দুই শিশুর করোনা আক্রান্তের খবরে উদ্বেগ
Posted by: News Desk
March 16, 2020
এমএনএ রিপোর্ট : দেশে করোনা ভাইরাসে দুই শিশু আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এ দুজনের বয়স ১০ বছরের কম বলে জানা গেছে। তাদের জ্বর এবং সর্দি রয়েছে। আজ সোমবার সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) এ তথ্য নিশ্চিত করে।
বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসে শিশুরা আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা কম ঘটলেও দেশে দুই শিশু আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, বিশ্বে করোনা ভাইরাস সংক্রমিত কোভিড-১৯ রোগে শিশু-কিশোরদের আক্রান্ত হওয়ার হার অনেক কম। তাদের মধ্যে এই রোগটির মারাত্মক কোনো উপসর্গও তেমনভাবে দেখা যাচ্ছে না। তবে ভাইরাসটি দ্রুত জিনগত পরিবর্তনের ফলে শিশুরা ঝুঁকিতে রয়েছে। এ পরিস্থিতি মোকাবেলা দেশের জন্য চ্যালেঞ্জও বটে।
দেশে আক্রান্ত দুই শিশুর বিষয়ে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা জানান, আক্রান্ত শিশুদের লক্ষণ উপসর্গ মৃদু। তাদের শারীরিক অবস্থা ভালো। কিন্তু তাদের মধ্য থেকে যেন আরও ছড়িয়ে না পড়ে, সেজন্য তাদের আইসোলেশন ইউনিটে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
করোনা সংক্রমিত রোগীদের নিয়ে এক গবেষনায় দেখা যায়, ২ দশমিক ৮ শতাংশ পুরুষ করোনা ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট রোগ কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। নারী মারা গেছে ১ দশমিক ৭ শতাংশ। সবচেয়ে কম শূন্য দশমিক ২ শতাংশ শিশু এবং কিশোর-কিশোরী মারা গেছে। আর সবচেয়ে বেশি মারা গেছে বয়স্ক ব্যক্তিরা। ৮০ বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তিদের মৃত্যুর হার ১৫ শতাংশের বেশি।
এ ব্যপারে ঢাকা শিশু হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. রিজওয়ানুল আহসান বিপুল গণমাধ্যমকে জানান, কোভিড-১৯ যে কেউ যে কোনো বয়সে আক্রান্ত হতে পারে। দশ বছরের নিচের শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। বিশেষ করে দুই বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে অনেক বেশি ঝুঁকি ও জটিলতা দেখা যায়। তাই করোনা থেকে শিশুদের রক্ষা করতে হলে পরিবারগুলোকে সচেতন হতে হবে। শিশুরা যেনো কোনোভাবে আক্রান্ত ব্যক্তি বা সন্দেহভাজন রোগীর সংস্পর্শে না আসে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
প্রিভেন্টিভ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, প্রথমে চীনের উহানে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হয় তখন শিশুরা বেশি আক্রান্ত হয়নি। পরে ইউরোপসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোতে করোনা ছড়িয়ে পড়ায় এর জিনগত পরিবর্তন হয়েছে। তাই এখন আর বলা যাবে না কোভিড-১৯ এ শিশুরা কম আক্রান্ত হচ্ছে। এবার লন্ডনে সবচেয়ে কম বয়সী শিশু করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। বরং শিশুদের ঝুঁকি আগের চেয়ে বেড়েছে। এছাড়া অন্তঃসত্ত্বা নারীও ঝুঁকিতে রয়েছে। কারণ গর্ভাবস্থায় দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়াসহ অনেক পরিবর্তন আসে। সাধারণ জ্বরেও একই বয়সী অন্য নারীদের চেয়ে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি।
তিনি বলেন, করোনা থেকে শিশুদের রক্ষা করতে হলে যেখানে শিশুরা একত্রিত হয় সেই অনুষ্ঠান বর্জন করতে হবে। যারা হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছে তাদের থেকে শিশুদের দূরে রাখতে হবে। এ ছাড়া শিশুদের হাত ধোয়ার অভ্যাস তৈরি করতে হবে। পরিবারগুলো সচেতন না হলে শিশুদের মধ্যে করোনা দ্রুত সংক্রমিত হবে।
করোনা আক্রান্তের দুই শিশুর উদ্বেগ খবরে 2020-03-16