মোহাম্মদী নিউজ এজেন্সী নিউজ – ফিচার – ফটো নেটওয়ার্ক
এমএনএ ফিচার ডেস্ক : দক্ষিণ আমেরিকার উপকূলে প্রতিবছর হাজারো পেঙ্গুইন আটকা পড়ে। তার মধ্যে পুরুষ পেঙ্গুইনের চেয়ে তিনগুণ বেশি মেয়ে পেঙ্গুইন মারা যায় বা আহত অবস্থায় থাকে।জাপান ও আর্জেন্টিনার বিজ্ঞানীরা যৌথভাবে চালানো এক গবেষণায় দেখেন, ম্যাগলানিক প্রজাতির মেয়ে পেঙ্গুইনেরা খাবারের খোঁজে পুরুষদের তুলনায় অনেক বেশি হারে উত্তরের দিকে মাইগ্রেট বা অভিবাসী হয়ে যাচ্ছে। আর তা করতে গিয়ে আহত হচ্ছে বা মারা পড়ছে।বিজ্ঞান বিষয়ক জার্নাল কারেন্ট বায়োলজিতে গবেষণায় এমন ফল পাওয়ার কথা জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
সাগরে ভেসে থাকা তেল নিয়ে তাদের শরীরগুলো ভেসে থাকে ঠাণ্ডায় জমে যাওয়া পানিতে। যদিও পেঙ্গুইনের পালক সবসময় শুকনো থাকে। তবু তেল মাখা শরীরে তাদের সাতার কাটতে কষ্ট হয়, ফলে ঠাণ্ডা পানিতে তাদের টিকে থাকা কঠিন হয়ে ওঠে।পেঙ্গুইনের পালকও অন্য পাখিদের তুলনায় বেশি। তবু খাবারের অভাবে তাদের শরীরের অনেক স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য ঠিকভাবে কাজ করে না।
আর্জেন্টিনার পরিবেশ বিজ্ঞানী ড. ফ্ল্যাভিও কুইনটানা এ বিষয়ে গবেষনায় জানান, বেশিরভাগ সময়ে পেঙ্গুইন খুব খারাপ অবস্থায় উপকূলে এসে পৌঁছায়। এর কারণ শীতের সময় তারা পরিযায়ী বা অতিথি হয়ে নিজের এলাকা ছেড়ে অন্য অঞ্চলে যায়, বেশিরভাগ সময় তারা খাবারের সংকটে পড়ে। যে কারণে তারা সমুদ্র উপকূলে যায় খাবারের খোঁজে এবং মারা পড়ে।
তিনি জানান, বেশি বিপদে পড়ে মেয়ে পেঙ্গুইন, পুরুষদের চেয়ে তিনগুণ বেশি। এটা একটা বড় সমস্যা, কারণ পেঙ্গুইনেরা সাধারণত জীবনের জন্য সঙ্গী হয় পরস্পরের। আর মেয়ে পেঙ্গুইন কমে যাওয়া মানে হলো এদের বংশগতি বাধাগ্রস্ত হবার আশংকা রয়েছে।বছর খানেক আগে বিজ্ঞানীরা প্রজনন মৌসুম শেষে একদল পেঙ্গুইনকে অনুসরণ করেন। তারা দেখতে পান, মেয়েরা খাবারের খোঁজে উত্তরের দেশগুলোতে বিশেষ করে ব্রাজিলের দক্ষিণ দিকে ভ্রমণ করছে। কিন্তু পুরুষ পেঙ্গুইন বেশি যাচ্ছে উরুগুয়ের দিকে। আবার একই অঞ্চলের পুরুষ পেঙ্গুইনেরা সাধারণত কম ভ্রমণ করে। বরং তারা ওই সময়ে সাগরের আরো গভীরে বেশি করে খাবারের অনুসন্ধান চালায়।
বিজ্ঞানীরা এখন পেঙ্গুইনের সাতার কাটার রুট পরীক্ষা করে দেখছেন, কেন তারা মারা পড়ছে। এর ফলে হয়ত তাদের আটকে পড়া ঠেকানোর পথ খুঁজে পাওয়া সম্ভব হবে।বিজ্ঞানীরা বলছেন, মাত্র এক যুগের মধ্যে পেঙ্গুইনের সংখ্যা প্রায় ৬০ শতাংশ কমে গেছে। এর প্রধান কারণ, অতিরিক্ত মাছ শিকারের কারণে কমে যাচ্ছে পেঙ্গুইনের খাবারের উৎস। সেই সঙ্গে মানুষের ফেলা বর্জ্যের কারণে ধ্বংস হচ্ছে এদের বিচরণক্ষেত্র।
