Don't Miss
Home / আজকের সংবাদ / আন্তর্জাতিক / এশিয়া / হংকংয়ে স্থানীয় পরিষদ নির্বাচনে রেকর্ড ভোট

হংকংয়ে স্থানীয় পরিষদ নির্বাচনে রেকর্ড ভোট

এমএনএ ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক : হংকংয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে স্থানীয় পরিষদ নির্বাচন। হংকংয়ে চলমান সরকারবিরোধী বিক্ষোভের মধ্যেই স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নির্বাচনের মাধ্যমে চীনকে কড়া জবাব দিতে চাইছেন গণতন্ত্রপন্থি বিক্ষোভকারীরা। আজ রবিবার হংকংয়ে এই নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হয়। এখন পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, এই নির্বাচনে রেকর্ডসংখ্যক ভোট পড়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, এই নির্বাচনকে হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী ক্যারি লামের জন্য অগ্নিপরীক্ষা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। ছয় মাস ধরে উত্তাল হয়ে থাকা হংকংয়ের নির্বাচনই বলে দেবে ক্যারি লামের প্রতি জনগণের সমর্থন কতটা রয়েছে।

আজ রবিবার (২৪ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানায়, এদিন সকাল থেকেই ভোটকেন্দ্রগুলোর সামনে ভোটারদের লম্বা লাইন দেখা যাচ্ছে।

তবে, ভোটাররা আশঙ্কা করছেন, সহিংসতায় ভোট দেওয়ায় বিঘ্ন সৃষ্টি হলে ভোটকেন্দ্রগুলো বন্ধ করে দিতে পারে কর্তৃপক্ষ। নির্বাচনে কোনো ধরনের বাধা সৃষ্টি না করতে আহ্বান জানিয়েছেন গণতন্ত্রপন্থি বিক্ষোভকারীরা।

এখন পর্যন্ত কোনো বাধার খবর পাওয়া যায়নি। কয়েকটি ভোটকেন্দ্রের বাইরে ও রাস্তায় পুলিশ পাহারা দিতে দেখা গেছে।

সরকারি হিসাব অনুযায়ী, স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে পাঁচটার (বাংলাদেশ সময় বেলা সাড়ে তিনটা) আগ পর্যন্ত ২৩ লাখের বেশি ভোট পড়েছে। এই হিসাবে ভোট পড়ার হার ৫৬ শতাংশের বেশি।

রাজনৈতিক অস্থিরতাই স্থানীয় নির্বাচনে ভোট বেশি পড়ার কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। গত বছর হওয়া সর্বশেষ স্থানীয় পরিষদ নির্বাচনে ভোট পড়েছিল মোট ১৪ লাখ ৭০ হাজার।

ভোট গ্রহণ শেষ হতে আরও প্রায় চার ঘণ্টা লাগবে। এরপর চলবে গণনা। স্থানীয় সময় মধ্যরাতের আগে ফল ঘোষণা শুরুর কোনো সম্ভাবনা নেই।

এ বছর বেশিসংখ্যক ভোট পড়ার কারণ হিসেবে ৩০ বছর বয়সী এক ভোটার রয়টার্সকে বলেন, বেশি ভোট পড়ার অর্থই হচ্ছে মানুষ এখন সর্বজনীন ভোটাধিকারে আস্থাশীল। এটি তাঁদের প্রতিজ্ঞারও বহিঃপ্রকাশ।

চীনের কাছে অপরাধী প্রত্যর্পণ-সম্পর্কিত একটি আইনের বিরোধিতা করে হংকংয়ে বিক্ষোভের সূচনা হয়েছিল চলতি বছরের মার্চের শেষে। আইনটির বিরোধিতা করে গত ৩১ মার্চ প্রথম বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেন আন্দোলনকারীরা। পরে এপ্রিলে আরেকটি বড় বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হয়, যা পরে পুরো হংকংয়ে ছড়িয়ে পড়ে। আইনটি পরে বাতিল করা হলেও বিক্ষোভ থামেনি। সময়ের সঙ্গে বিক্ষোভকারীরা গণতন্ত্রের দাবিটি সামনে নিয়ে আসেন। হংকংয়ের এই আন্দোলনকে চীনের প্রেসিডেন্টের সি চিন পিংয়ের জন্য এযাবৎকালের সবচেয়ে বড় পরীক্ষা বলে মনে করা হচ্ছে।

হংকংয়ের স্থানীয় পরিষদের ৪৫২ সিটের বিপরীতে এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১ হাজার ১০৪ জন প্রার্থী, যা একটি রেকর্ড। এবারের নির্বাচনে নথিভুক্ত ভোটারের সংখ্যাও আগের রেকর্ড ভেঙে ফেলেছে। ৭৪ লাখ জনসংখ্যা বিশিষ্ট হংকংয়ে ৪১ লাখ মানুষ ভোট দেওয়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন, যা অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি। ২০১৫ সালের নির্বাচনে ৩১ লাখ মানুষ ভোট দিতে নিবন্ধন করেছিলেন।

হংকংয়ের আইনসভার সেই অর্থে ক্ষমতা না থাকলেও অভ্যন্তরীণ কিছু বিষয়ের জন্য এটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এবারের নির্বাচনে যদি গণতন্ত্রপন্থীরা বিজয়ী হন, তাহলে তাঁরা হংকংয়ের আইনসভায় ৬টি আসন ও ১ হাজার ২০০ সদস্যবিশিষ্ট প্যানেলের ১১৭টি আসন দখল করতে পারবেন। এই প্যানেলের মাধ্যমেই হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী মনোনীত হন।

গণতন্ত্রপন্থিরা প্রত্যাশা করছেন কাউন্সিলে তাদের সংখ্যা বাড়বে। যা পরবর্তীকালে অঞ্চলটির প্রধান নির্বাহী নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে।

বেইজিংপন্থি প্রার্থীরা ভোটারদের আহ্বান জানাচ্ছেন তাদের ভোট দিয়ে বিক্ষোভকারী ও পুলিশের মধ্যে চলমান সংঘর্ষে সৃষ্ট বিপর্যয়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে।

আজ রবিবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৭টায় ভোটকেন্দ্রগুলো খুলেছে। বেলা সাড়ে ১১টার মধ্যেই এক লাখ মানুষ ভোট দেওয়া শেষ করেছেন, যা মোট ভোটারের ২৪ দশমিক ৩৭ শতাংশ।

ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিলের ৪৫২টি পদের জন্য এক হাজারেরও বেশি প্রার্থী নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন। রুরাল ডিস্ট্রিক্টগুলোর জন্য বরাদ্দ রয়েছে আরও ২৭টি পদ। বর্তমানে, বেশিরভাগ পদই বেইজিংপন্থিদের দখলে।

প্রধান নির্বাহী ক্যারি ল্যাম বলেছেন, অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং সময়ে দাঁড়িয়ে আমি আনন্দের সঙ্গে বলতে চাই শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন হচ্ছে।

প্রধান নির্বাহী নির্বাচনের জন্য যে কমিটি গঠন করা হবে, তাতে ১১৭ জন কাউন্সিলর থাকবেন। তাই, সত্যিকার অর্থে কাউন্সিলররা কম ক্ষমতাধর হলেও এ নির্বাচনের ফলাফলে বোঝা যাবে জনগণ বর্তমান সরকারকে কতটা সমর্থন করছে। অঞ্চলটির প্রথম নারী প্রধান নির্বাহী ক্যারি ল্যামের জন্য এক ধরনের পরীক্ষা হিসেবেই দেখা হচ্ছে এটিকে।

চলতি বছরের জুন মাসে চীন প্রস্তাবিত একটি অপরাধী প্রত্যর্পণ বিল বাতিলে দাবিতে আন্দোলন শুরু হয় চীনের অধীন আধা-স্বায়ত্তশাসিত হংকংয়ে। অপরাধী প্রত্যর্পণ আইন অনুযায়ী, চীন যদি চায় সন্দেহভাজন অপরাধীদের নিজ ভূখণ্ডে নিয়ে বিচারের মুখোমুখি করতে পারবে। আইনে বলা হয়েছে, বেইজিং, ম্যাকাও ও তাইওয়ান থেকে হংকংয়ে পালিয়ে আসা কোনো অপরাধীকে ফেরত চাইলে, তাকে ফেরত দিতে হবে। গত ২৩ অক্টোবর বিলটি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয় হংকং আইনসভা। কিন্তু এর আগেই বিক্ষোভটি রূপ নেয় সরকারবিরোধী আন্দোলনে।

x

Check Also

শের-ই-বাংলা

বাংলার অবিসংবাদিত নেতা শের-ই-বাংলা এ কে ফজলুল হকের ৬২তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

এমএনএ ফিচার ডেস্কঃ বাংলার অবিসংবাদিত নেতা শের-ই-বাংলা এ কে ফজলুল হকের ৬২তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। শেরে ...