Don't Miss
Home / জাতীয় / আদালতের রায়ে শিক্ষার্থীরা ন্যায় বিচার পাবে: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

আদালতের রায়ে শিক্ষার্থীরা ন্যায় বিচার পাবে: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

এমএনএ জাতীয় ডেস্কঃ সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের ইস্যুতে সর্বোচ্চ আদালতের রায় আসা না পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা । তিনি বলেন, আশা করি, তারা উচ্চ আদালতে ন্যায় বিচার পাবে। তাদের হতাশ হওয়ার কারণ নেই। এসময় শিক্ষার্থী হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত হবে বলেও জানান তিনি।

বুধবার (১৭জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কিছু মহল কোটা আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছে। এর ফলে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ঘটনা ঘটেছে, তা খুবই বেদনাদায়ক ও দুঃখজনক। অহেতুক কতগুলো মূল্যবান জীবন ঝরে গেল। আপনজন হারানোর বেদনা যে কত কষ্ট, তা আমার চেয়ে আর কেউ বেশি জানে না।

তিনি বলেন, ২০১৮ সালের ছাত্র আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথা বাতিল করে একটা পরিপত্র জারি করে সরকার। পরবর্তীতে মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে উচ্চ আদালত ২০১৮ সালের জারি করা সরকারি পরিপত্র বাতিল করে দেয়। সরকারের পক্ষ থেকে পরিপত্র বহাল রাখার জন্য সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করা হয়। আদালত শুনানির দিন ধার্য করেন। এ সময় ছাত্ররা কোটা বাতিলের দাবি নিয়ে আবারো আন্দোলন শুরু করে। এ আন্দোলনের শুরু থেকেই সরকার যথেষ্ট ধৈর্য ও সহশীলতার পরিদর্শন করেছে।

তিনি আরও বলেন, আন্দোলনকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে পুলিশ সহযোগিতা করেছে। রাষ্ট্রপতির কাছে যখন আন্দোলনকারীরা স্মারকলিপি প্রদানের ইচ্ছাপোষণ করে সেক্ষেত্রে তাদের সুযোগ করে দেওয়া হয়। নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

সরকারপ্রধান বলেন, যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করি। পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। আমি প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানাই।

সরকারপ্রধান বলেন, আমার বিশ্বাস আমাদের ছাত্রসমাজ উচ্চ আদালত থেকে ন্যায় বিচারই পাবে। তাদের হতাশ হতে হবে না। আইনি প্রক্রিয়ায় সমাধানের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও রাস্তায় আন্দোলনে নেমে দুষ্কৃতকারীদের সুযোগ করে দেবেন না। সর্বোচ্চ আদালতের রায় আসা পর্যন্ত সবাইকে ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, সরকার হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করেছে। আপিলে আদালতে শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের কোনো বক্তব্য থাকলে আদালত তা শোনার সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছেন। এই আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের সুযোগ রয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানাই। যে ঘটনা ঘটেছে সেটা কাম্য ছিল না। চট্টগ্রামের বহুতল ভবন থেকে সন্ত্রাসীরা ছাত্রকে হত্যার উদ্দেশ্যে নির্মমভাবে নিচে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে। অনেক ছাত্রের হাত-পায়ের রগ কেটে দেয়। তাদের ওপর লাঠিপেটা ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। তাদের একজন মৃত্যুবরণ করেছে এবং অনেকে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। ঢাকা, রংপুর এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করা হয়। সাধারণ পথচারী ও দোকানেদারকে আক্রমণ করা হয়। এমনকি রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স চলাচলে বাধা প্রদান করা হয়। মেয়েদের হলে ছাত্রীদের আক্রমণ করা হচ্ছে এবং লাঞ্ছিত করা হচ্ছে। আবাসিক হলে প্রভোস্টদের হুমকি এবং আক্রমণ করা হয়েছে। শিক্ষকদের উপর চড়াও হয়ে তাদের গায়ে হাত তোলা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি যারা কোটা সংস্কার আন্দোলনে জড়িত তাদের সঙ্গে এই সন্ত্রাসীদের কোনো সম্পর্ক নেই। সন্ত্রাসীরা এদের মধ্যে ঢুকে সংঘাত ও নৈরাজ্যমূলক পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। এই ধরনের ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। যারা শহীদ হয়েছে তাদের জীবন-জীবিকা নির্বাহের জন্য যা করা দরকার তা আমি করব।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে ঘোষণা করছি— যারা সন্ত্রাস, লুটপাট এবং অগ্নিকাণ্ডের মতো ঘটনা ঘটিয়েছে তারা যেই হোক না কেন তাদের শাস্তির আওতায় এনে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, কাদের উদ্দেশ্যে সংঘাতের সূত্রপাত হলো; তারা কোন উদ্দেশ্যে এমন অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করলো তা তদন্ত করে বের করা হবে। আমি আন্দোলনরত কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। এ সন্ত্রাসীরা যেকোনো সময় অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করে এই শিক্ষার্থীদের প্রতি সাধন করতে পারে। তাই শিক্ষার্থীদের পিতা-মাতা অভিভাবক এবং শিক্ষকদের প্রতি আমার আবেদন তারা যেন তাদের সন্তানদের নিরাপত্তার বিষয়ে সজাগ থাকে।

চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলন গত সোমবার (১৬ জুলাই) বেশ সহিংস রূপ নেয়। এদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সঙ্গে কোটাবিরোধীদের তুমুল সংঘর্ষ হয়। এতে উভয়পক্ষের তিনশর মতো শিক্ষার্থী আহত হয়। বিশেষ করে গতকাল কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সারাদেশের পরিস্থিতি ছিল বেশি উত্তপ্ত। এরপর মঙ্গলবার (১৭ জুলাই) বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষে ছয়জন মারা যায়। আহত হয় কয়েকশ আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মী।

এ অবস্থায় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিবেচনায় সারাদেশের সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের নির্দেশনা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। একইসঙ্গে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ও তাদের সব কলেজ বন্ধ ঘোষণা করেছে।

x

Check Also

ড. আহসান এইচ মনসুর

দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থা স্থিতিশীল আছে : গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর

এমএনএ অর্থনীতি ডেস্কঃ বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, ‘দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থা ...