩. অ্যান্ট ম্যান
২০০৬ সাল থেকে শুরু হয় ‘অ্যান্ট ম্যান’ ছবির প্রি প্রোডাকশনের কাজ। সব শেষে ২০১৫ সালে মুক্তি পায় ‘অ্যান্ট ম্যান’। সিনেমাটি নিয়ে এডগার রাইট থেকে শুরু করে জস ওয়েডন, সবারই প্রত্যাশা ছিল অ্যান্ট ম্যান হবে মার্ভেলের এ যাবতকালের সেরা সিনেমা। কিন্তু রাইট আর স্টুডিওর মতের মিল না হওয়ায় ছেড়ে গেলেন পরিচালক। নতুন পরিচালক হিসেবে আসলেন পেইটন রিড—যিনি গল্প ফাঁদলেন এমন এক সুপার হিরোর, যাতে ছিল এর উৎপত্তির ইতিহাস। পল রুড আর মাইকেল ডগলাসের অভিনয় বেশ প্রশংসিত হয় এই ছবিতে।

৪. দ্য ইনক্রেডিবল হাল্ক
মারভেল কমিকসের অন্যতম আরও একটি চরিত্র হাল্ক। ২০০৩ সালে পরিচালক আং লি মারভেল কমিকসের এই চরিত্রের উপর ভিত্তি করে নির্মাণ করেন হাল্ক নামক চলচ্চিত্রটি। ২০০৮ সালে নির্মিত হয় এই সিরিজের দ্বিতীয় চলচ্চিত্র দ্য ইনক্রেডিবল হাল্ক। ২০০৮ সালে প্রথম কিস্তিতে দর্শক মন খুব একটা ভরাতে না পারলেও ’হাল্ক’ এর ‘সেমি-সিক্যুয়েল’, ‘সেমি-রিবুট’ দ্বিতীয় কিস্তি পূরণ করেছে সেই প্রত্যাশার অনেকটাই। কিছুটা মজা আর প্রথম থেকেই অ্যাকশনে পরিপূর্ণ ‘দ্য ইনক্রেডিবল হাল্ক’ এর অর্জনের পেছনে রয়েছেছে ‘ব্রুস ব্যানার’ (এডওয়ার্ড নর্টন) এর অসাধারণ অভিনয়।

৫. ক্যাপ্টেন অ্যামেরিকা
মারভেল কমিকস থেকে ১৯৯০ সালে পরিচালক আলবার্ট পাইয়ুন নির্মাণ করেন ক্যাপ্টেন আমেরিকা ছবিটি। এটি আমেরিকান সুপারহিরো চলচ্চিত্র। কমিকস বইয়ের কাহিনি থেকে অবশ্য এই চলচ্চিত্রে কিছুটা ভিন্নতা নিয়ে আসা হয়েছিল। চলচ্চিত্রে ক্যাপ্টেন আমেরিকা চরিত্রে অভিনয় করেন ম্যাট সালিঙ্গার। ২০১২ সালে নির্মিত হয় এই সিরিজের দ্বিতীয় চলচ্চিত্র ক্যাপ্টেন আমেরিকা- দ্য ফাস্ট অ্যাভেঞ্জার এবং ২০১৪ সালে মুক্তি পায় ক্যাপ্টেন আমেরিকা-দ্য উইন্টার সোলজার। এ বছর মে মাসে মুক্তি পায় ক্যাপ্টেন আমেরিকা: সিভিল ওয়ার। ছবিটি পরিচালনা করেন রুসো ব্রাদার্স।

৬. ব্যাটম্যান
টেলিভিশন সিরিজ হিসেবে আগে দেখা গেলেও সম্পূর্ণ চলচ্চিত্র হিসেবে সুপারহিরো ব্যাটম্যানকে চলচ্চিত্রের পর্দায় দেখা যায় ১৯৬৬ সালে ‘ব্যাটম্যান: দ্য মুভি’ শিরোনামে। এই চলচ্চিত্রে ব্যাটম্যান চরিত্রে অভিনয় করেন অ্যাডাম ওয়েস্ট আর রবিন চরিত্রে অভিনয় করেন বার্ট ওয়াড। চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেন লেসলি এইচ মারটিন্সন। পরিচালক টিম বার্টন ১৯৯২ সালে ডি সি কমিকস এর সুপারহিরো ব্যাটম্যানকে নিয়ে ওয়ারনার ব্রস ফ্রাঞ্চাইজিসের দ্বিতীয় দফায় চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। তারই অংশ হিসেবে তিনি নির্মাণ করেন ব্যাটম্যান রিটার্নস চলচ্চিত্রটি।

এছাড়া পরবর্তীতে এই সিরিজের ব্যাটম্যান ফরএভার ১৯৯৫ সালে, ব্যাটম্যান অ্যান্ড রবিন ১৯৯৭ সালে, ব্যাটম্যান- সাব জিরো ১৯৯৮ সালে, ব্যাটম্যান বিয়ন্ড ১৯৯৯ সালে, ব্যাটম্যান বিয়ন্ড-রিটার্ন অফ জোকার ২০০০ সালে, ব্যাটম্যান- মিস্ট্রি অব ব্যাটওম্যান ২০০৩ সালে মুক্তি পায়। ২০০৫ সালে ব্যাটম্যান সিরিজের রিবুট হিসেবে পরিচালক ক্রিস্ট্রফার নোলান নির্মাণ করেন ব্যাটম্যান বিগেন্স। এই চলচ্চিত্রে ব্যাটম্যান চরিত্রে অভিনয় করেন ক্রিশ্চিয়ান বেল। পরবর্তীতে ২০০৮ সালে ব্যাটম্যান-গোথাম নাইট, ২০১২ সালে ডার্ক নাইট রিটার্নস পার্ট ওয়ান, ডার্ক নাইট রাইজেস এবং ২০১৩ সালে ডার্ক নাইট রিটার্নস পার্ট টু মুক্তি পায়।

৭. সুপারম্যান
পরিচালক রিচার্ড ডোনার ডি সি কমিকসের সুপার হিরো চরিত্রটি থেকে নির্মাণ করেন সুপারম্যান চলচ্চিত্রটি। এ ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৭৮ সালে। সুপারম্যান চলচ্চিত্রটির ব্যাপক সাফল্যের কারণে ১৯৮০ সালে পরিচালক রিচার্ড লেসটার নির্মাণ করেন সুপারম্যান টু। এটি ছিল মূলত সুপারম্যান চলচ্চিত্রটির সিকুয়্যাল। এর গল্প এবং চিত্রায়ণ অনেক প্রশংসিত হয়েছিল এবং এটি ছিল সেই বছরের তৃতীয় ব্যবসা সফল সিনেমা। এর আয় করে ১০৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

ডি সি কমিকস এর সুপারহিরো সুপারম্যানের কাহিনি নিয়ে নির্মিত সুপারম্যান থ্রি চলচ্চিত্রটি এর আগের দুইটি সিকুয়্যাল। এটিও পরিচালনা করেন পরিচালক রিচার্ড লেসটার। ১৯৮৩ সালে মুক্তি পাওয়া সুপারম্যান থ্রি আগের দুই সিরিজের তুলনায় কম ব্যবসা করে। এই সিরিজের চার নম্বর চলচ্চিত্র সুপারম্যান ফোর দ্য কুয়েস্ট ফর পিস চলচ্চিত্র মুক্তি পায় ১৯৮৭ সালে। ২০০৬ সালে সুপারহিরো চলচ্চিত্র নির্মাতা ব্রায়ান সিঙ্গার আবারও ডি সি কমিকস চরিত্র সুপারম্যান নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। এছাড়া ২০০৭ সালে সুপারম্যান-ডুমস ডে, ২০১২ সালে সুপারম্যান ভার্সেস এলিট, ২০১৩ সালে ম্যান অব স্টিল ছবিটি মুক্তি পায়।

৮. এক্স-মেন
এক্স ম্যান সিরিজের প্রথম ছবিটি মুক্তি পায় ২০০০ সালে। ১০৪ মিনিট দৈর্ঘের এই ছবিটির পরিচালক ছিলেন ব্রায়ান সিঙ্গার। এক্স ম্যান সিরিজের দ্বিতীয় ছবিটি মুক্তি পায় ২০০৩ সালে। এর পর ২০০৬ সালে মুক্তি পায় এক্স ম্যান সিরিজের তৃতীয় ছবি ‘এক্সম্যান: দ্য লাস্ট স্ট্যান্ড’। ছবিটি পরিচালনা করেন ব্রিট রাটনার। টোয়েন্টিয়েথ সেঞ্চুরি ফক্স এবং মারভেল এন্টারটেইনমেন্টের যৌথ প্রযোজনায় ছবিটি পরিচালনা করেছেন এক্স-ম্যান সিরিজের প্রথম দুটি এবং শেষ ছবির পরিচালক ব্রায়ান সিঙ্গার। এই সিরিজের ছবি ‘এক্স-ম্যান ডেইজ অব ফিউচার পাস্ট’-এর পরবর্তী প্রেক্ষাপট নিয়েই তৈরি করা হয়েছে শেষ ছবিটি। সর্বশেষ এই বছর মুক্তি পায় এই সিরিজের ‘এক্স-ম্যান-অ্যাপোক্যালিপস’ ছবিটি।

৯. স্পাইডারম্যান
সুপারহিরো চলচ্চিত্র পরিচালক স্যাম রাইমি ২০০২ সালে মারভেল কমিকসের অন্যতম চরিত্র স্পাইডার ম্যান কে নিয়ে এই চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন এবং নাম দেন ‘স্পাইডার ম্যান’। এটি ছিল কমিকস বইয়ের উপর ভিত্তি করে নির্মিত চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ব্যবসা সফল চলচ্চিত্র। ২০০৪ এই সিরিজের ‘স্পাইডারম্যান-টু’ এবং ২০০৭ সালে ‘স্পাইডার ম্যান থ্রি’ মুক্তি পায়।

১০. দ্য গার্ডিয়ান অব দ্য গ্যালাক্সি
২০১৪ সালের সুপারহিরো সিনেমা ‘দ্য গার্ডিয়ান অব দ্য গ্যালাক্সি’। ক্রিস প্র্যাট, জো সালদানা, ভিন ডিজেল, ডেইভ বাতিস্তা, ব্র্যাডলি কুপারের মতো তারকাদের নিয়ে নির্মিত হলিউড ব্লকবাস্টার ‘গার্ডিয়ান অব দ্য গ্যালাক্সি’ ছবিটি ডিজনির ব্যানারে মারভেল কমিকসের সুপারহিরোদের নতুন এক কাহিনি। ছবিটি মুক্তি পাওয়ার পর বক্স অফিসে রীতিমতো ঝড় তোলে ‘পৃথিবীর রক্ষাকর্তা’দের নিয়ে বানানো ছবিটি।

x

Check Also

২৬ মার্চ

আজ ২৬ মার্চ – মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস

এমএনএ ফিচার ডেস্কঃ আজ ২৬ মার্চ, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। বাঙালির ইতিহাসে গৌরবময় একদিন। ...