এমএনএ রিপোর্ট : আজ ২৩ জুন বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ পাবলিক সার্ভিস দিবস। মেধাবী তরুণ জনগোষ্ঠীকে পেশা হিসেবে পাবলিক সার্ভিসকে বেছে নিতে উৎসাহিত করার উদ্দেশ্যে জাতিসংঘের উদ্যোগে সারাবিশ্বেই প্রতি বছর ২৩ জুন জাতিসংঘ পাবলিক সার্ভিস দিবস পালিত হয়ে আসছে।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সরকারের বিভিন্ন সংস্থার নানা ধরনের কর্মসূচির মধ্যদিয়ে দেশব্যাপী দিবসটি পালিত হচ্ছে।
এ বছর দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘টেকসই উন্নয়ন-লক্ষ্য অর্জনে জনমুখী সেবা ও উদ্ভাবনী প্রয়াস’।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি তাঁর বাণীতে বলেন, জনকল্যাণে গৃহীত সরকারের কর্মসূচির সুষ্ঠু বাস্তবায়নে দক্ষ, গতিশীল ও জবাবদিহিমূলক প্রশাসনের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, মূলত দক্ষ সিভিল সার্ভিস হচ্ছে জনপ্রশাসনের ভিত্তি।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর বাণীতে বলেন, বর্তমান সরকার দেশের নাগরিকদের প্রত্যাশা পূরণে একটি সক্ষম, দক্ষ, কার্যকর এবং গতিশীল জনপ্রশাসন সৃষ্টির লক্ষ্যে দৃঢ়ভাবে সচেষ্ট। তিনি রূপকল্প ২০২১ ও ২০৪১ বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের সদস্যদের সর্বোচ্চ নিষ্ঠা ও কর্মতৎপরতার স্বাক্ষর রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে এ দিবস উপলক্ষে বিআরটিএ’র সেবা কার্যক্রম গ্রহীতাদের জন্য সহজলভ্য করতে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত ঢাকা মহানগরীর মানিক মিয়া এভিনিউয়ে রাজধানী উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এবং চট্টগ্রাম, খুলনা, সিলেট ও রংপুর বিভাগীয় সদরে ওয়ান স্টপ সার্ভিসের মাধ্যমে স্পটে মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হবে।
এদিনটিতে ভালো কাজের জন্য প্রশাসনের কর্মকর্তাদের পুরস্কার দেয়ার রেওয়াজ রয়েছে। এ বছর দিবসটি পালনে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ একত্রে কাজ করছে। প্রতিবছর পাবলিক সার্ভিস ডে পালনের প্রতিপাদ্য বিষয় নির্ধারণ করে থাকে।
আমাদের দেশে সিভিল সার্ভিসে প্রবেশকালে কর্মকর্তাদের ধারণা দেয়া হয়- ‘সিভিল সার্ভিসের জন্য জনগণ নয় বরং জনগণের জন্যই সিভিল সার্ভিস।’ বাস্তবে এর উল্টোটাই ঘটছে।
দীর্ঘদিন থেকেই সিভিল সার্ভিসকে জনকল্যাণমূখী ও সেবাধর্মী করতে চেষ্টা করছে সরকার। কর্মকর্তারা এখনো তাদের মনমানসিকতায় জনগণের সেবক হিসেবে গড়ে তুলতে পারেননি। তারা একজন শাসক বা কর্মকর্তা হিসেবেই নিজেকে দেখতে ভালোবাসেন।
পাবলিক সার্ভিস ডে-তে দক্ষ, সৎ ও মেধাবী কর্মকর্তারা পুরস্কার পাওয়ার বিধান রয়েছে। প্রশাসনের কাছে জনগণের যে প্রত্যাশা সেটা পূরণ করা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দায়িত্ব। কোনো কোনো কারণে বড় কর্মকর্তাদের দুর্নীতি, স্বজন প্রীতি, অনিয়ম ও রাজনৈতিক দলের প্রতি অধিক আনুগত্যে তা’ করতে পারছে না ।
কেউ ক্ষমতায় থেকে পদোন্নতিতে হস্তক্ষেপ করলে কাংখিত ও দক্ষ প্রশাসনিক কর্মকর্তা পাওয়া সম্ভব নয়। অবস্থা এমন এক পর্যায়ে দাঁড়ায় প্রমোশন ও রাজনৈতিক আনুগত্য সমানতালেই চলে।
ফলে অনেক মেধাবীরা স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়ে বিদেশে পাড়ি জমায়। এদিকে মাঠ প্রশাসনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অফিসের মধ্যে রয়েছে ইউএনও অফিস, পুলিশ স্টেশন, সাব-রেজিস্ট্রি অফিস, ভূমি অফিস ইউনিয়ন কার্যালয় ও অন্যান্য সরকারি অফিস ।
এ সব অফিসের সঙ্গে সাধারণ মানুষের সম্পৃক্ত বেশি। বিশেষ করে সরকারি কোনো কেনা অফিসে ঘুষ ছাড়া কোনো কাজ হয় না। এখানে জনগণ সেবার চেয়ে হয়রানির শিকার হন বেশি।
এ ব্যাপারে জনগণকে সচেতন হওয়ার জন্যই প্রতিবছর জাতিসংঘ পাবলিক সার্ভিস ডে পালনের উদ্যোগ গ্রহণ করে থাকে।