এমএনএ আঞ্চলিক ডেস্কঃ নানা আয়োজনে চট্টগ্রামে বর্ষবরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে থাকায় শোভাযাত্রায় উপস্থিতি ছিল খুবই কম। সোমবার (১৪ এপ্রিল) নগরীর চবি চারুকলা ইনস্টিটিউট থেকে ৩০-৪০ জন নারী-পুরুষের উপস্থিতিতে সকাল সাড়ে ১০টায় বর্ষবরণ র্যালি বের করা হয়।
চট্টেশ্বরী মোড় হয়ে আলমাস মোড়, কাজীর দেউড়ি মোড়, এস এস খালেদ রোড, প্রেসক্লাব ঘুরে সার্সন রোড হয়ে পুনরায় চারুকলা ইনস্টিটিউটে গিয়ে শেষ হয় র্যালিটি। ঢোলক বাদ্য, বিভিন্ন প্রাণীর মুখোশ এবং ঘোড়া ও মাছের প্রতিকৃতি শোভা পায় র্যালিতে।
আবার জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে সকাল ৮টায় জাতীয় সংগীত ও ‘এসো হে বৈশাখ’ গান পরিবেশনের মাধ্যমে কর্মসূচি শুরু হয়। পরে বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়ে ওয়াসা মোড় ঘুরে পুনরায় শিল্পকলা একাডেমিতে গিয়ে শেষ হয়। ময়ূর, মোরগ, ঘোড়া, পাখিসহ নানান প্রতিকৃতি আর মুখোশ নিয়ে সেই শোভাযাত্রায় যোগ দেওয়া মানুষের সংখ্যাও ছিল কম।
তাছাড়া বাংলাদেশ শিশু একাডেমি, চট্টগ্রামের আয়োজনেও সকালে আনন্দ শোভাযাত্রায় ছিল শিশুসহ ৪০-৫০ জনের উপস্থিতি। শিশুদের হাতে শোভা পায় বিভিন্ন প্রতিকৃতি।
এদিকে নগরীর ডিসি হিলে বর্ষবরণ মঞ্চে ভাঙচুরের পর সেখানে সকাল থেকে বিরাজ করছে নীরবতা। যারা অনুষ্ঠান দেখতে যাচ্ছেন, তারা ফিরে আসছেন। সম্মিলিত পহেলা বৈশাখ উদযাপন পরিষদ ডিসি হিলে বৈশাখের অনুষ্ঠান বাতিল ঘোষণা করেছে। অবশ্য সিআরবির শিরীষতলায় নববর্ষ উদ্যাপন পরিষদের উদ্যোগে সকাল সাড়ে ৭টা থেকে চলছে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। বিগত বছরগুলোতে বর্ষবরণস্থল লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠলেও এবার সেখানেও ছিল দর্শক খরা। হচ্ছে না বলিখেলা, বসেনি মেলা।
শিরীষতলায় সকালে ভায়োলিনিস্ট চিটাগংয়ের সমবেত বেহালাবাদনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর আনন্দী সংগীত একাডেমি, সংগীত ভবন, রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী সংস্থা, সুর সাধনা, নজরুল সংগীত শিল্পী সংস্থা, শ্রুতিনন্দন, নটরাজ সহ বিভিন্ন সংগঠন দলীয় পরিবেশনায় অংশ নেয়। আবৃত্তি পরিবেশন করে বোধন, প্রমা, তারুণ্যের উচ্ছ্বাসসহ বিভিন্ন সংগঠন। ফাঁকে ফাঁকে চলে নৃত্য। বিকাল ৫টা পর্যন্ত অনুষ্ঠান চলবে বলে জানিয়েছেন নববর্ষ উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ফারুক তাহের।
সিআরবিতে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে আগতদের তল্লাশিসহ পুলিশের নজরদারি দেখা গেছে। এছাড়া নগরীর বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন সংগঠনের আয়োজনে চলছে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান।
শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী রেদোয়ান বলেন, ‘আজকের এ শোভাযাত্রা আমরা নিজেদের মতো করে আয়োজন করেছি। কারো আদেশ কিংবা অনুরোধ শুনতে হয়নি। তবে গতকাল (রবিবার) রাতের ডিসি হিলের ঘটনা নিয়ে একটু দুশ্চিন্তায় পড়েছিলাম। কেননা এই সংস্কৃতি নিয়েও অনেকের এলার্জি আছে। আজ আমরা দৃঢ়ভাবে সব মোকাবিলা করার প্রতিজ্ঞা নিয়েই শোভাযাত্রা শেষ করেছি। সবাই আমাদের নিজস্বতা ও বাঙালিয়ানা রক্ষা করুক, উদযাপন করুক, এটাই চাই।’
সিএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মাহমুদা বেগম বলেন, নববর্ষের সকল অনুষ্ঠান ঘিরে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সব মূল পয়েন্টে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। অনুষ্ঠানস্থল ও আশপাশের সড়কে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। শোভাযাত্রায় সোয়াট ইউনিটের সদস্য এবং সাদা পোশাকে পুলিশ, র্যাব ছিল।